আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রসঙ্গ: ভন্ড সাংবাদিক জি, এম ফ্রেজার ও নিয়াজ আহমেদ হাসিব

মানুষ আর প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য হলো-চেতনাগত ও সংস্কৃতিগত।

ভন্ড সাংবাদিক জি, এম ফ্রেজার ও নিয়াজ আহমেদ হাসিব_এরা দুজন "আমাদের কিশোরগঞ্জ"www.kishorgonj.com পত্রিকার মূল ব্যক্তি। জি, এম ফ্রেজার ওয়েব এডমিনিষ্ট্রেটর, কিশোরগঞ্জ ডট কম ফোনঃ + ৮৮ ০১৭১২ ৯২৩৮২৬ নিয়াজ আহমেদ হাসিব পোষ্ট এডমিন, কিশোরগঞ্জ ডট কম ফোনঃ + ০১৬৭৮ ২৭৩১২১ এদের কাজ হলো অন্যান্য website থেকে লেখা নিয়ে "আমাদের কিশোরগঞ্জ" http://www.kishorgonj.com এ নিজেদের নামে আপডটে করে। প্রিয় ব্লগার বন্ধুর আপনারাই বলুন এই ভন্ড সাংবাদিক জি, এম ফ্রেজার ও নিয়াজ আহমেদ হাসিবের কি বিচার হওয়া দরকার? রেবতী মোহন বর্মণঃ বাংলার কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নির্মাতা সম্পাদনা কিশোরগঞ্জ ডট কম ডেস্ক রাজনৈতিক জুন 27, 2010 এই লেখাটির সাথে http://www.biplobiderkotha.com এর লেখাটি নিচে দিলাম। সবাই একটু মিলিয়ে দেখবেন।

বাংলার কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নির্মাতা ছিলেন আজন্ম বিপ্লবী রেবতী মোহন বর্মণ। ৬ মে ২০১০ সাল। মার্কসীয় তাত্ত্বিক রেবতী মোহন বর্মণের ৫৮তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হল। তিনি ১৯৫২ সালের ৬ মে মারা যান। জন্মেছিলেন ১৯০৩ সালে।

বেঁচেছিলে মাত্র ৪৭ বছর। রেবতী বর্মণ। যার পুরো নাম রেবতী মোহন বর্মণ। তবে প্রায় অধিকাংশ মানুষ রেবতী বর্মণ নামেই জানে। তবে তাঁর নিজ গ্রামের মানুষদের কাছে রেবতীবাবু বলে পরিচিত ছিলেন।

আর আমাদের কাছে সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ বইয়ের লেখক হিসেবে পরিচিত। রেবতী বর্মণ, যে নামটির সাথে জড়িত রয়েছে_একটি বই। আবার সেই বইটির নাম শুনলে চেতনার আয়নায় যার নাম ভেসে উঠে, তিনি হলেন রেবতী বর্মণ। বইটি আর নামটি যেন অবিচ্ছেদ্য। যে বইটি ১৯৫২ সাল থেকে এ উপমহাদেশের বামপন্থী রাজনীতিবিদ ও কর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যবশকীয় বই।

সেই অমর গ্রন্থের নাম হলো_ সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ। ব্রিটিশ-ভারতের জেলে থাকাকালীন সময়ে ব্রিটিশ সরকার রেবতী বর্মণের অমানবিক অত্যাচার-নির্যাতন করেন। যে কারণে তিনি ঘাতকব্যাধি কুষ্ঠে আক্রান্ত হন। ১৯৪৯ সালে নিজ জন্মভূমি ভৈরবে বসে কুষ্ঠুরোগাক্রান্ত পচন ধরা আঙুলে রশি দিয়ে হাতের সাথে কলম বেঁধে রচনা করেন_ সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ। “সমাজ-ইতিহাসের গ্রন্থকার হিসেবে খ্যাত গর্ডন চাইল্ড সমাজনির্মিতির ইতিহাস মেলে ধরার চেষ্টায় লিখেছিলেন_ ‘ম্যান মেকস হিমসেল্ফ’ এবং নতুন আলোকে ইতিহাসের আকর্ষণীয় উপস্থাপনা ঘটান বহু তথ্য ও বিবরণের সম্পর্কসূত্র উন্মোচন করে, সেই একই কাজ বাংলায় করেছেন রেবতী বর্মণ”।

