ব্রণ বয়ঃসন্ধিক্ষণের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আবির্ভূত হয়, তবে সব বয়সী নারী-পুরুষ এমনকি শিশুরাও এতে আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত মুখ ও কপাল আক্রান্ত হয়। মুখ ছাড়াও কাঁধ, পিঠ এবং বুকে ব্রণ হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্রণ সম্বন্ধে সাধারণ জ্ঞানের অভাবে সমস্যাটি জটিল আকার ধারণ করে। সামান্য সতর্কতা ও জ্ঞান দিয়েই, এই ক্ষণস্থায়ী সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্রণ দীর্ঘস্থায়ী এবং জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
কিভাবে ব্রণ তৈরি হয় : হাত ও পায়ের তালু ছাড়া শরীরের অন্যান্য অংশে লোম, রোমকূপ এবং এক ধরনের গ্রন্থি দিয়ে 'পাইলোসিবাসিয়াস ইউনিট' থাকে। গ্রন্থি থেকে 'সেবাম' নামে এক ধরনের রস নিঃসরিত হয়_ যা স্বাভাবিকভাবে ত্বককে মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। 'পাইলোসিবাসিয়াস ইউনিট'-এর স্বাভাবিক কার্যকারিতার ব্যাঘাত থেকেই ব্রণ তৈরিতে সাহায্য করে। ত্বকে 'প্রোপাইনি ব্যাকটেরিয়াম একনি' নামে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে যা গ্রন্থি নিঃসরিত 'সেবাম'কে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে।
বয়ঃসন্ধিক্ষণে হরমোনের প্রভাবে গ্রন্থির আকার বড় হয় এবং অতিরিক্ত সেবাম নিঃসরণ করে। কোনো কারণে রোমকূপ বন্ধ হলে প্রদাহজনিত স্থলে ফুসকুড়ি বা দানা তৈরি হয়_ যা কমেডিয়ন নামে পরিচিত। সাধারণভাবে 'কমেডিয়ন'কে ব্ল্যাক হেড (কালো) ও হোয়াইট হেড (সাদা) নামে ডাকা হয়।
চিকিৎসা : মনে রাখবেন ব্রণ একটি ক্ষণস্থায়ী সমস্যা এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সামান্য সচেতনতা ও জ্ঞানের মাধ্যমেই সমস্যাটি দূর করা সম্ভব। যাদের ক্ষেত্রে সমস্যা জটিল আকার ধারণ করে, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।
টোটকা এবং অপচিকিৎসার মাধ্যমে জটিলতা তৈরি করবেন না। আজকাল চিকিৎসকরা ব্রণভেদে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন যার মাধ্যমে এই অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন।
জটিলতা : ব্যক্তিবিশেষে ব্রণ জটিল আকার ধারণ করতে পারে। ব্রণে তীব্র ব্যাকটেরিয়া-জনিত সংক্রামণ হতে পারে। নখ দিয়ে খোটার কারণে এবং অনেক সময় অনভিজ্ঞ রূপবিশেষজ্ঞ অথবা বিউটিশিয়ানের মাধ্যমে ব্রণের ভেতরে প্রদাহজনিত বা সংক্রমণজনিত কারণে সৃষ্ট পদার্থ বেরিয়ে আশপাশের অংশে ছড়িয়ে পড়ে।
ইনফেকশন বা তীব্র প্রদাহের কারণে দাগ এবং স্থায়ীভাবে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। প্রতিরোধ : দিনে অন্তত দুই বার সাবান বা ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। তৈলাক্ত ত্বকে ধুলা-ময়লা জমে রোমকূপ বন্ধ হয়ে থাকে। যাদের ত্বক বেশি তৈলাক্ত তারা চিকিৎসকের পরামর্শে বিশেষ ধরনের ক্লিনজার বা সাবান ব্যবহার করতে পারেন মুখ পরিষ্কার রাখার জন্য। প্রসাধন সামগ্রী রোমকূপ বন্ধের কারণ হতে পারে।
কাজেই অকারণে প্রসাধনী বা বিউটিশিয়ানের শরণাপন্ন না হওয়াই ভালো। ব্রণ নখ দিয়ে খুঁটবেন না। এতে স্থায়ী ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে। অপচিকিৎসা থেকে দূরে থাকুন, সমাধান না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লেখক : কনসালটেন্ট, চর্ম-এলার্জিজনিত রোগ, এশিয়ান জেনারেল হাসপাতাল লি।
ফোন : ০১৭১৬-২৮৯৮৮৭
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।