আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শরিয়ত হাজার বছর ধরে মহানবীকে অপমান করে চলছে!!

শান্তিবাদ তোলপাড়! তোলপাড়!! তোলপাড় চলছে মহানবীকে ব্যঙ্গ করার জন্য। কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে মহানবীকে নিয়ে অশ্লীল চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল। সাম্প্রতিককালে শোনা যাচ্ছে দেশেও কতিপয় লোক মহানবীকে নিয়ে বিভিন্ন কটূক্তি ও ব্যঙ্গ করেছেন। মহানবীর মত একজন মহাপুরুষকে নিয়ে এ ধরনের অশ্লীল চলচ্চিত্র, কটূক্তি ও ব্যঙ্গ যে উদ্দেশ্যমূলকভাবেই করা হচ্ছে, তা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। তাই একজন মহাপুরুষকে কটূক্তি ও ব্যঙ্গ করার জন্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জঘন্য অশ্লীল বেড রুমের দৃশ্যে তাঁর চরিত্রকে চিত্রায়িত করায় আমি একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে চরম প্রতিবাদ করছি।

সাথে সাথে এ বিষয়েও প্রতিবাদ করছি যে পবিত্র কোরানে আল্লাহর সুষ্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মহানবী করেছেন মর্মে আজ প্রায় ১২/১৩শ বছর যাবত কুচক্রী মহল কর্তৃক মহানবীর বিবিদের বরাতে নিম্নোক্ত বেড রুমের অশ্লীল হাদিছ রচিত হওয়ায়: কোরানের নিষেধাজ্ঞা: লোকে তোমাকে হায়েজ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে, বল! তা অসূচি। সুতরাং তোমরা হায়েজ কালে স্ত্রী সঙ্গ বর্জন করবে এবং পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত সহবাস করবে না-। [২: বাকারা-২২২] বোখারী গংদের হাদিছ: ক. বিবি আয়শা বলেন: আমি ও নবি (সা) অপবিত্র অবস্থায় একই পাত্র থেকে পানি নিয়ে একই সঙ্গে গোসলখানায় গোসল করতাম, তার নির্দেশে ঋতুর কাপড় পরিধান করতাম। অতঃপর তিনি আমার সঙ্গে মিশা-মিশি করতেন। খ. বিবি আয়শা বলেন: আমাদের কেউ ঋতুবতী হলে এবং সে অবস্থায় রাছুলাল্লাহ (সা) তার সঙ্গে মিশামিশি করতে চাইলে তাকে ঋতুর প্রাবল্যের সময় ঋতুর কটিবেশ পরার নির্দেশ দিতেন, অতঃপর তিনি তার সঙ্গে মিশামিশি করতেন।

গ. মায়মুনা (রা) বলেন: রাছুল্লাহ (সা) তার কোনো স্ত্রীর সঙ্গে ঋতু অবস্থায় মিশামিশি করতে চাইলে, তাকে ঋতুর কটিবেশ পরার নির্দেশ দিতেন। ঘ. আবু হোরায়রা (রা) বলেন, একদা নবি [সা] কয়েক জন ছাহাবাসহ এক মজলিশে বসেছিলেন। এমন সময় একটি লোক দৌঁড়ে এসে বলল, ‘ইয়া রাছুলাল্লাহ! আমি একটি অন্যায় কাজ করে ফেলেছি, আমি ঋতু অবস্থায় স্ত্রী-সঙ্গম করে ফেলেছি। ’ রাছুলাল্লাহ (সা) জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হায়েজের বয়স কত?’ লোকটি উত্তর করল, ‘১ দিন। ’ু রক্ত কিরূপ?’ লোকটি উত্তর করল, ‘রক্ত গাঢ় লাল।

’ রাছুল্লাহ অতঃপর বললেন, ‘তুমি ১ দিনার কাফফারা দাও। ’ এমন সময় আর একটি লোক দৌঁড়ে এসে অবিকল বলল। রাছুল পূর্ববৎ প্রশ্ন করলেন। লোকটি উত্তর দিল, ‘হায়েজের বয়স ২দিন এবং রক্ত লাল। ’ রাছুল আদেশ দিলেন, ‘তুমি অর্ধ দিনার কাফফারা দাও।