রেবতী বর্মণ। যার পুরো নাম রেবতী মোহন বর্মণ। তবে প্রায় অধিকাংশ মানুষ রেবতী বর্মণ নামেই জানে। তবে তাঁর নিজ গ্রামের মানুষদের কাছে রেবতীবাবু বলে পরিচিত ছিলেন। আর আমাদের কাছে সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ বইয়ের লেখক হিসেবে পরিচিত।

রেবতী বর্মণ, যে নামটির সাথে জড়িত রয়েছে_একটি বই। আবার সেই বইটির নাম শুনলে চেতনার আয়নায় যার নাম ভেসে উঠে, তিনি হলেন রেবতী বর্মণ। বইটি আর নামটি যেন অবিচ্ছেদ্য। যে বইটি ১৯৫২ সাল থেকে এ উপমহাদেশের বামপন্থী রাজনীতিবিদ ও কর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যবশকীয় বই। সেই অমর গ্রন্থের নাম হলো_ সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ।

ব্রিটিশ-ভারতের জেলে থাকাকালীন সময়ে ব্রিটিশ সরকার রেবতী বর্মণের অমানবিক অত্যাচার-নির্যাতন করেন। যে কারণে তিনি ঘাতকব্যাধি কুষ্ঠে আক্রান্ত হন। ১৯৪৯ সালে নিজ জন্মভূমি ভৈরবে বসে কুষ্ঠুরোগাক্রান্ত পচন ধরা আঙুলে রশি দিয়ে হাতের সাথে কলম বেঁধে রচনা করেন_ সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ। “সমাজ-ইতিহাসের গ্রন্থকার হিসেবে খ্যাত গর্ডন চাইল্ড সমাজনির্মিতির ইতিহাস মেলে ধরার চেষ্টায় লিখেছিলেন_ ‘ম্যান মেকস হিমসেল্ফ’ এবং নতুন আলোকে ইতিহাসের আকর্ষণীয় উপস্থাপনা ঘটান বহু তথ্য ও বিবরণের সম্পর্কসূত্র উন্মোচন করে, সেই একই কাজ বাংলায় করেছেন রেবতী বর্মণ”। “রেবতী বর্মণ বাংলার কমিউনিস্ট আন্দোলন নির্মাতাদের একজন, প্রগতিশীল রাজনীতির চর্চায় পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন, ‘সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ’ তাঁর যুগান্তকারী গ্রন্থ, নীহার সরকারের ‘ছোটদের রাজনীতি’ এবং ‘ছোটদের অর্থনীতি’র পাশাপাশি রেবতী বর্মণের বইয়ের পাঠগ্রহণ একদা ছিল প্রগতি রাজনীতি-বরণের অবশ্যপালনীয় কর্তব্য।

কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সাহচর্য সত্ত্বেও রেবতী বর্মণ সম্পর্কে এর চেয়ে বেশি কিছু জেনেছি বলে মনে পড়ে না। কোনো এক সময়ে কীভাবে যেন শুনেছিলাম তিনি ছিলেন ভৈরবের সন্তান, এর বাইরে আর কিছু জানতে পারি নি। তবে ‘সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ’ পাঠককে নিশ্চিতভাবে মুগ্ধ করে, সভ্যতার ইতিহাসের এমন প্রাঞ্জল উপস্থাপনা সমাজতন্ত্রকে ইতিহাসের অমোঘ রায় হিসেবে গণ্য করার প্রবণতাকে দৃঢ়বদ্ধ করে। ১৯৫২ সালে প্রকাশিত এই গ্রন্থ মার্কসবাদ চর্চায় যেমন অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল তেমনি সমাজ-ইতিহাস অধ্যয়নে নিবিষ্ট ছাত্রদের কাছেও এর চাহিদা কখনো কমেনি। এমন গ্রন্থ রচনা নিছক রাজনৈতিক কর্মীর তাগিদ থেকে সম্পন্ন হতে পারে না, সেই সঙ্গে চাই সমাজবিশ্লেষকের গভীর দৃষ্টি, ইতিহাসের সমগ্রচেতনা।

