আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাঁঠালবাগানে ৮তলা ভবনের ২ তলা দেবে হেলে পড়েছে

আতাউর রহমান কাবুল

রাজধানীর কাঠালবাগান এলাকায় ৩০৪/১ ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের নির্মাণাধীন আটতলা ভবনের দুই তলা মাটিতে দেবে গেছে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আজ রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এরপর এলাকার আশেপাশের মানুষ আতংকে ঘর থেকে বের হয়ে আসতে থাকে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে এসেছে।

এর আগে রাত ১০টার দিকে ওই ভবনের দক্ষিণ পাশের পিলারে ফাটল দেখা দেয়। কাঠালবাগানের পদ্মা জেনারেল হাসপাতালের পিছনে এশিয়ান হায়দার টাওয়ার নামের ওই ভবনের প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ। কাঁঠাল বাগানে দেবে যাওয়া ভবন পরিদর্শনে এসেছেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। ফায়ার ব্রিগেডের মহাপরিচালক রাতের মধ্যেই ভবনটি ভেঙে ফেরার কাজ শুরু করতে মেয়রকে অনুরোধ করেছেন। মেয়র খোকা সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান নির্বাহী ও এডিশনাল নির্বাহীসহ সবাইকে ঘটনাস্তলে এসে ভবন ভাঙার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত ভবন অপসারণে প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া হবে। রাতের মধ্যেই ভবন ভাঙার সব যন্ত্রপাতি আনার জন্য তিনি সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। দেবে যাওয়া ভবনটির পাশের ভবনের মিস্ত্রি ইসমাইল হোসেন জানান, ভবনটি দেবে যাওয়া শুরু হলে বিকট শব্দ হয়। তখন ভেতরের শ্রমিকদের বের করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কেয়ারটেকারের পরিবারও অন্যদিক দিয়ে বের হয়ে গেছে।

ফায়ার ব্রিগেডের মহাপরিচালক আবু নঈম মো. শহদিুল্লাহ জানান, ভবনটি আটতরা ছিল। কিন্তু গ্যারেজসহ নিচতলা মাটির নিচে দেবে গেছে। পাশের ভবনগুলোও এখন ঝুকির মধ্যে আছে। তিনি আরও বলেন, পাশের ভবনগুলো থেকে লোকজনকে নেমে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব তাদের নামিয়ে নেওয়া হবে।

ঘটনাস্থলে রিহ্যাবের জেনারেল সেক্রেটারি মুরাদ ইকবাল চৌধুরী পৌঁছেছেন, তিনি বাংলানিউজকে জানান, ভবনটির নির্মাতা এমিয়ান ডেভলপার নামের কোম্পানি রিহ্যাবের সদস্য নয়। রাজধানীর কাঠালবাগান ঢালের কাছে একটি আট তলা ভবনের নিচের দুটি তলা সম্পূর্ন দেবে গেছে। এতে হেলে পড়েছে গোটা ভবনটি। রাত সাড়ে দশটার দিকে বিকট শব্দে ভবনটির কলাম ফেটে যায় পরে ধিরে ধিরে সেটি দেবে যেতে থাকে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। এশিয়া হাইটার টাওয়ার নামের এই ভবনটি নতুন হওয়ায় এতে কোনো পরিবার এখনো বাস শুরু করেননি জানিয়ে মাহমুদ হাসান নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ভবন মালিকের ভাতিজা বলে পরিচয় দিয়ে বাংলানিউজকে জানান, এতে কেউ আটকা পড়েনি।

পাশের ভবনের এক বাসিন্দা হাসান দাউদ চৌধুরী জানান, সাড়ে ১০ টার দিকে বিকট শব্দ শুনতে পেয়ে বাইরে তাকিয়ে ভবনটি কলামগুলো ভেঙ্গে বাকা হয়ে গেছে ধীরে ধীরে ভবনটি দেবে যাচ্ছে। এভাবে এক পর্যায়ে ভবনটি অনেকখানি হেলে পড়ে। দেবে যাওয়া ভবনের উত্তর পাশে নির্মাণাধীন ৬লা ভবনের কেয়ারটেকার তোফাজ্জল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, তিনি দেবে যাওয়া ভবনটির নিচ তলা ঘুরে এসেছেন। সেখানে কেয়ারটেকার, ড্রাইভার, শ্রমিক বা দারোয়ান কাউকে দেখা যায়নি। এছাড়া ওখানে আর কেউ আটকা পড়ে নেই।

তিনি আরও জানান, সাধারণত যেভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়, ওই ভবনটি সেভাবে নির্মাণ করা হয়নি। পাইলিং করে পিলার নির্মাণের কথা থাকলেও বাইরে থেকে আনা পিলার বসিয়ে তার ওপরে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, একটি পুকুরে মাটি ভরাট করে সেখানে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। মোহম্মদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র সহকারী ইন্সপেক্টর শপিকুল ইসলাম জানান, ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র অফিসাররা আসছেন। তারা এসে সিদ্ধান্ত নেবেন উদ্ধার কাজ কীভাবে শুরু করা হবে।

খবর পেয়ে রাজউকের অথরাইজড অফিসার আমিনুর রহমান সুমন ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছেন। নির্মাণাধীন ওই ভবনে শ্রমিক, কেয়ারটেকার ও তার ফ্যামিলিসহ প্রায় ২২ জন লোক ছিলেন। তারা সবাই বাইরে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। জানা গেছে, সকাল ৮টার দিকে ভবনটির পূর্ব পাশের পিলারে ফাটল ধরে। ভবনের মালিক হায়দার হোসেন এসে তা পরিদর্শন করে গেছেন।

তবে এ বিষয়ে শ্রমিক কেয়ারটেকারদের সঙ্গে তিনি শরাপরামর্শ করে গেলেও অন্য কাউকে বিষয়টি জানাননি। ফায়ার ব্রিগেডের সহকারী পরিচালক মনির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, নির্মাণের ত্রুটির কারণে ভবনটি হেলে পড়েছে। সূত্র: Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।