আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আঁধারালাপন:নিজের সাথে,তোমার সাথে,আঁধারের সাথে

CONNECTION FAILED
আঁধারালাপনঃ নিজের সাথে দূর আকাশে যখন নক্ষত্রের ধংসযজ্ঞ চলছিলো তখন আমার আঁধার ঘরে মোমের প্রদীপও নিভু নিভু প্রায়। দখিন জানালার এলোমেলো বাতাসে মোমের আলো এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছিলো, সেদিকে লক্ষ্য করে দেয়ালে ঘটে যাওয়া আমার ছায়ার ক্রমাগত পরিবর্তনগুলো উপভোগ করছিলাম। কিন্তু হঠাৎই.......যা ভাবছিলাম! দমকা এক বাতাসে আলো নিভে যাওয়া মাত্রই আমার ছায়াগুলোর অপমৃত্যু ঘটল আর আমিও আকন্ঠ অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যাই ক্রমাগত। আমি ভেবেছিলাম বেঁচে থেকে লাভ নেই কিন্তু আমার দ্বিতীয় আমি প্রতিবাদ করে বলে ওঠে বেঁচে থেকে অনেকেরই ঢের লাভ আছে তাই তুমিও বাঁচবে তবে ধীরে ঠিক যেমন মোমের প্রদীপ বড় ধীরে জ্বলে কিংবা দূর নক্ষত্রের মতো যে কিনা নিজে ধংস হয়েও আলোর জন্ম দিয়ে যায় আপন প্রতিভায় নিসর্গের মতো। আমি দূর থেকে সময়ের প্রপেলার ধ্বনি শুনতে পাই যেন আমাকে তাড়া দিচ্ছে শিঘ্রই রৌদ্রময় ওই এলুমিনিয়াম আকাশে মিশে যেতে।

আমি প্রস্তুত হই কিন্তু সহসাই শীতার্ত জনতাগভীর নগরীকে দেখে অল্পক্ষন থমকে দাঁড়াই.....দেরি হচ্ছে, তাই সকল দুরুহ বস্তু সময়ের অধীনতা মেনে নেয়। এই নীরব শীতের অন্ধকার রাতে নক্ষত্রদের স্থির সমাসীন পরিষদ থেকে কোন আদেশ আসে না কিংবা কোন উপদেশ...কঠিন এই রুক্ষ সময়ের যাঁতাকলে আমি অস্থিরপ্রায় তবু কোথায় যেন উত্তেজনা খুঁজে পাই,মনে হয় এই আঁধার গ্লসিয়ারের যুগের মতনই নীরব। ভালোবেসে হাত বাড়ালাম এই অন্ধকারের হাতকে ধরতে যেন চেনা কোন এক নারী অনেক দিনের অদর্শনা আজ ধরা দিতে চাচ্ছে ইন্দ্রলোকের নিগূঢ় গোলকধাঁধায়। হঠাৎ চৈতন্য ভেঙ্গে গেলে বুঝি আলেয়াশিখা আজো আমাকে নিয়মিত জ্বালাচ্ছে পুরনো সেই আলোর আঁধারে। আঁধারালাপন:তোমার সাথে যদিও জানি তোমার রাত্রি দিন একসময় শেষ হয়ে যাবে কালের আবর্তনে কিন্তু তা আমার আগে নয়।

হ্যা আমি তোমার অনেক আগেই চলে যাবো,তারপর সমুদ্র গান গাইবে বহুদিন ঠিক যেমন এখন গাইছে সৃষ্টির আদিকাল থেকেই,আকাশের নক্ষত্ররাও বারংবার পুনর্জন্ম নেবে ঠিক যেমন এখন নিচ্ছে। শুধু তোমার পিপাসা ফুরবেনা,তোমার রাত্রি দিন পৃথিবীর মানুষের ভিড়ে মিশে যাবে যেমন ধুলো বালি মিশে যায়। মানুষের ভিড় তোমাকে কোনদিকে নিয়ে গেছে খুঁজে পাইনি সে পথ,সমুদ্রের জলে দেহ ধুয়ে খুঁজে ফিরেছি সে পথ। কত দেহ ছুঁয়ে গেলো এ হাতে,কত অপেক্ষাতে মলিন এই চক্ষু ছিঁড়ে গেছে,নক্ষত্রের তলে পার করেছি রাত্রি দিন,তবু অধরা সেই তৃণ পাইনি। জানিনা তোমার রক্তের ভালোবাসা দিয়েছ কারে,শুধু বুঝেছি আমারে চাইবে না তুমি কোনদিন কোন জন্মে! মাঝরাতে ওই দূর নক্ষত্রের কাছে তাই কোন প্রশ্ন রাখি না,এলোমেলো বাতাসে বিশৃঙ্খল এইসব দিন রাত্রি কেটে যায়।

জানি তুমি আসো না তবু আমার এই নক্ষত্রের মাঝে বারেবার শুধু তোমার পায়ের শব্দ কানে ভেসে আসে। শব্দেরা মিলিয়ে যায় রাত্রির ঢেউয়ের মতো ঢেউয়ের উপরে। আলো অন্ধকারে এই দূর সমুদ্রের জলে আমি হেঁটে যাই পায়ে পায়ে তবু শেষ হয় না পথ চলার পিপাসা,নক্ষত্র সরে যায় রাত্রির অন্ধকারে,আমিও হারিয়ে যাই পাহাড় নদীর পাড়ে পৃথিবীর গহবরে। আঁধারালাপন:আঁধারের সাথে প্রেম! কবেই ছিঁড়ে ফেঁড়ে গেছে,যদিও কখনও বা বীণার মতো বেজে ওঠে হৃদয়ের বন তখনই উত্তরের বাতাস এসে বিদীর্ণ শাখার শব্দে অসুস্থ ডানার কোলাহলে ঘটে মৃত্যু। আলেয়ার মতো আলো নিয়ে আসে প্রেম,আমারে ভেঙ্গে দিতে চায় বারংবার কিন্তু আমি ডুবে গিয়েও আবার বীর যোদ্ধার মতো ভেসে উঠি পশ্চিম সাগরে।

সাম্রাজ্য,রাজ্য,সিংহাসন এইসব রোমাঞ্চ অতিক্রম হলে আমি পাণ্ডুর পাতার মতো ক্লান্ত হয়ে শিশিরে শিশিরে রক্তের অশ্রু ঢেলে দিয়ে মৃত্যুর মতন শান্তির ঘুমে ডুবে যাই। জানি আবার জেগে উঠতে হবে তাই রাতের গুহার বুকে ধোঁয়ার চামর তুলে হৃদয়ে আগুন শক্তি সঞ্চয় করি। চোখের তারার পরে সময়ের আলো চুমো দিয়ে যায় নক্ষত্রের আকাশে। সমস্ত স্মৃতির হাড়ের মাঠে খুঁজে যাই আজো যারে দেখি নাই তারে ছায়ার মতন দেয়ালে ধরে রাখার বাসনায়। মৃতেরা আবার জাগছে সেই ভুলের ব্যাথা মুছে দেবার অভিপ্রায়ে,আমি তাই স্বাগত জানাতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পরি।

বিকেলের শেষ আলো ক্রমেই নিস্তেজ হয়ে আসে,একা একা অনেক দূর হেঁটে ক্লান্ত প্রায় আমি বুঝতে পারি এভাবেই আমি হাজার হাজার পথ ব্যস্ত পায়ে ভ্রমণ করছি ক্রমাগত।
 


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।