রেবতী বর্মণ সেই বিরল গুণের অধিকারী ছিলেন বলে রাজনীতির অমন ক্লাসিক্যাল বই উপহার দিতে পেরেছিলেন এবং একটি বইয়ের সূত্রেই তিনি অমর হয়ে উঠতে পারলেন। তবে যতো যুগান্তকারী হোক তাঁর গ্রন্থ, ইতিহাসের ব্যাখ্যা দিতে তিনি সচেষ্ট হয়েছেন, নতুন ইতিহাস-তত্ত্বের উদ্গাতা তিনি নন, তবু কেন সেই গ্রন্থ কিছুতেই সাবেকী হয়ে উঠলো না। তার একটি কারণ রেবতী বর্মণ কেবল ব্যাখ্যাকারীর ভূমিকা পালন করেন নি, তিনি ইতিহাসের বিপুল তথ্যভাণ্ডার ঘেটে সারসত্য উপস্থাপনে অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন—- মফিদুল হক”। মানুষের ইতিহাস মূলতঃ শ্রেণী সংগ্রাম আর শ্রমের ইতিহাস। শ্রেণী সংগ্রামের তত্ত্বই সমাজ বিবর্তণের মূলসূত্র- এ তত্ত্বে বিশ্বাসী, শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আজীবন বিপ্লবী রেবতী মোহন বর্মণ কারাগারে বসে বিএ পরীক্ষা দিয়ে ইংরেজি সাহিত্যে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।

রেবতী মোহন বর্মণের জন্ম ১৯০৩ সালে। বঙ্গভঙ্গের সেই ঐতিহাসিকক্ষণে। ভৈরব উপজেলার শিমূলকান্দি গ্রামের বর্মণ পরিবারে। তবে তাঁর জন্ম সাল অনেকে ১৯০৪ বা ১৯০৫ বলেও উল্লেখ করেছেন। তাঁর বাবা হরনাথ বর্মণ।

তিনি ছিলেন একজন নামকরা আইনজীবী। ইংরেজদের প্রতি আনুগত্যের জন্য তিনি রায় উপাধিতে পেয়েছিলেন। শিমূলকান্দি গ্রামের নামকরা পরিবার ছিল এই বর্মণ পরিবার। শিক্ষা-দীক্ষা আর অর্থ-সম্পদের এক ঐতিহ্যবাহী পরিবার। রেবতী মোহন বর্মণের পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে।

বাবার কাছে। তারপর প্রাথমিক পড়াশুনা শেষে চুন্টা গ্রামের একটি স্কুলে তাকে ভর্তি করে দেয়া হয়। এখানে তিনি বেশী দিন পড়াশুনা করতে পারেননি। চুন্টা গ্রাম ছিল বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায়। রেবতী মোহন ছিলেন পাঁচ ভাইয়ের মাঝে চতুর্থ।

শিমুলকান্দি গ্রামে জন্ম নেয়া রেবতী বর্মণ পড়াশোনা করেছিলেন ঢাকার পগোজ স্কুল এবং কুমিল্লার গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে। স্কুল ছাত্রাবস্থায় ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অসহযোগ ও স্বদেশী আন্দোলনে যুক্ত হন। অসহযোগ ও স্বদেশী আন্দোলনে যুক্ত থাকার কারণে ওই সময় অসংখ্য স্কুল ছাত্রদের উপর হুলিয়া জারি হয়। এই হুলিয়া থেকে রেবতী মোহন বাদ যাননি। হুলিয়ার কারণে তাকে কয়েকটি স্কুল পরিবর্তন করতে হয়েছিল।

যারফলে ১৯২২ সালে তিনি কিশোরগঞ্জ আজিমুদ্দিন হাই স্কুলে ভর্তি হন। তখন আজিমুদ্দিন হাই স্কুল কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে ছিল। এই স্কুল থেকে (কোলকাতার অধিনস্থ সমস্ত স্কুলের সবাইকে অবাক করে দিয়ে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা ও আসামের মধ্যে) তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন। তারপর রেবতী বর্মণ পড়াশুনার জন্য কলকাতায় যান। এখানে মূলত ছাত্র পড়িয়ে লেখাপড়ার খরচ চালাতেন।

যে মেসবাড়ি ছিল তাঁর ও সতীর্থদের আশ্রয় তা বিপ্লবীদের একরকম ঘাঁটি হয়ে উঠেছিল। তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আইএ এবং সেন্ট পলস কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। বিএ পরীক্ষায় কৃতিত্বের জন্য পেলেন জগত্তারিণী পদক এবং পদক বিক্রির অর্থ দিয়ে সহপাঠীদের নিয়ে প্রকাশ শুরু করলেন কিশোরদের মাসিক পত্রিকা ‘বেণু’। এই সহপাঠীদের মধ্যে ছিল জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারের দুই সদস্য শোভনলাল ও মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁদের সহযোগে বেণু’র প্রথম সংখ্যায় পত্রস্থ হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আশীর্বাদের পরিচয়বহ রচনা, “মধ্যদিনে যবে গান/ বন্ধ করে পাখি/ হে রাখাল বেণু তব/বাজাও একাকী/”।

