It is too much tough to lead a very simple life
বাংলাদেশে বসবাস কারে আমরা গর্ববোধ করি (!), আমরা এরকম একটা সমাজে বসবাস করেও অত্যন্ত গর্ববোধ করি(!) যেখানে মানুষ অনেক ভদ্র, ধৈর্য্যশীল, আশাবাদী, অমায়িক। আমরা অত্যন্ত মিশুক, আমরা সময়ের চেয়ে অগ্রগামী, আমাদের আছে বিশ্বাসের শক্তি, আমরা অতি সাধারণ।
আমরা কোন কিছুই কঠিন ভাবে চিন্তা করতে পছন্দ করিনা। আমরা তা ই করি যা সবসময় হচ্ছে, আমরা সব সময় তা ই করি যা আমাদের মন বলে।
সময় আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে আমাদের কোন মাথাব্যাথা নেই।
আমাদের আশেপাশে কি হচ্ছে তা দেখতে আমরা লজ্জ্বাবোধ করি। আমরা খুব সহজেই সেগুলো এড়িয়ে যেতে পারি। আমাদের সাহস আছে সেগুলো এড়িয়ে যাবার।
আমরা সরকার নির্বাচিত করেছি, তাদের পেয়ে আমরা নিশ্চিন্ত! আমরা আমাদের সব দায়িত্ব তাদের উপর ন্যস্ত করে আরামে বসে আছি। তারা আমাদের যথাযথ সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে এবং উন্নত সেবা দান নিশ্চিত করছে।
আমরা যারপরনাই খুশী।
আমরা জানি কিভাবে আমাদের বিভিন্ন সময়ে ও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধৈর্য্যশীল রাখতে হয়! অমরা নিরব থাকতে পারি যখন মানুয় খাবারের অভাবে মারা যায়। আমরা পার্শ্ববর্তী দেশের ছিনেমা, গান উপোভোগ করতে পারি যখন তারা আমাদের দেশের কিছু গর্দভ অশিক্ষিতদের খুন করে সীমান্তে। আরে ভাই, আমরা তো জানি আমাদের সরকার আছে, দরকার পড়লে সরকার ক্ষতিপূরণ দিবে। কেন যেচে গিয়ে মাথাব্যথা বানাতে যাবে?
আমরা অত্যন্ত সামাজিক জাতি।
আমরা পরিবারের সদস্যদের সামনে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীর ধর্ষণের অথবা কারো সদ্য বের হওয়া স্ক্যান্ডালের খবর শুনতে, আমরা জানি কিভাবে আমাদের পরিবারের সদস্যদের সম্মান জানাতে হয়। কিন্তু তাদের আড়ালে এসব খবর শুনে মজা পাই, হাসাহাসি করে এরকম কাজকে নিরুৎসাহিত করি। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস যদি আমরা এসব ঘটনা চাপা না দিয়ে জনগণের সামনে প্রকাশ করি তাহলে মানুষ সেব করতে লজ্জাবোধ করবে যা কিনা আঈনী ব্যবস্হা গ্রহনের চেয়ে বেশী কার্যকর। আমরা খুব সহজেই হজম করতে পারি যৌতুকের দাবী মানতে না পেরে অত্যাচারিত নারীদের আত্মহত্যার খবর হজম করতে পারি। এরকম মানুষদের আমাদের কোন দরকার নাই যারা তা পূরণ করতে পারে না।
আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে আশাবাদী জাতি। আমরা ভাবি আমাদের সকল সমস্যাই আপনাআপনি ঠিক হয়ে যাবে। আমরা কেন বিশৃংখলা করব মানুষের সাথে সমস্যগুলো আলোচনা করে? তাছাড়া তা আবার তাদের সাহায্যও করতে পারে কিভাবে সেগুলো করতে হয়। এরকম সমস্যায় আমরা নিরব থাকতেই সাচ্ছন্দবোধ করি। আমরা আমাদের সরকারকে বিশ্বাস করি।
