আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাইগা গেলে ভাইগা যা/রাজাকারের জুতা খা অথবা মুখোশধারী দেশপ্রেমিক/নিপাত যাক-নিপাত যাক

আমি নির্বাক হয়ে গেলে তোমার পতন অনিবার্য ! প্রহসনের এই আন্দোলন নিয়া আমি যারপরনাই বিরক্ত। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যুদ্ধাপরাধী-রাজাকারের ফাঁসি চাইবো তবে মেরুদন্ডহীন কারো নেতৃত্বে আন্দোলন করবো না। আজকে (শুক্রবার) জামায়াত-শিবিরের যে তান্ডব, শহীদ মিনার ভাংচুর, জাতীয় পতাকা ছেঁড়া, সাংবাদিকদের ওপর হামলা এতকিছুর পরও আমাদের আন্দোলনকারীরা সেই আগের সিদ্ধান্তেই। ঘোষণা করলেন, শনিবার বিকেলে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে সমাবেশ হবে। সবাইকে পতাকা নিয়ে হাজির হতে বললেন।

বললেন, সমাবেশ শেষে শপথ করা কথাও। আন্দোলন মানুষের কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার নামে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে সমাবেশ করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, রাজধানী ঢাকা শহরে আন্দোলন ছড়ানোর আদৌ বাকি রয়েছে কি না? রায়েরবাজার বলেন, আর মিরপুর-মতিঝিল-যাত্রাবাড়ী-পুরান ঢাকা বলেন, কোথাকার লোক আসেনি শাহবাগে? তাহলে কাদের কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার নাম করে আমরা শাহবাগ ছেড়ে যাচ্ছি? হ্যাঁ, হতে পারত এমন যে, শাহবাগের প্রজন্ম চত্ত্বরের গণজাগরণ মঞ্চে অবস্থান কর্মসূচী চলবে। দেশব্যাপী আন্দোলন ছড়ানোর জন্য প্রতিটি বিভাগে, প্রতিটি জেলায় জেলায় গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি হবে। সেখানে আমাদের নেতৃবৃন্দ গিয়ে কথা বলবেন।

কিন্তু তা হলো না। কার বুদ্ধিতে জানি না, শাহবাগ ছেড়ে দিলেন। গণমানুষকে যুদ্ধে ডেকে এনে বাড়িতে গিয়ে বিশ্রাম করার পরামর্শ দিলেন। কিন্তু বিশ্রাম করে করে কি কোনো যুদ্ধ হয়? আমার অন্তত জানা নেই। প্রতিপক্ষও কি আমার মতো বিশ্রাম নিবে? নাকি তারা কিছুটা বাড়তি সময় পেল নতুন কোনো জট পাকানোর, নতুন কোনো ফন্দি আটার, অনলাইনে নতুন কোনো কুৎসা রচনার? এ প্রশ্ন আমি কার কাছে করব? আমরা শাহবাগ ছাড়লাম।

একদিন পরই যুদ্ধাপরাধী রাজাকারের দল জামায়াত-শিবির হুংকার ছাড়ল। তারা শাহবাগ দখল করতে চাইলো। রাজশাহী-বগুড়া-টঙ্গী-ফেনী-চাঁদপুর-সিলেট-চট্টগ্রামসহ যেসব জায়গায় গণজাগরণ মঞ্চ ভাঙ্গা হয়েছে, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে সেসব স্থানে যদি অবস্থান কর্মসূচী চলত তাহলে কি তারা গণজাগরণ মঞ্চ ভাঙ্গার সাহস পেত? পেত না। ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের ডাকে (বিম্পি-আম্লিগ তো ডাকে, সবার ডাকে কিন্তু যাই না) আমরা জড়ো হয়েছিলাম শাহবাগে। যদিও ঠিক ডাকে নয়, নিজের চেতনা বোধ থেকে।

কিন্তু দাবি আদায় হওয়ার আগেই একবার আমাদের টাইম ফ্রেম বেধে দেওয়া হলো। আমরা মানিনি। তারপরও তারা আবার আন্দোলন কন্টিনিউ করতে বাধ্য হলেন। গতকাল (বৃহস্পতিবার) তারা আন্দোলনের সমাপ্তি টানলেন, আজ (শুক্রবার) জামাত-শিবির তাদের আসল রূপ যখন দেখিয়ে দিল, উত্তাল জনতা আবারো জরো হলেন শাহবাগে। তখন তারা আবার গিয়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দিলেন।