এরপর ১৯২৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পরীক্ষায় অর্থনীতিতে দ্বিতীয় শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। “রেবতী বর্মণ যে পঠন-পাঠন ও লেখালেখিতে নিবেদিত ছিলেন, সেই সঙ্গে চরমপন্থার বিপ্লববাদ থেকে সাম্যবাদের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছিলেন তার প্রতিফলন পাওয়া যায় ১৯২৯ সালে তাঁর প্রকাশিত ‘তরুণ রুশ’ গ্রন্থে—মফিদুল হক”। রেবতী বর্মণের রাজনীতি শুরু স্কুল জীবন থেকেই। বিপ্লবী ত্রৈলোক্যনাথ মহারাজের জীবনাদর্শের প্রভাবে তিনি মার্কসীয় তত্ত্বে আকৃষ্ট হন। দেশমাতৃকার স্বাধীনতা ও মানুষের মুক্তির জন্য যুক্ত হন শসস্ত্র বিপ্লববাদী গ্রুপে।

এ সময় তিনি ঢাকার শ্রী সংঘের সদস্য হন। এই শ্রী সংঘের সদস্য হিসেবে কোলকাতা, বাকুড়া, ও বীরভূমের বিভিন্ন অঞ্চলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান। ১৯৩০ সালের আগস্ট মাসে কলকাতার ডালহৌসি স্কয়ারে পুলিশ কমিশনার চার্লস টেগার্টের ওপর প্রকাশ্যে হামলা হয়েছিল। হামলার দিন বিকেলেই পুলিশ কুখ্যাত বঙ্গীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধি (সংশোধিত) আইন, ১৯২৫-এর আওতায় রেবতী মোহন বর্মণ রায়কে আটক করে। ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

এরপর বিনা বিচারে ভারতের বিভিন্ন কারাগার ও বন্দিশিবিরে কেটে গেছে তাঁর আটটি বছর। অবশেষে ১৯৩৮ সালের ২১ জুলাই তিনি নিঃশর্ত মুক্তি পান। জেলে থাকাকালীন সময়ে তিনি সমাজ বিবর্তণমূলক অসংখ্য গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি রচনা করেন। সেসব পাণ্ডুলিপি থেকে পরে ১৭টিকে বই আকারে প্রকাশ করা হয়। যা বর্তমানে অত্যন্ত মূল্যবান গ্রন্থ হিসেবে বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়ে সারা বিশ্বে পঠিত হচ্ছে।

১৯৩৮ সালে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে এলাকার শিশুদের শিক্ষিত করে তোলার লক্ষ্যকে সামনে রেখে স্থাপন করা হয় একটি প্রাথমিক স্কুল। যা পরবর্তিতে শিমূলকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিগনিত হয়। কুষ্ঠু আক্রান্ত রেবতী মোহন ভৈরবে আসার পর শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে ঘরের বেড়ার (পার্টিশনের) আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রেখে অপর পাশ থেকে ছাত্র পড়াতেন। তিনি মার্কসবাদের ওপর ব্যাপক পড়াশোনা করেছেন বিভিন্ন জেলখানায়। তবে দেউলী বন্দিশিবিরের দিনগুলোতে তিনি বেশী বই পড়েছেন।

মুক্তিলাভের পর সশস্ত্র বিপ্লববাদের পথ বাদ দিয়ে তিনি সাম্যবাদের দর্শন গ্রহণ করেণ। এরপর থেকে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন মার্কসবাদ-লেলিনবাদ প্রচারের কাজে। ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন শ্রমিক-কৃষক আন্দোলনে। কারামুক্তির পর ভারতের চবি্বশ পরগনার বেলঘরিয়ায় বসবাসকালে শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পুলিশ তাঁর উপর হুলিয়া জারি করে।

যে কারণে তাকে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়তে হয়। চলে আসেন তাঁর পৈতৃক শিমুলকান্দি গ্রামে। বেলঘরিয়ায় থাকাকালেই তাঁর গায়ে কুষ্ঠরোগের লক্ষণ দেখা দেয়। ফলে তাঁর পক্ষে দলীয় কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। ১৯৫১ সালে দেশত্যাগের আগ পর্যন্ত তিনি নিজ গ্রামের বাড়িতেই বসবাস করতেন।

