কানাডায় তীব্র চিকিৎসক সংকট, অথচ ইমিগ্র্যান্ট হয়ে আসা বিভিন্নদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা চাকরী পান না। তাদের অনেককেই ট্যাক্সি চালাতে দেখা যায় । কিন্তু কেন ? এর একটা উত্তর বেরিয়ে এসেছে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় । সেই সমীক্ষার ফলাফল নিয়ে নতুনদেশের একটি রিপোর্ট এখানে শেয়ার করলাম। যে সব ডাক্তাররা কানাডার ইমিগ্রেশনের চেষ্টা করছেন, বা ভাবছেন তাদের পরিকল্পনা প্রণয়নে এটি সহায়তা করতে পারে।
অভিবাসন নিয়ে কানাডায় আসা ডাক্তারদের অর্ধেকই সার্টিফিকেশন পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন
নতুনদেশ ডটকম
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্নদেশ থেকে চিকিৎসা শাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে কানাডায় অভিবাসী হয়ে আসা আন্তর্জাতিক সনদ ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চিকিৎসকদের অর্ধেকই কানাডার সার্টিফিকেশন পরীক্ষায়ই উত্তীর্ণ হতে পারে না। ফলে তাঁদের পক্ষে কানাডায় চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত হওয়া সম্ভব হয় না। কানাডীয়ান ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান জার্ণালে সম্প্রতি প্রকাশিত পৃথক দুটি গবেষনা প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য পাওয়া গেছে।
গকেষনা পরিচালনাকারীরা বলছেন, অন্যান্য দেশের চিকিৎসা শিক্ষার মান অথবা শিক্ষাপ্রদানের পদ্ধতিগত ভিন্নতার কারনেই তারা সার্টিফিকেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেন না। প্রকট চিকিৎসক সংকট কাটিয়ে উঠতে আন্তর্জাতিক সনদ ও অভিজ্ঞতা সম্পন্নদের কানাডায় চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতে দেওয়ার ক্রমবর্ধমান প্রচণ্ড চাপের মুখে এই পরিস্থিতি কানাডীয়ান সরকারকেও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।
তবে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে আসা বিপুল সংখ্যক মেধাবী চিকিৎসক সার্টিফিকেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও কানাডায় ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান বা চিকিৎসক হিসেবে কাজ করার অনুমতি পাচ্ছেন না। যা বিপুল সংখ্যক যোগ্যতাসম্পন্ন চিকিৎসকদের হতাশায় নিমজ্জিত করে রেখেছে।
গবেষনায় উল্লেখ করা হয়েছে, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রিপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরাও সরাসরি কানাডায় রেসিডেন্সির জন্যে বিবেচিত হন। দুই বছর চাকরি বা হাতে কলমে প্রশিক্ষণলাভের পর তাঁরা ফ্যামিলি চিকিৎসক হিসেবে এবং পাঁচ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে কাজ করার অনুমিত পান। তবে অন্যান্যদেশ থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিগ্রি এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে আসা প্রার্থীদের কঠিন বাচাই প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয়।
বিষয়গত পরীক্ষাছাড়াও তাদের ভাষার দক্ষতা বিষয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত হবার আগে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর কানাডীয়ানদের সমমানের জ্ঞান নিশ্চিত হওয়ার জন্যেই কঠিন এই বাছাই প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গবেষণায় ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রেসিডেন্সি প্রোগ্রামে অন্তর্ভূক্ত চিকিৎসকদের উপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে,আন্তর্জাতিক সনদ নিয়ে আসা চিকিৎসকদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ সার্টিফিকেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। অপরদিকে কানাডায় চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রিধারীদের ৯৩.৫ শতাংশ সার্টিফিকেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
পৃথক সমীক্ষায় বলা হয়েছে,আন্তর্জাতিক সনদধারী চিকিৎসকদের বিশেষ সহায়তা দিতে ২০০৬ সালে ভ্যাঙ্কুয়েভারে বিশেষ একটি কর্মসূচী নেওয়া হয়।
প্রশিক্ষণকালীন মূল্যায়নে এরা কানাডীয়ান গ্র্যাজুয়েটদের সমতূল্য দক্ষতা দেখালেও সার্টিফিকেশন পরীক্ষায় মাত্র ৫৮ শতাংশ উত্তীর্ণ হয়। একই সময়ে কানাডীয়ান সনদপ্রাপ্তদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ৯৭ শতাংশ।
এদিকে কানাডায় জন্ম নেওয়া শিক্ষার্থীদের যারা বিদেশে চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশুনা করছে তাদের নিয়েও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে কানাডা। বর্তমানে প্রায় ১৫০০ কানাডীয়ান নাগরিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশুনা করছে। পড়াশুনাশেষে কানাডায় ফিরে এলে তাদের আন্তর্জাতিক সনদধারী হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং বাছাই প্রক্রিয়া এবং সার্টিফিকেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষে তারা কানাডায় চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত হওয়ার অনুমতি পাবে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, বিশ্বের াধিকাংশ দেশের চিকিৎসা বিষয়কই পড়াশুনাই উত্তর আমেরিকার সমপর্যায়ের নয়। ফলে তাদেরও চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা পড়তে হবে।
http://www.notundesh.com/shirshokhobor.html
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।