’ অতঃপর আর একটি লোক দৌঁড়ে এসে একই ঘটনার কথা বলল এবং রাছুলও একই প্রশ্ন করলে, লোকটি জবাব দিল হায়েজের বয়স ৩ দিন ও রক্ত হালকা লাল। অতঃপর রাছুল (সা) নির্দেশ দিলেন, ‘তুমি ১/৪ দিনার কাফফারা দাও। ’ ঙ. ইবনে আববাস থেকে বর্ণিত: হায়েজ অবস্থায় যথাক্রমে ১ দিনার, অর্ধ দিনার; ভিন্নমতে কাফফারার দরকার নেই, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলেই হয়। ([হাদিছ সূত্র: ক, খ ও গ: বোখারী, ১ম খন্ড, ৭ম সংস্করণ, আধুনিক প্রকাশনী, পৃ: ১৫৯; ঘ) হাদিছে রাছুল, আলী হায়দার; ১ম প্রকাশ; তাজ কোং; ঙ) জামে আত-তিরমিযী,১ম খ. ৪র্থ প্রকাশ; হা. নং-১৩১, ১৩২, পৃ: ১২৮; বাং. ইসলামিক সেন্টার] - সূত্র: কোরান বনাম শরিয়ত- ম. জামিলুল বাসার) আশ্চর্যের বিষয় মহানবীর নামে তাঁর বিবিদের বরাতে অশ্লীল জঘন্য বেড রুমের হাদিছ রচনার মাধ্যমে এ কলঙ্ক আজ প্রায় ১২/১৩শ বৎসর যাবৎ সারা বিশ্বের মুসলমান সমাজ কেন? কীসের স্বার্থে?? বহন করে চলেছে??? এমনকি প্রতিবাদটুকু্ও করার মত সৎ সাহস দেখায় না কেন বর্তমান মুসলমান সমাজ???? এহেন অবস্থায় ব্যতিক্রম ‘‘কোরান বনাম শরিয়ত এবং মানব ধর্ম সংস্কার’’ গ্রন্থ দুটি, যাতে যৌক্তিকভাবে মহানবীর নামে এ জঘন্য মিথ্যা অশ্লীল কলঙ্ক লেপনের বিষয়ে প্রবল প্রতিবাদ করা হয়েছে এবং এ সমস্ত হাদিছ প্রত্যাহার করার জন্য সচেতনতা সৃষ্টির পরামর্শ দিয়েছে। এ বিষয়ে ব্রাকেটে সংযুক্ত ‘‘কোরান বনাম শরিয়ত’’ গ্রন্থের যৌক্তিক বিশ্লেষণ নিম্নরূপ: (নারীদের হায়েজ সময়কালীন কোরানোল্লিখিত বিধি নিষেধটি নিতান্ত সহজ-সরল, যার পুনঃ ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন।

আয়াতটিতে প্রধান দু’টি নির্দেশ: ১. ঐ সময় বিবি সঙ্গ বর্জন, ২. এবং সংগম বর্জন। বিশ্বের কোনো অনুবাদেই এর মতান্তর বা মতবিরোধ নেই। সংগ বর্জন বলতে: যৌনাবেগে ধরা, ছোঁয়া, হাসি-ঠাট্টা, কথাবার্তা, রং-তামাশা, মস্করা ইত্যাদি খুঁটিনাটি সকল বিষয় থেকে বিরত থাকা বুঝায়। এ বিশেষ সময়টা মা-খালা, বোন ও আপন কন্যাদের সঙ্গে সাধারণত যেমন সম্পর্ক ও যোগাযোগ থাকে; ঋতুবতী স্ত্রীর সাথেও তদ্রূপ সম্পর্ক বজায় রেখে চলার পরিষ্কার ইঙ্গিত বহন করে উল্লিখিত আয়াতে। মাসের মাত্র ৩/৫টি দিন ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা কোনো মোমেন এমনকি সাধারণ লোকের পক্ষেও অসম্ভবের কিছু নয়; যাদের একাধিক বিবি বর্তমান থাকে, তাদের পক্ষে বিষয়টি কোনো বিষয়ই নয়।