১৯৪৭ সালে সাম্প্রদায়িক চেতনায় বিভক্ত ভারত বর্ষের পাকিস্তান অংশের বিপ্লবী রেবতী বর্মনের বিরুদ্ধে ধর্মান্ধগোষ্ঠী এলাকাবাসীকে ক্ষেপিয়ে তোলে। তাঁর বিরুদ্ধে নেতিবাচক কথা-বার্তা শুরু হলে ১৯৫১ সালে তিনি তাঁর প্রিয় জন্মভূমি ভৈরব ছেঁড়ে ভারতের আগরতলায় চলে যেতে বাধ্য হন। সেখানে ১৯৫২ সালের ৬ মে তিনি মারা যান। No Responses for “রেবতী মোহন বর্মণঃ বাংলার কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নির্মাতা” 1. রফিক বলেছেন: আপনার মন্তব্য অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। সেপ্টেম্বর 22, 2010; 12:31 অপরাহ্ন এ http://www.biplobiderkotha.com থেকে নিয়ে তার তথ্যসূত্র উল্লেখ না করা কোন ধরণের মানষিকতা।

এটা কি ধরনের আচারণ। জবাব 2. রফিক বলেছেন: আপনার মন্তব্য অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। সেপ্টেম্বর 22, 2010; 12:33 অপরাহ্ন এ কিশোরগঞ্জের মানুষ এতটা অকৃতঞ্জ? চুরি করার ধারাটা কি বংশের? রেবতী মোহন বর্মণঃ বাংলার কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নির্মাতা Sheikh Rafiq May 09 |17:29 Last Updated on Sun, 27 Jun 2010 17:00 বাংলার কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নির্মাতা ছিলেন আজন্ম বিপ্লবী রেবতী মোহন বর্মণ। ৬ মে ২০১০ সাল। মার্কসীয় তাত্ত্বিক রেবতী মোহন বর্মণের ৫৮তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হল।

তিনি ১৯৫২ সালের ৬ মে মারা যান। জন্মেছিলেন ১৯০৩ সালে। বেঁচেছিলে মাত্র ৪৭ বছর। রেবতী বর্মণ। যার পুরো নাম রেবতী মোহন বর্মণ।

তবে প্রায় অধিকাংশ মানুষ রেবতী বর্মণ নামেই জানে। তবে তাঁর নিজ গ্রামের মানুষদের কাছে রেবতীবাবু বলে পরিচিত ছিলেন। আর আমাদের কাছে সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ বইয়ের লেখক হিসেবে পরিচিত। রেবতী বর্মণ, যে নামটির সাথে জড়িত রয়েছে_একটি বই। আবার সেই বইটির নাম শুনলে চেতনার আয়নায় যার নাম ভেসে উঠে, তিনি হলেন রেবতী বর্মণ।

বইটি আর নামটি যেন অবিচ্ছেদ্য। যে বইটি ১৯৫২ সাল থেকে এ উপমহাদেশের বামপন্থী রাজনীতিবিদ ও কর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যবশকীয় বই। সেই অমর গ্রন্থের নাম হলো_ সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ। ব্রিটিশ-ভারতের জেলে থাকাকালীন সময়ে ব্রিটিশ সরকার রেবতী বর্মণের অমানবিক অত্যাচার-নির্যাতন করেন। যে কারণে তিনি ঘাতকব্যাধি কুষ্ঠে আক্রান্ত হন।

১৯৪৯ সালে নিজ জন্মভূমি ভৈরবে বসে কুষ্ঠুরোগাক্রান্ত পচন ধরা আঙুলে রশি দিয়ে হাতের সাথে কলম বেঁধে রচনা করেন_ সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ। “সমাজ-ইতিহাসের গ্রন্থকার হিসেবে খ্যাত গর্ডন চাইল্ড সমাজনির্মিতির ইতিহাস মেলে ধরার চেষ্টায় লিখেছিলেন_ 'ম্যান মেকস হিমসেল্ফ' এবং নতুন আলোকে ইতিহাসের আকর্ষণীয় উপস্থাপনা ঘটান বহু তথ্য ও বিবরণের সম্পর্কসূত্র উন্মোচন করে, সেই একই কাজ বাংলায় করেছেন রেবতী বর্মণ”। রেবতী বর্মণ। যার পুরো নাম রেবতী মোহন বর্মণ। তবে প্রায় অধিকাংশ মানুষ রেবতী বর্মণ নামেই জানে।

তবে তাঁর নিজ গ্রামের মানুষদের কাছে রেবতীবাবু বলে পরিচিত ছিলেন। আর আমাদের কাছে সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ বইয়ের লেখক হিসেবে পরিচিত। রেবতী বর্মণ, যে নামটির সাথে জড়িত রয়েছে_একটি বই। আবার সেই বইটির নাম শুনলে চেতনার আয়নায় যার নাম ভেসে উঠে, তিনি হলেন রেবতী বর্মণ। বইটি আর নামটি যেন অবিচ্ছেদ্য।

