ক্লিন'স অল্টারনেটিভ ওয়ার্ল্ড
ঈশপের রূপকথার রেফারেন্স টানার প্রয়োজন নেই। এখন এই বাংলাদেশে এমন ঘটনা ঘটছে যা রূপকথাকে হার মানায়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক পক্ষে আওয়ামীলীগ (কথিত এবং পরীক্ষিত), আর অপরপক্ষে আছে জনগণ। এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে সরকারী দলের নাম ভাঙিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়নি এবং হচ্ছে না।
পুরো দেশটা যেন সরকারী দলের ক্যাডারদের হাতে বন্দী হয়ে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতার শুরুতেই ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে বীতশ্রদ্ধ হয়ে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু তার অভিমানকে সুযোগ হিসেবেই নিয়েছে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট ভোগীরা। সরকারের সাথে আরেকটি নৈরাজ্যমূলক প্রশাসন গড়ে তুলেছে তারা। এখন সরকার আর তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।
কুকুর প্রভুর নিয়ন্ত্রণের সম্পূর্ণ বাইরে।
এতসব কথা মনে আসলো আাবার গত কয়েক দিনের খবর পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান আজ সরকারী গুণ্ডাদের দখলে। সিবিএ নামক সংগঠনের ব্যানারে তৃতীয় চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর আর কিছু আওয়ামী কর্মকর্তারা এখন ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করছেন। দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানটি এখন কিছু মূর্খ ক্ষমতালোভীর হাতে বন্দী।
সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর থেকেই তারা পরিচালক পর্যায়ের বেশ কয়েকজন শীর্ষকর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করেছে। মারধোর করেছে। তাদের ভয়ে এখন ব্যাংকের সর্বত্র আতঙ্ক। ঘুষ, অনিয়ম, দুর্নীতি, পেশীশক্তি প্রদর্শন- এসবই এখন সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
গত কয়েক বছরে দেশের সর্বত্র সবক্ষেত্রে এত অবনতি হয়েছে যে এসব খবর এখন আর তেমন প্রতিক্রিয়া তৈরী করে না।
মনে হয় এটাই তো স্বাভাবিক। আমার স্বল্প জীবনে এমন নৈরাজ্য চোখে পড়েনি। দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর হবার যোগার হয়েছে। কয়েকদিন আগে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে অপদস্ত করেছে তার দলেরই রাজনীতিবিদ চিকিৎকরা। সরকারী দলের সাংসদেরা নিজ নিজ এলাকার জনগণ ও জনসম্পদের প্রধান অধিকারী।
তাদের কথাতেই সেখানে সূর্য ডোবে এবং অস্ত যায়। সারাহ বেগম কবরী কিংবা হানিফদের মতো লোকজনই এখন আওয়ামীলীগের প্রথম আসনে। তাদের কাজেই আওয়ামীলীগের কাজের পরিচয় প্রকাশিত হয়।
সব ঠিক আছে। কোন বিস্ময় নেই- এমন হচ্ছে তাতে।
আমি কেবল একটা বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভণরকে নিয়ে আমার সে উদ্বেগ। গভর্ণর হওয়ার পর জেনেছিলাম তিনি ছেলেবেলায় রাখাল ছিলেন। রাখালের প্রধান কাজ নেকড়ের কবল থেকে ভেড়ার পাল রক্ষা করা। আমাদের বর্তমান গভর্ণর সরকারী দলের নেকড়েদের কাছ থেকে কীভাবে তার ভেড়াদের রক্ষা করছেন? পারছেন কি? না পারলে তার উচিত হবে সরে পড়া।
এ সরকার যেভাবে হিংস্র নেকড়েদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে তাতে রাখাল গভর্ণরের গায়ে নেকড়ের আচড় পড়া বিচিত্র নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।