পৃথিবীর কাছে তুমি হয়তো কিছুই নও, কিন্তু কারও কাছে তুমিই তার পৃথিবী"
আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রশিদ পদত্যাগ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার পদত্যাগপত্রটি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পৌঁছায়। দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় ১৮ মাসের মাথায় তিনি পদত্যাগ করলেন।
জানতে চাইলে গতকাল সন্ধ্যায় বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইন কমিশনকে দাঁড় করাতে চেয়েছিলাম। পারলাম না।
আমি যেভাবে কাজ করতে চেয়েছি, সেভাবে পারিনি বলেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিই। ’
হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির পদ থেকে ২০০৯ সালের ২৬ জানুয়ারি আবদুর রশিদ অবসর নেন। ওই বছরের ২১ এপ্রিল তাঁকে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, কোনো ধরনের কারণ না দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেছেন। কোনো দ্বন্দ্ব ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।
’ তাঁর কাজকর্মে সরকার সন্তুষ্ট কি না, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা তাঁকেই জিজ্ঞাসা করুন। ’
সূত্র জানায়, গত ৫ অক্টোবর আবদুর রশিদ আইন কমিশন আইনের ৫(৪) ধারা উল্লেখ করে পদত্যাগপত্র জমা দেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত তিনি ১৮টি আইনের বিষয়ে কমিশন থেকে মন্ত্রণালয়ে মতামত ও সুপারিশ পাঠান। এগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জনবলের অভাব, কাজের পরিবেশ না থাকা এবং সহযোগিতার অভাব থাকার কথা তিনি সহকর্মী ও সুহূদদের জানিয়েছেন।
সর্বশেষ পঞ্চম সংশোধনী বাতিলসংক্রান্ত রায়ের আলোকে সংবিধান পুনর্মুদ্রণ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে মতভিন্নতাও তাঁর পদত্যাগের কারণ ছিল।
বিচারপতি রশিদের মেয়াদকালে ২০০৯ সালের ২৪ জুন আইন কমিশন ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের বিষয়ে মতামত দিয়ে প্রতিবেদন পাঠায়। এটি কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো বড় ধরনের সুপারিশ। বিচারপতি রশিদের মেয়াদকালে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের কতিপয় বিধানের সংশোধনী-সংক্রান্ত প্রতিবেদন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইনসংক্রান্ত প্রতিবেদন, আইন কমিশন (কর্মকর্তা) নিয়োগ বিধিমালা, আইন শিক্ষার ওপর মতামত ও সুপারিশ, অর্থঋণ আদালত (সংশোধন) আইন, ২০০৯-এর খসড়া বিষয়ে মতামত পাঠিয়েছে কমিশন। সর্বশেষ ৫ অক্টোবর আলোচিত বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।