যে বইটি ১৯৫২ সাল থেকে এ উপমহাদেশের বামপন্থী রাজনীতিবিদ ও কর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যবশকীয় বই। সেই অমর গ্রন্থের নাম হলো_ সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ। ব্রিটিশ-ভারতের জেলে থাকাকালীন সময়ে ব্রিটিশ সরকার রেবতী বর্মণের অমানবিক অত্যাচার-নির্যাতন করেন। যে কারণে তিনি ঘাতকব্যাধি কুষ্ঠে আক্রান্ত হন। ১৯৪৯ সালে নিজ জন্মভূমি ভৈরবে বসে কুষ্ঠুরোগাক্রান্ত পচন ধরা আঙুলে রশি দিয়ে হাতের সাথে কলম বেঁধে রচনা করেন_ সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ।

“সমাজ-ইতিহাসের গ্রন্থকার হিসেবে খ্যাত গর্ডন চাইল্ড সমাজনির্মিতির ইতিহাস মেলে ধরার চেষ্টায় লিখেছিলেন_ 'ম্যান মেকস হিমসেল্ফ' এবং নতুন আলোকে ইতিহাসের আকর্ষণীয় উপস্থাপনা ঘটান বহু তথ্য ও বিবরণের সম্পর্কসূত্র উন্মোচন করে, সেই একই কাজ বাংলায় করেছেন রেবতী বর্মণ”। “রেবতী বর্মণ বাংলার কমিউনিস্ট আন্দোলন নির্মাতাদের একজন, প্রগতিশীল রাজনীতির চর্চায় পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন, 'সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ' তাঁর যুগান্তকারী গ্রন্থ, নীহার সরকারের 'ছোটদের রাজনীতি' এবং 'ছোটদের অর্থনীতি'র পাশাপাশি রেবতী বর্মণের বইয়ের পাঠগ্রহণ একদা ছিল প্রগতি রাজনীতি-বরণের অবশ্যপালনীয় কর্তব্য। কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সাহচর্য সত্ত্বেও রেবতী বর্মণ সম্পর্কে এর চেয়ে বেশি কিছু জেনেছি বলে মনে পড়ে না। কোনো এক সময়ে কীভাবে যেন শুনেছিলাম তিনি ছিলেন ভৈরবের সন্তান, এর বাইরে আর কিছু জানতে পারি নি। তবে 'সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ' পাঠককে নিশ্চিতভাবে মুগ্ধ করে, সভ্যতার ইতিহাসের এমন প্রাঞ্জল উপস্থাপনা সমাজতন্ত্রকে ইতিহাসের অমোঘ রায় হিসেবে গণ্য করার প্রবণতাকে দৃঢ়বদ্ধ করে।

১৯৫২ সালে প্রকাশিত এই গ্রন্থ মার্কসবাদ চর্চায় যেমন অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল তেমনি সমাজ-ইতিহাস অধ্যয়নে নিবিষ্ট ছাত্রদের কাছেও এর চাহিদা কখনো কমেনি। এমন গ্রন্থ রচনা নিছক রাজনৈতিক কর্মীর তাগিদ থেকে সম্পন্ন হতে পারে না, সেই সঙ্গে চাই সমাজবিশ্লেষকের গভীর দৃষ্টি, ইতিহাসের সমগ্রচেতনা। রেবতী বর্মণ সেই বিরল গুণের অধিকারী ছিলেন বলে রাজনীতির অমন ক্লাসিক্যাল বই উপহার দিতে পেরেছিলেন এবং একটি বইয়ের সূত্রেই তিনি অমর হয়ে উঠতে পারলেন। তবে যতো যুগান্তকারী হোক তাঁর গ্রন্থ, ইতিহাসের ব্যাখ্যা দিতে তিনি সচেষ্ট হয়েছেন, নতুন ইতিহাস-তত্ত্বের উদ্গাতা তিনি নন, তবু কেন সেই গ্রন্থ কিছুতেই সাবেকী হয়ে উঠলো না। তার একটি কারণ রেবতী বর্মণ কেবল ব্যাখ্যাকারীর ভূমিকা পালন করেন নি, তিনি ইতিহাসের বিপুল তথ্যভাণ্ডার ঘেটে সারসত্য উপস্থাপনে অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন---- মফিদুল হক”।