তাদের উপর রয়েছে আমাদের সম্পূর্ণ আস্হা। যদিও তারা মাঝে মাঝে সঠিক পদক্ষেপটা নিতে অথবা আমাদের স্বার্থ রক্ষায় একটু আকটু ভুল করে, তবুও, ওই যে আগেই বলেছি, আমরা আমদের অধিকার আদায় করতে লজ্জাবোধ করি, লজ্জা পাই তাদের কাজগুলো মূল্যায়ন করতে এবং আমাদের জন্য কাজ করার কথা তাদের মনে করিয়ে দিতে। আমরা আমাদের সম্পর্কে সচেতন কিন্তু আমাদের আশেপাশের পরিবেশের জন্য নয়। কিচ্ছু আসে যায় না, যদি আমাদের প্রতিবেশী খাবারের অভাবে, বিনা চিকিৎসায় মারা যায়।
সেই সব কুলাঙ্গারদের উপরে আমাদের রাগ হয় যারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের নামে নিজেদের অমূল্য প্রানটা নষ্ট করছে।
আরে ভাই, আমাদের তো স্বাধিনতা দরকার নাই। তারা ক্যান বুঝে নাই যে সীমান্তের স্বাধিনতাই প্রকৃত স্বাধিনতা না। আমরা তো এখনও স্বাধিন না। পরিস্থিতি তো সেই আগের মতই আছে। শুধু পার্থক্য হল, আগে শাসনকর্তারা দেশের বাইরে থাকত আর এখন দেশের ভিতরেই তাদের আস্তানা।
তখন পশ্চিম পাকিস্তানের লোকেরা সব যায়গায় অগ্রাধিকার পেত, আর এখন শাসনকারী রাজনৈতিক দলের লোকেরা অগ্রাধিকার পায়। যাই হোক, আমরা তো এখন টাকা দিয়েও অধিকার কিনতে পারি। যদিও আমদের কাছে সবসময় নগদ টাকা থাকেনা, তাতে কি? আমাদের তো বাড়ি, গাড়ি, জমিজমা, গয়নাগাটি আছে। সেগুলো আমরা সহজেই বিক্রি করতে পারি । কারন আমাদের তো নিশ্চয়তা আছেই যে খুব কম সময়ের মাঝেই তা আমরা আবার করে নিতে পারব, ইনশা আল্লাহ।
আমরা এখনও অর্থনৈতিকভাবে অতটা না হলেও মোটামোটিভাবে ভালই বলা চলে। যদি সেইসব লোকেরা যুদ্ধে মারা না যেত তাহলে আমাদের কতগুলো কর্মঠ হাত থাকতো। সব কিছুই তারা নষ্ট করে দিছে। তারাতো মারা গেছে গেছেই আবার আমাদের উপর কিছু বোঝাও চাপিয়ে দিয়ে গেছে। প্রত্যেক বছর কিছু নির্দিষ্ট দিনগুলোতে টাকা পয়সা নষ্ট করে তাদের সম্মান জানাতে হয়।
কিন্তু আামরা তাদের বোকামির কথা ভুলিনি। আর ভুলিনি বলেই জীবিত যোদ্ধা এবং তাদের সন্তানদের আমরা অবহেলার চোখে দেখি। আমরা তাদের গরীব দেখতেই পছন্দ করি। যাতে করে তারা তাদের বোকামির ফল পায়। তারপরও মাঝে মাঝে কিছু সামান্য ভাতা টাতা দিয়ে আর খবরের কাগজে রিপোর্ট করে তাদেরপ্রতি দয়াশীলদের মুখ বন্ধ রাখি।
মরার পরও আমরা তাদের তথাকথিত সম্মান জানাই, সেই সাথে নষ্ট হয় কয়েক রাউন্ড গুলি।
আমরা তো অনেক সুখি। কি নেই আমাদের। আমরা বাজারে কড়া দাম দিয়ে খাবার কিনি, যা আমাদের সমাজে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সহায়তা করে। আমাদের সব ধরনের বিনোদনের ব্যবস্হা আছে।
নিজের দেশেরগুলোতে বিরক্তি আসলে অন্য দেশথেকেও বিনোদন দানকারীদের টাকা দিয়ে নিয়ে আসতে পারি।
আমরা অত্যন্ত সাহায্যপরায়ন জাতিও বটে। আমরা অন্যদেশের পণ্য কিনি তাদের কে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হতে সহায়তার জন্য, কারন আমরা তো এমনিতেই সাবলম্বী।
যাইহোক, সবশেষে বলতে হয়, এতকিছুর পরও, একটি দীর্ঘশ্বাস আমাদের সব সময়ের সঙ্গী। অবশ্য আমরা একারনেও অনেক ভাগ্যবান যে অন্তত এ দীর্ঘশ্বাস ফেলার স্বাধিনতাটুকু আমাদের আছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।