পক্ষান্তরে, একজন নবি, অতঃপর ৯/১১ জন বিবি বর্তমান থাকতে, ঋতুবতী বিবিদের সাথে মাখামাখি, মিশামিশি করতেন বলে হাদিছ রচিত হয়েছে। আর এজন্য রীতিমতো ঋতুর নির্দিষ্ট কাপড় পরার নির্দেশ দিতেন, অতঃপর মাখামাখি করতেন!! হাদিছ বেত্তাগণ ‘মুবা-শারাতুন’ এর অর্থ করেছেন, ‘মাখামাখি’, ‘মিশামিশি’। কিন্তু তার অর্থ ‘সঙ্গম’ও বটে! [দ্র: আধুনিক বাংলা আরবী অভিধান; মাওলানা মুহিউদ্দিন]। অতএব হাদিছ বেত্তাগণ মূলত কী বলতে চাচ্ছেন তা’ স্পষ্ট নয়, আবার পরিষ্কারও বটে! তবুও মাত্র মাখামাখির কাম প্রবৃত্তিটুকুও (হাদিছ মতে) দমন করতে তিনি সক্ষম হননি! উল্লিখিত ৪ নং হাদিছটি যেন অজ পাড়াগাঁয়ের গন্ড মূর্খ নাট্যকারের রচনা। মহানবি হায়েজের বয়স, রক্তের রং ইত্যাদির সাক্ষ্যসাবুদ নিয়ে কয়েক দিনার কাফফারার নির্দেশ দিয়েই ক্ষান্ত হলেন! মাত্র একটিবারের জন্যও সাবধান করে দিলেন না যে, এ অবস্থায় স্ত্রীমিলন কোরানে হারাম ঘোষিত আছে, অতএব ‘তোবা কর, দ্বিতীয় বার আর যেন না কর।

’ বরং সামান্য কাফফারার বিনিময় সকল অবস্থায় ঋতুবতী বিবির সঙ্গে সহবাসের বৈধতার রায় দিলেন! উল্লিখিত হাদিছগুলো মহানবির উক্তি বলে যদি কেউ বিশ্বাস করে, তবে তার মোসলমানিত্ব থাকবে কি না তা ভেবে দেখা জরুরি। হাদিছগুলো অলংকৃত হ’তে হ’তে এমন পর্যায় এসেছে, যা লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে লিখতে হল: ‘মোকছেদুল মোমেনীন’-এ লিখা আছে, ‘‘ঋতুবতী বিবির লোছে/রানে পুরুষ অঙ্গ ঘষাঘষি করে বীর্যপাত ঘটানো যায়েজ আছে। ’’ [দ্র: মোক্ছুদুল মো’মিনীন বা বেহেশতের পুঞ্জী, পৃ: ৬৯; মা. মো. শামছুল হক; গোলাম রহমান বা যে কোনো লেখকের মোকছেদুল মোমেনীন] ইমাম বোখারীদের ওপর ঈমান এনে, মহানবির নামে জঘন্য মিথ্যা কলঙ্ক মুসলমানগণ আজ দেড় হাজার বৎসর যাবৎ বহন করে চলছে। দলীয় স্বার্থ ও আপন অশ্লীল দোষ-ত্রুটি ঢাকার জন্য মহানবির পবিত্র নামের দোহাই দিয়ে হাদিছগুলো রচিত হয়েছে বলে সন্দেহ করা যায়। এগুলোর ওপর জনসাধারণের বিশ্বাস অর্জন ও দৃষ্টি হরণের জন্য অতি সাধারণ ও গৌণ বিষয় কিছু সত্য কথা হাদিছে লিখেছে বটে! কিন্তু তার আড়ালে কোরানের মূল ও মৌলিক ভিত্তির ওপর মহানবির ব্যক্তিত্ব তথা পুত পবিত্র পরিবারের ওপর অবিশ্বাস্যরূপে অনধিকার চর্চা করেছেন।

) পরিশেষে: উপরোক্ত বক্তব্যের আলোকে প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, অশ্লীল ব্যঙ্গ ও চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং প্রায় ১২/১৩ শ বছর যাবৎ বোখারীগং কর্তৃক অশ্লীল হাদিছ রচনা করে পুত পবিত্র মহানবীর ব্যক্তিত্বে অশ্লীল কলঙ্ক লেপনকারী কুচক্রীমহলের উদ্দেশ্য/ষড়যন্ত্র এক ও অভিন্ন। তাই বিবেকের নিকট প্রশ্ন বিশ্বে এমন কোন মুছলিম কী নেই! মহানবীর নামে এ ধরণের জঘন্য অশ্লীলতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে?? বিনীত। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৯ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।