আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাম সর্বস্ব ১২ দলঃ জামাতই তাদের বড় বল।

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। সমমনা ১২ দলে, ১২টি দল নেই, নিবন্ধন নেই, টাকা নেই। চলে জামায়াতের টাকায়, আর জামাত ১২ দলের নাম বেচে খায়। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে যখন ইসলামী ও সমমনা ১২ দল গঠন করা হয় তখন, ওই জোটের সদস্যসচিব করা হয় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুর রব ইউসুফিকে। তিনি প্রথম থেকেই নেতৃত্বে ছিলেন।

সংবিধান সংশোধনের প্রতিবাদে এক দিন হরতালও পালন করে জোটটি। আজ ইসলামী ও সমমনা যে ১২ দল হরতাল ডেকেছে এর মধ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল মাত্র তিনটি। মাওলানা শাহ আহমাদুল্লাহ আশরাফের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, মুফতি আমিনীর গড়া ইসলামী ঐক্যজোট ও মাওলানা ইসহাকের নেতৃত্বাধীন খেলাফত মজলিসের শুধু নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন রয়েছে। বাকি দলগুলোর মধ্যে জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম, নেজামে ইসলাম পার্টি, খেলাফতে ইসলামী, ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটি, ওলামা কমিটি ও গণসেবাসহ ৯টি দলের নিবন্ধনই নেই। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ইসলামী দলগুলোর মধ্যে চরমোনাইয়ের পীরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, আল্লামা আলহাজ এ এ মান্নানের বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, মাওলানা ইউসুফ আশরাফের বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও মাওলানা শায়খ আবদুল মোমিনের জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাকের পার্টি হরতাল আহ্বানকারী দলগুলোর সঙ্গে নেই।

সুত্র শুধু তাই ন্য় যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের টাকায় চলছে বেশ কিছু ইসলামী দল। সমমনা ইসলামী ১২ দলেও আছে এই আশীর্বাদ। এই ১২ দলের কয়েকটি তো সরাসরি ওই দলটির টাকায় চলে। এর মধ্যে কয়েকটি দলের নেতারা সরাসরি জামায়াতি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। যেমন ওলামা মাশায়েখ পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী।

বাকি সংগঠন- গুলোকেও নেপথ্যে থেকে নিয়ন্ত্রণ করছে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে অভিযুক্ত দলটি। এর মধ্যে কিছু নামসর্বস্ব দল আছে, যার কয়েকটি সরাসরি জামায়াত নিয়ন্ত্রিত। যেমন ওলামা মাশায়েখ পরিষদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, খেলাফত মজলিস। আজকের হরতালে যেসব দল আছে তার মধ্যে জামায়াতের সঙ্গে মাখামাখী অবস্থা ইসলামী ঐক্যজোট ও খেলাফত মজলিসের। এই দুটি দল আবার সমমনা ১২ দলের বাইরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটেরও শরীক।

যে জোটে রয়েছে জামায়াতে ইসলামীও। জামায়াত-শিবির অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর ওপর প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের নেতাদের মুক্তির লড়াইয়ে তাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টায় নামলে কয়েকটি ইসলামী দলের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় তারা ১২ দলে না থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। এ বিষয়ে ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের চেয়ারম্যান ড. ইসা শাহেদী বলেন, "১২ দলে জামায়াতের সম্পৃক্ততার কথা আগে জানলে জোটেই যেতাম না। আমরা জামায়াত নেতাদের মুক্তির দাবি জানাতে ১২ দল গঠন করিনি।

২০১১ সালে সরকার যখন সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস উঠিয়ে দেয় এবং ধর্মহীন শিক্ষানীতি ও নারী নীতি প্রণয়ন করে, তখন তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১২ দল গঠন করা হয়েছিল। অনেক দিন হয় ১২ দলের কার্যক্রম নেই। তবে কয়েকটি দল এখনো একজোট হয়ে অন্য জোটের নামে কর্মসূচি পালন করছে। " এর কিছু দিন পর জামায়াত নিয়ন্ত্রিত তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানীর নেতৃত্বাধীন ওলামা মাশায়েখ পরিষদ জোটের নেতৃত্বে চলে আসায় ক্ষুব্ধ হয় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। ওই সময় থেকেই দলটি ১২ দলের কর্মসূচিতে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।

পরে নতুন করে জোটের সদস্য করা হয় শাহ আহমাদুল্লাহ আশরাফের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খানকে। যিনি বর্তমানে কারাগারে। আজকের হরতালে নেতৃত্ব দিচ্ছে সেই ১২ দলের অন্যতম বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমিরে শরিয়ত মাওলানা শাহ আহমাদুল্লাহ আশরাফ। গতকাল বিকেলে কামরাঙ্গীরচর জামিয়া নুরানীয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি আজকের হরতাল সফল করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইসলামের ওপর আঘাত এলে তার প্রতিবাদ করা মুসলমানদের ইমানি দায়ীত্ব। কয়েকটি দলের নেতৃত্বে একই নেতা : একসময় ১২ দলের অন্যতম নেতা আবদুল লতিফ নেজামী বর্তমানে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান এবং একই সঙ্গে নেজামী ইসলামী পার্টির মহাসচিব।

মুফতি ফয়জুল্লাহ বর্তমানে ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবার একই সঙ্গে তিনি ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির নেতাও। একইভাবে অ্যাডভোকেট আবদুর রকিব ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান আবার নেজামে ইসলাম পার্টিরও চেয়ারম্যান। নাম সর্বস্ব সংগঠন : সমমনা ১২ দলে থাকা দলগুলোর সিংহভাগই প্যাড সর্বস্ব। তাদের কেন্দ্রীয় কমিটির দু-একজন নেতা ছাড়া অন্যদের নামও অনেকে জানে না। নেজামে ইসলাম পার্টির অফিস রাজধানীর পুরানা পল্টনের নোয়াখালী টাওয়ারে।

একই স্থানে ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যানের কার্যালয়ও। রাজধানীর লালবাগে রয়েছে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির অফিস। একই অফিসে ইসলামী ঐক্যজোটের কার্যক্রমও চালানো হয়। এভাবে খেলাফতে ইসলামী, ওলামা কমিটি ও গণসেবা আন্দোলনেরও কার্যক্রম চলছে গুটিকয়েক নেতার নেতৃত্বে। এসব সংগঠনের কার্যক্রম অফিস সর্বস্ব।

আবার জামায়াতের নিয়ন্ত্রণ না মানতে পেরে ১২ দল থেকে বেরিয়ে গেছে কয়েকটি দল। ইসলামী ঐক্য আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি দল ১২ দলের কর্মসূচি থেকে তাদের সমর্থন গুটিয়ে নিয়েছে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ৩৩টি আসনে প্রার্থী দিয়ে সব আসনেই জামানত হারায়। ইসলামী ঐক্যজোট চারদলীয় জোট থেকে প্রার্থী দেয় চারটি আসনে। এর মধ্যে দুটিতে তারা ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।

দলটির মোট ভোট প্রাপ্তি ছিল দশমিক ১৫ শতাংশ। সুত্র  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।