আজ আনুশকা এসেছিলো
ডা.সুরাইয়া হেলেন
(শ্রদ্ধেয় কথাসাহিত্যিক মইনুল আহসান সাবেরকে )
১৭বছর আগে—
এক বৃষ্টির দিনে আনুশকা এসেছিলো
তার চুলে,মুখে,খোলা হাত আর গ্রীবায়
হীরের কুঁচির মতো বৃষ্টিজলের ফোঁটা
ঝিকমিক করে জ্বলছিলো…!
আমি তার চুল আর শরীরের গন্ধে উন্মাতাল,
আকুল হয়ে,দু’চোখের সাগর গহীনে
ডুবতে ডুবতে লিখে চললাম এবং
শেষ পর্যৃন্ত ওটা একটা পূর্ণাঙ্গ
প্রেমের উপন্যাস হয়ে গেলো…!
তারপর কত কত বছর পার হলো,
কত বর্ষা আর বৃষ্টির দিন এলো গেলো,
আনুশকা চাপা পড়ে রইলো বইয়ের পাতায়
আর আমার হৃদয়ের স্মৃতিকোঠায় !
কোনদিন ওকে আর স্মৃতি হাতড়ে তুলে আনিনি,
সে বিস্মৃতির অতলেই রয়ে গেলো…!
আমি কখনো তাকে বলিনি,“আবার তোমার সাথে
দেখা হবে?—আসিবে তো?—তুমি আসিবে তো !”
আমার কল্পনায় কখনো ভাসেনি,
“দু’টো হাত,ক’খানা আঙ্গুল
একবার চুপে চুপে তুলে ধরি;
চোখ দুটো চুন-চুন,--মুখ খড়ি খড়ি !
থুৎনিতে হাত দিয়ে তবু চেয়ে দেখি,--
সব বাসি—সব বাসি,--একেবারে মেকি !”
জীবনানন্দ আমার পড়া ছিলো…
১৭বছর পর—
আজ ১৯এর এক তরুণী আমার কাছে
এসে বললো,‘আমিই আনুশকা !’
আজও তেমনি এক বৃষ্টির দিন !
ওর খোলা চুলে,মুখে,হাতে,গ্রীবায়ও
হীরে কুঁচি ঝিকমিকে বৃষ্টিজলের ফোঁটা !
আমি একটুও অবাক হইনি !
জরা ব্যধি ওকে স্পর্শ করতে পারেনি,
বয়স ওকে ছুঁতে পারেনি !
বুঝলাম আনুশকারা বুড়ো হয়না,
চির যৌবনের প্রতীক,চির সবুজ,চির নবীনা !
আমার উপন্যাসের পাতা,স্মৃতির মণিকোঠা,
সহসাই খুলে গেলো….!!
(পেছনের গল্প—ফেসবুকে মইনুল আহসান সাবের তাঁর স্ট্যাটাসে প্রায়ই ২-১লাইন লিখেন ।বেশ কিছুদিন আগে তিনি লিখলেন,অনেক বছর আগে “এক বৃষ্টির দিনে” নামে তিনি একটি উপন্যাস বা গল্প লিখেছিলেন,নায়িকার নাম ছিলো আনুশকা ।আজ এতোদিন পর ১৯এর এক তরুণী এসে বললো,“আমিই আনুশকা ”!এই লেখাটির নিচে অনেক মন্তব্য পড়েছিলো । আমি লেখার লোভ সামলাতে পারিনি ।লেখকের অনুমতি নিয়েই আজ এটা প্রকাশ করছি ।)
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।