ঘণ্টা তিনেক পরই আবার আন্দোলনের সমাপ্তি টানলেন। এর মানে কি? আমরা তো এখন কারো ডাকে আন্দোলনে যাচ্ছি না। তাহলে তেনারা কেন আমাদের রাজপথ থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন? আর আমরাই বা কেন বারবার সরে যাচ্ছি? কাল (শনিবার) শপথ নেওয়া হবে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে। কিন্তু একই শপথ আমি কয়বার করবো? বারবার ভাঙ্গবার জন্যই কি আমরা শপথ পাঠ করছি না? আন্দোলনের শুরুতেই আমরা একবার শপথ নিয়েছিলেম। রাজপথ না ছাড়ার শপথ।

রাজীব হত্যার পর তার কফিন ছুঁয়ে একবার শপথ নিলাম। প্রতিনিয়ত শুধু শপথই নিচ্ছি বারবার সেই শপথও ভাঙ্গছি। এইটা কেন? কেউ কি বলতে পারেন? আমি, আমরা, আম জনতা দেশকে যুদ্ধাপরাধী-রাজাকারমূক্ত করার জন্য যুদ্ধে নেমেছি। এই যুদ্ধে হয় জিতবো অথবা জীবন দিব। কিন্তু কেন যুদ্ধের ময়দান থেকে আমাদের বারবার ঠেলে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে? আমরা জানি, এই যুদ্ধে যদি আমরা জিততে না পারি তাহলে আমাদের নিজেদের অস্তিত্বও থাকবে না।

আজ হোক কাল হোক প্রতিপক্ষরা আমাদের ঘায়েল করবেই। তাহলে আধখেচরা এই যুদ্ধে আমাদের কেন নামানো হলো? সাপের লেজে পাড়া দিয়ে সেই সাপ ছেড়ে আসার কোনো মানে আমি খুঁজে পাই না। এই সাপের কামড় থেকে আমাদের বাঁচাবে কে? কে এখন আমাদের জীবনের নিরাপত্তা দিবে? আমি জানতাম, যুদ্ধে নামলে হয় জিতব নয় মরব। আধমরা হয়ে বাঁচতে চাই না আমি। বলতে দ্বিধা নেই, এখন সরকার এই আন্দোলন নিয়ে খেলছে।

তারা একদিকে যেমন পারছে না জামায়াত শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে। আরেক দিকে আন্দোলন রাজপথে থাকতেও দিচ্ছে না। রাজপথে থাকলে আন্দোলনের গতিপথ পাল্টে সরকারের বিরুদ্ধে চলে যেতে পারে, এই ভয় সরকারের আছে। আবার আন্দোলন ছাড়তেও চাচ্ছে না, কারণ এই আন্দোলনের সুফল তো আম্লীগের ঘরেই যাচ্ছে। কিন্তু মনে রাখবেন, আমরা খেলার পাত্র নই।

সাবধান, আমাদের মাথাকে বিক্রি করার চেষ্টা করবেন না। আপনি ভালো কিছু করুণ আমি আপনাকে সমর্থন করব। তা না হলে... পুনশ্চ: ১৭ দিন টানা অফিস করার পর গতকাল ছুটি কাটাচ্ছিলাম। দুপুরে জামায়াত-শিবিরের উন্মত্ততা আর বিকেলে শাহবাগে প্রতিবাদী মানুষের স্ফুলিঙ্গ দেখে সারা রাত থাকার জন্য শাহবাগে গিয়েছিলাম। কিন্তু হতাশ হয়ে ফিরে এসেছি।

রাত ১টায় বাসায় ফেরার সময়ও দেখলাম কিছু মানুষ বসে আছে, তারা স্লোগান দিচ্ছে- হারবো না হারবো না/শাহবাগ ছাড়বো না, ভাইগা গেলে ভাইগা যা/রাজাকারের জুতা খা, মুখোশধারী দেশপ্রেমিক/ নিপাত যাক নিপাত যাক... ... .. .. ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।