মানুষের ইতিহাস মূলতঃ শ্রেণী সংগ্রাম আর শ্রমের ইতিহাস। শ্রেণী সংগ্রামের তত্ত্বই সমাজ বিবর্তণের মূলসূত্র- এ তত্ত্বে বিশ্বাসী, শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আজীবন বিপ্লবী রেবতী মোহন বর্মণ কারাগারে বসে বিএ পরীক্ষা দিয়ে ইংরেজি সাহিত্যে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। রেবতী মোহন বর্মণের জন্ম ১৯০৩ সালে। বঙ্গভঙ্গের সেই ঐতিহাসিকক্ষণে। ভৈরব উপজেলার শিমূলকান্দি গ্রামের বর্মণ পরিবারে।

তবে তাঁর জন্ম সাল অনেকে ১৯০৪ বা ১৯০৫ বলেও উল্লেখ করেছেন। তাঁর বাবা হরনাথ বর্মণ। তিনি ছিলেন একজন নামকরা আইনজীবী। ইংরেজদের প্রতি আনুগত্যের জন্য তিনি রায় উপাধিতে পেয়েছিলেন। শিমূলকান্দি গ্রামের নামকরা পরিবার ছিল এই বর্মণ পরিবার।

শিক্ষা-দীক্ষা আর অর্থ-সম্পদের এক ঐতিহ্যবাহী পরিবার। রেবতী মোহন বর্মণের পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে। বাবার কাছে। তারপর প্রাথমিক পড়াশুনা শেষে চুন্টা গ্রামের একটি স্কুলে তাকে ভর্তি করে দেয়া হয়। এখানে তিনি বেশী দিন পড়াশুনা করতে পারেননি।

চুন্টা গ্রাম ছিল বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায়। রেবতী মোহন ছিলেন পাঁচ ভাইয়ের মাঝে চতুর্থ। শিমুলকান্দি গ্রামে জন্ম নেয়া রেবতী বর্মণ পড়াশোনা করেছিলেন ঢাকার পগোজ স্কুল এবং কুমিল্লার গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে। স্কুল ছাত্রাবস্থায় ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অসহযোগ ও স্বদেশী আন্দোলনে যুক্ত হন। অসহযোগ ও স্বদেশী আন্দোলনে যুক্ত থাকার কারণে ওই সময় অসংখ্য স্কুল ছাত্রদের উপর হুলিয়া জারি হয়।

এই হুলিয়া থেকে রেবতী মোহন বাদ যাননি। হুলিয়ার কারণে তাকে কয়েকটি স্কুল পরিবর্তন করতে হয়েছিল। যারফলে ১৯২২ সালে তিনি কিশোরগঞ্জ আজিমুদ্দিন হাই স্কুলে ভর্তি হন। তখন আজিমুদ্দিন হাই স্কুল কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে ছিল। এই স্কুল থেকে (কোলকাতার অধিনস্থ সমস্ত স্কুলের সবাইকে অবাক করে দিয়ে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা ও আসামের মধ্যে) তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন।

তারপর রেবতী বর্মণ পড়াশুনার জন্য কলকাতায় যান। এখানে মূলত ছাত্র পড়িয়ে লেখাপড়ার খরচ চালাতেন। যে মেসবাড়ি ছিল তাঁর ও সতীর্থদের আশ্রয় তা বিপ্লবীদের একরকম ঘাঁটি হয়ে উঠেছিল। তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আইএ এবং সেন্ট পলস কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। বিএ পরীক্ষায় কৃতিত্বের জন্য পেলেন জগত্তারিণী পদক এবং পদক বিক্রির অর্থ দিয়ে সহপাঠীদের নিয়ে প্রকাশ শুরু করলেন কিশোরদের মাসিক পত্রিকা 'বেণু'।

এই সহপাঠীদের মধ্যে ছিল জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারের দুই সদস্য শোভনলাল ও মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁদের সহযোগে বেণু'র প্রথম সংখ্যায় পত্রস্থ হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আশীর্বাদের পরিচয়বহ রচনা, "মধ্যদিনে যবে গান/ বন্ধ করে পাখি/ হে রাখাল বেণু তব/বাজাও একাকী/"। এরপর ১৯২৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পরীক্ষায় অর্থনীতিতে দ্বিতীয় শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। “রেবতী বর্মণ যে পঠন-পাঠন ও লেখালেখিতে নিবেদিত ছিলেন, সেই সঙ্গে চরমপন্থার বিপ্লববাদ থেকে সাম্যবাদের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছিলেন তার প্রতিফলন পাওয়া যায় ১৯২৯ সালে তাঁর প্রকাশিত 'তরুণ রুশ' গ্রন্থে---মফিদুল হক”। রেবতী বর্মণের রাজনীতি শুরু স্কুল জীবন থেকেই।

