আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাঘার আড়ানী পৌর যুবলীগ সভাপতির অত্যাচারে সাত পরিবার গ্রামছাড়া



এলাকার ত্রাস সৃষ্টিকারী যুবলীগ ক্যাডার, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌর যুবলীগ সভাপতি ও পৌর ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুক্তার হোসেনের অত্যাচারে সাত পরিবারের ৪০ ব্যক্তি গ্রামছাড়া হয়েছেন। চার সপ্তাহের ব্যবধানে তার হাতে অন্তত ৫০ ব্যক্তি লাঞ্ছিত হয়েছেন। পৃথক পৃথকভাবে তার নামে থানায় ও কোর্টে পাঁচটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় গত ৯ নভেম্বর উপজেলা যুবলীগ তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। সরেজমিন, থানা ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, যুবলীগ ক্যাডার মুক্তার হোসেনসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এলাকার বিভিন্ন বাড়ি থেকে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, মাঠের ফসল, গাছপালা, বাড়ির প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট শুরু করেছে।

মুক্তার হোসেন বিকাল হলেই নেশা করে ধারালো হাঁসুয়া নিয়ে প্রকাশ্যে আড়ানী বাজারে চাঁদাবাজি, বিভিন্ন লোকজনকে মারপিট ও লাঞ্ছিত করছে। চার সপ্তাহের ব্যবধানে অন্তত ৫০ ব্যক্তি লাঞ্ছিত হয়েছেন। তার অত্যাচারে সাত পরিবারের ৪০ ব্যক্তি গ্রামছাড়া হয়েছেন। তার ভয়ে এলাকার লোকজন থানায় অভিযোগ করতে ভয় পান। অবশেষে এলাকার লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে ঘটনাগুলো মোবাইল ফোনে থানায় জানালে পুলিশ তাকে ২৯ অক্টোবর গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার হওয়ার একদিন পর ৩১ অক্টোবর জামিনে বের হয়ে এলাকার বিভিন্ন মানুষকে এবং ওই সাত পরিবারকে হুমকি দিতে থাকে। ওই সাত পরিবারের মধ্যে ছবের আলীর ও সোহেল রানার চার বিঘা জমির ধান জমিতে পেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শীত মৌসুমে ৭০টি খেজুর গাছ লাগাতে পারেননি তার ভয়ে। পুকুর থেকে ৬ মণ মাছ লুট করে নিয়ে গেছে। তার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে।

এ ব্যাপারে মুক্তার হোসেনের নামে বাঘা থানায় ও রাজশাহী কোর্টে পৃথক পৃথকভাবে সোহেল রানা, রায়হান আলী, ফাতেমা বেগম, ফারুক আলী ও জুলেখা বেগম বাদী হয়ে পাঁচটি মামলা দায়ের করেন। উল্লেখ্য, গত ৯ অক্টোবর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার পিয়াদাপাড়া মহল্লার তোফাজ্জল হোসেন কালুকে একই গ্রামের আকরাম হোসেন, কলাগাছের পাতা কাটাকে কেন্দ্র করে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ হত্যায় কালুর ছোটভাই পৌর ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর যুবলীগ ক্যাডার মুক্তার হোসেন বাদী হয়ে ৮ জনকে অভিযুক্ত করে বাঘা থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করে। কালু হত্যার পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় গত ৯ নভেম্বর উপজেলা যুবলীগ তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

সভাপতি বাবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক তসিকুল ইসলামের স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে লিখিত এক পত্রে জানা যায়, মুক্তার হোসেন এলাকায় ছিনতাই, সাধারণ মানুষকে মারধর, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল। এছাড়া নানা কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ওই গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ নজরুল ইসলাম বলেন, মূল আসামি ছাড়াও ওই সাত সদস্যের পরিবারের কাউকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। তারা এলাকায় এলেই মুক্তার তার ভাইয়ের মতো হত্যা করবে। মুক্তার হোসেনের সঙ্গে বারবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।