জীবন ,সে তো পদ্ম পাতায় শিশির বিন্দু"
প্রবাদ আছে, "জুতো মেরে গরু দান"। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যে এ ব্যাপারে কতটা সিদ্ধহস্ত তা উনার কথায় ও কাজে সবসময়ই প্রমান করে থাকেন। গত সপ্তাহে খালেদাকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে দু'দিন পরই তাকে বাড়ী থেকে বিতাড়িত করলেন। এর পরেরদিনই আবার খালেদার জন্য দুঃখ প্রকাশও করলেন; ওদিকে লোক পাঠিয়ে খালেদার বাসায় লোক পাঠিয়ে গোপনে বেডরুমের মধ্যে কিছু এডাল্ট ম্যাগাজিন ও ফ্রিজের মধ্যে কয়েক বোতল "তিতাপানি" মানে দারুর বোতল রাখাতেও ভুল করলেন না। মনে আছে, সাদ্দামকে ঈদের দিন ফাঁসি দেয়া হয়েছিল,আর এই পদ্বতি ফলো করে উনি কিনা খালেদাকে ঈদের ২দিন আগে বাড়ীছাড়া করলেন।
ভাবেসাবে মনে হচ্ছে বুশ কতৃক সাদ্দামের পরিণতিটা তিনি যদি খালেদার বেলায় কায়েম করতে পারতেন তাহলে বোধ হয় উনার ষোলকলা পূর্ণ হয়ে যেত। এক্ষেত্রে হাসিনার দুর্ভাগ্যই বলতে হবে। আমরা জানি বাকচাতুর্যতার জন্য উনার একটা নাম-ডাক আছে। সুযোগ পেলেই রস-কস মিশিয়ে চৌকষ মন্তব্য করে থাকেন। কথার মধ্যে রস থাকা ভাল, কিন্তু সেটা যদি আদিরসাত্মকে রুপ নেয় তাহলেই আপত্তি,যেটা উনি প্রায়ই করে থাকেন।
সুধাসদনে বাস করে করে উনার মুখ থেকে হরহামেশা যেসব "অমৃত সুধা" নিঃসৃত হয় তাতে ভাবি উনি কি শেখ মুজিবের কন্যা ! না, আম পাবলিক থেকে উঠে আসা অতি সাধারন কোন মহিলা? আমার মত সাধারন কোন মানুষের কথা না হয় বাদই দিলাম, আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে উনার অশ্লীল মন্তব্যগুলো শুনে উনার ছেলেমেয়েরাইবা তাদের মা সম্বন্ধে কি ধারনা পোষন করে থাকে। কয়েকটা উদাহরন দেয়া যাক। যেমন, একবার উনি বলেছিলেন "দেবর আর ভাবীকে" (খালেদা-এরশাদ) একসাথে শেরাটন হোটেলের রুম থেকে বের হতে দেখা গেছে। ....তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান লতিফুর রহমান প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন এই গুজব ছড়িয়ে পড়লে উনি বলেছিলেন "লতিফুর রহমানকে উনি রা্ষ্ট্রপতি বানাতে চান, না অন্য কোন পতি বানাতে চান সেটাইতো পরিস্কার নয়"। "যুদ্বের সময় উনাকে (খালেদা) পাকিস্তানী আর্মিরা ধরে নিয়ে তিন রাত বন্দী করে রেখেছিল,এবং আর্মি ব্যারাকে রাত কাটানোতে জিয়া তাকে তালাক দিতে চেয়েছিলেন।
তখন আমার বাবার (মুজিব) মধ্যস্তায় তার সংসার রক্ষা হয়েছিল। " (একই কথা তৎকালীন আওয়ামি সাংসদ অধ্যাপিকা পান্না কায়সার সংসদে দাঁড়িয়ে সদম্ভে দেশবাসীকে শুনিয়েওছিলেন )। সপ্তাদুয়েক আগে আবার উনার মজ্জাগত স্বভাব অনুযায়ী মন্তব্য করে বসলেন 'গুলশানের বাসায় গভীর রাতে সাকা চৌঃ খালেদার কাছে গিয়েছিলেন কেন"। এসব আরও কত কি ! তো, এই সেই সাকা চৌঃ, যাকে বছর দেড়েক আগে স্বর্ণের চোরাচালানকারি হিসেবে মন্তব্য করায় সাকা চৌঃ উত্তর দিয়েছিলেন " দেশে এত সোনা থাকতে আমার সোনা নিয়ে হাসিনার কেন এত টানাটানি"। দুর্মুখ সাকা থেকে বিরত থাকতে তখন আওয়ামি মুখপত্র দু'একটি দৈনিক পত্রিকা হাসিনাকে বিরত থাকতে উপদেশও দিয়েছিল।
হাসিনা এত তাড়াতাড়ি সেটা ভুলে গেলেন কিভাবে? ভাগ্যিস,সাকা এখন যুদ্বাপরাধীর গ্যাড়াকলে পড়ে হাবুডুব খাচ্ছেন। নইলে হাসিনাকে তার কুরুচিপুর্ণ মন্তব্যের জন্য সাকার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হতনা। কারন অশ্লীলতার জবাব আরেকজন অশ্লীল লোকই দিতে পারে। এখানে একটা ব্যাপার লক্ষ্যনীয় যে, সুযোগ পেলেই লোক-লাজ ভুলে গিয়ে হাসিনা তার ভালগার মন্তব্যগুলো কেবল খালেদার দিকেই ছুঁড়েন, যা অন্য কারও বেলায় নয়। তার কারন কি? উনি কি খালেদাকে নিয়ে কোন 'ইগো' প্রবলেমে ভোগেন? নাকি অন্য কোন INFERIORITY COMPLEX এ ভোগেন ? তাছাড়া যখন তখন অশিক্ষিত বা স্ব-শিক্ষিত হিসেবে খালেদাকে সুযোগ পেলেই কটাক্ষ করাতো আছেই ।
অথচ অশিক্ষিত বেচারি খালেদা এসবের কোনটারই জবাব না দিয়ে ভদ্রতা সহকারে এড়িয়ে যান। আর 'বিদূষী' হাসিনার এটা বুঝার সেন্সও নাই যে "দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য"।
যাইহোক, এখন ঈদের আমেজে দেশবাসী ব্যস্ত। বরাবরের মত এবারও তিনি দেশবাসীকে ত্যাগের মহিমা থেকে শিক্ষা নেবার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সাথে দেশের আপামর শিশু-কিশোরকেও বেশকিছু উপদেশবাণীও শুনিয়েছেন।
কিন্তু তিনি কি ভেবে দেখেছেন প্রতিনিয়ত করা তার অশ্লীল মন্তব্যগুলো শুনে আর কি শিখে এসব কোমলমতি শিশুরা বড় হচ্ছে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।