মদের খালি বোতল, বিয়ারের ভাঙা ক্যান আর পরিত্যক্ত খাবারের প্যাকেট জড়ো হয়ে পড়ে আছে এখানে সেখানে৷ এটি এখন চীনের প্রাচীরের অস্বাভাবিক কোনো দৃশ্য নয়৷
দলে দলে পর্যটক আসছেন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকার অন্যতম নিদর্শন – চীনের প্রাচীর দেখতে৷ কিন্তু ময়লা-আবর্জনার এই স্তূপ তাদেরকে বিষণ্ণ করে তুলছে৷ এমনই একজন পর্যটক কলম্বিয়ার ফ্রান্সিসকো গার্সিয়া৷ বার্তা সংস্থা এএফপি'কে বলেছেন, এটা পরিবেশের জন্য খুবই খারাপ হচ্ছে৷ বিশ্ব ঐতিহ্যটির যথাযথ সংরক্ষণ করে এর সৌন্দর্য পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে হিমশিম খাচ্ছে চীন কর্তৃপক্ষ৷
ওয়াং শুয়েনং এই প্রাচীরের ‘শানহাইগুয়ান' অংশের রক্ষণাবেক্ষণের সাবেক পরিচালক ও বেইজিং এর সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক৷ বলছেন, ‘‘প্রাচীরে অনেকেই তাঁবু খাটিয়ে রাত কাটায়, যা এটা নোংরা হওয়ার একটা কারণ৷'' অবশ্য তারপরই তিনি বলেছেন, ‘‘এখানে রাত কাটানোর জন্য তেমন কোনো বাধানিষেধও নেই৷'' Bildunterschrift: Großansicht des Bildes mit der Bildunterschrift: চীনের প্রাচীর পৃথিবীর অন্যতম আশ্চর্য
ব্রিটেনের উইলিয়াম লিন্ডসে প্রায় পঁচিশ বছর ধরে প্রাচীর সংরক্ষণে কাজ করে আসছেন৷ তিনি মনে করেন, বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রতীক এমন এক জায়গায় তাঁবু গাড়া এমনিতেই মেনে নেওয়া যায়না৷ ১৯৮৭ সালে এই প্রাচীরের প্রেমে পড়েন তিনি৷ বললেন, ‘‘সেটা ছিলো আমার জন্য একটা ক্রান্তিলগ্ন৷ এই প্রাচীরটি আমাকে বিস্ময়বিহ্বল করে তুলেছিলো৷ এটা কেবল একটা প্রাচীর নয়, এটা একটা মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য৷''
১৯৯৮ সালে কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে লিন্ডসে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফ্রেন্ডস অফ দ্য গ্রেট ওয়াল' নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলেন, যেখানকার স্বেচ্ছাসেবকরা প্রাচীর থেকে শতশত কেজি ময়লা -আবর্জনা সরাতে কাজ করেন৷ লিন্ডসে বললেন, এরপর তিনি এর ছবি তুলে প্রশাসনের কাছেও পাঠিয়েছেন, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷
অন্যদিকে ওয়াং শুয়েনং বলছেন, ‘‘প্রাচীরটির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করা অসম্ভব৷ কেননা অনেকগুলো প্রদেশ নিয়ে এটি বিস্তৃত, অথচ এর তত্ত্বাবধানের জন্য সেখানে একটাও ডিপার্টমেন্ট নেই৷ স্থানীয়দের অনেকেই তাঁদের বাড়ি নির্মাণের জন্য এই প্রাচীর থেকে পাথর নিয়ে যান৷ তা দেখার মতোও কেউ নেই৷''
লিন্ডসে মনে করছেন, সরকারের সাধারণ নজরদারি এ বিষয়টির জন্য যথেষ্ট নয়৷ চীনের জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন৷
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।