গাজীপুরের কাপাসিয়ার মাটিতে ‘বারখোলডেরিয়া সুডোমেলাই’ নামের ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের গবেষকেরা। এই ব্যাকটেরিয়া ‘মেলিওডোসিস’ রোগের কারণ। ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জে আশরাফুল হক ও অধ্যাপক মো. শরিফুল আলম জিলানী ২০০১ সাল থেকে ‘মেলিওডোসিস’ রোগ নিয়ে কাজ করছেন। তাঁরা বলছেন, গবেষণার প্রাথমিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকার প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ এই ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে এসেছে। অধিকাংশ মানুষের শরীরে এই রোগের জীবাণু সুপ্ত অবস্থায় আছে।
আগামী দুই মাসের মধ্যে তাঁদের গবেষণা চূড়ান্ত হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ‘মেলিওডোসিস’ মূলত শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ। এর কারণে ফুসফুস, যকৃৎসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে প্রদাহ হয়। রক্তেও এর সংক্রমণ ঘটে। ক্ষেত্রবিশেষে ম্যানিনজাইটিসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
শরিফুল আলম জিলানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেলিওডোসিসে আক্রান্ত মানুষকে ভুল করে যক্ষ্মার চিকিৎসা দেওয়া হয়। ’ তিনি বলেন, গবেষণার মাধ্যমে এই রোগ শনাক্ত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটা এগিয়ে যাবে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই রোগ বাংলাদেশে আগেও ছিল। তবে বাংলাদেশের মাটিতে এই রোগের জীবাণুর সন্ধান পাওয়ার ঘটনাটি তাৎপর্যপূর্ণ। ’
অনুসন্ধান শুরু: জে আশরাফুল হক বলেন, ২০০১ সালে বারডেমে ভর্তি হওয়া ডায়াবেটিসের একজন রোগী একই সঙ্গে মেলিওডোসিসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয়।
এরপর এ ব্যাপারে তাঁরা সতর্ক হন। ২০০৯ সাল পর্যন্ত ডায়াবেটিসের আরও কয়েকজন রোগীর মধ্যে এই রোগ ধরা পড়ে। এসব রোগী এসেছিল বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকা থেকে। এই দুই চিকিৎসক বলেন, এসব ঘটনা দৃঢ় ইঙ্গিত দেয় যে, বাংলাদেশে মেলিওডোসিস রোগের প্রকোপ আছে। তাঁদের দাবি, অধিকাংশ চিকিৎসক ও অণুজীববিদদের কাছে এই রোগ পরিচিত নয়।
ঠিকমতো এই রোগ শনাক্ত হয় না। বাস্তবে দেশে এই রোগীর সংখ্যা অনেক।
গবেষণা: সরকারি ও বেসরকারি সূত্র বলছে, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) ১৯৮৮ সালে এ দেশে ‘মেলিওডোসিস’ রোগীর সন্ধান পেয়েছিল। কিন্তু এ নিয়ে গবেষণার কাজ এগোয়নি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।