বিপ্লবী ত্রৈলোক্যনাথ মহারাজের জীবনাদর্শের প্রভাবে তিনি মার্কসীয় তত্ত্বে আকৃষ্ট হন। দেশমাতৃকার স্বাধীনতা ও মানুষের মুক্তির জন্য যুক্ত হন শসস্ত্র বিপ্লববাদী গ্রুপে। এ সময় তিনি ঢাকার শ্রী সংঘের সদস্য হন। এই শ্রী সংঘের সদস্য হিসেবে কোলকাতা, বাকুড়া, ও বীরভূমের বিভিন্ন অঞ্চলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান। ১৯৩০ সালের আগস্ট মাসে কলকাতার ডালহৌসি স্কয়ারে পুলিশ কমিশনার চার্লস টেগার্টের ওপর প্রকাশ্যে হামলা হয়েছিল।

হামলার দিন বিকেলেই পুলিশ কুখ্যাত বঙ্গীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধি (সংশোধিত) আইন, ১৯২৫-এর আওতায় রেবতী মোহন বর্মণ রায়কে আটক করে। ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর বিনা বিচারে ভারতের বিভিন্ন কারাগার ও বন্দিশিবিরে কেটে গেছে তাঁর আটটি বছর। অবশেষে ১৯৩৮ সালের ২১ জুলাই তিনি নিঃশর্ত মুক্তি পান। জেলে থাকাকালীন সময়ে তিনি সমাজ বিবর্তণমূলক অসংখ্য গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি রচনা করেন।

সেসব পাণ্ডুলিপি থেকে পরে ১৭টিকে বই আকারে প্রকাশ করা হয়। যা বর্তমানে অত্যন্ত মূল্যবান গ্রন্থ হিসেবে বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়ে সারা বিশ্বে পঠিত হচ্ছে। ১৯৩৮ সালে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে এলাকার শিশুদের শিক্ষিত করে তোলার লক্ষ্যকে সামনে রেখে স্থাপন করা হয় একটি প্রাথমিক স্কুল। যা পরবর্তিতে শিমূলকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিগনিত হয়। কুষ্ঠু আক্রান্ত রেবতী মোহন ভৈরবে আসার পর শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে ঘরের বেড়ার (পার্টিশনের) আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রেখে অপর পাশ থেকে ছাত্র পড়াতেন।

তিনি মার্কসবাদের ওপর ব্যাপক পড়াশোনা করেছেন বিভিন্ন জেলখানায়। তবে দেউলী বন্দিশিবিরের দিনগুলোতে তিনি বেশী বই পড়েছেন। মুক্তিলাভের পর সশস্ত্র বিপ্লববাদের পথ বাদ দিয়ে তিনি সাম্যবাদের দর্শন গ্রহণ করেণ। এরপর থেকে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন মার্কসবাদ-লেলিনবাদ প্রচারের কাজে। ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন শ্রমিক-কৃষক আন্দোলনে।

কারামুক্তির পর ভারতের চবি্বশ পরগনার বেলঘরিয়ায় বসবাসকালে শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পুলিশ তাঁর উপর হুলিয়া জারি করে। যে কারণে তাকে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়তে হয়। চলে আসেন তাঁর পৈতৃক শিমুলকান্দি গ্রামে। বেলঘরিয়ায় থাকাকালেই তাঁর গায়ে কুষ্ঠরোগের লক্ষণ দেখা দেয়।

ফলে তাঁর পক্ষে দলীয় কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। ১৯৫১ সালে দেশত্যাগের আগ পর্যন্ত তিনি নিজ গ্রামের বাড়িতেই বসবাস করতেন। ১৯৪৭ সালে সাম্প্রদায়িক চেতনায় বিভক্ত ভারত বর্ষের পাকিস্তান অংশের বিপ্লবী রেবতী বর্মনের বিরুদ্ধে ধর্মান্ধগোষ্ঠী এলাকাবাসীকে ক্ষেপিয়ে তোলে। তাঁর বিরুদ্ধে নেতিবাচক কথা-বার্তা শুরু হলে ১৯৫১ সালে তিনি তাঁর প্রিয় জন্মভূমি ভৈরব ছেঁড়ে ভারতের আগরতলায় চলে যেতে বাধ্য হন। সেখানে ১৯৫২ সালের ৬ মে তিনি মারা যান।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।