আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মওদুদকে 'ডিগবাজ' বললেন নাজমুল হুদা



জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নতুন একটি কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দলীয় সহকর্মী মওদুদ আহমেদের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিএনপির সহসভাপতি নাজমুল হুদা। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক আইনমন্ত্রী ও বিএনপির সহসভাপতি মওদুদের অতীত তুলে ধরে নাজমুল হুদা বলেন, "বিভিন্ন সময়ে মওদুদ সাহেব নানা সুবিধা নিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন সরকারের মন্ত্রী, উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন। ডিগবাজির রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি সুপরিচিত। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি থেকে তাকে বহিষ্কারও করা হয়েছিলো।

" আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মপক্ষ সমর্থন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মওদুদ। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তাকে দেশের প্রথম পোস্ট মাস্টার জেনারেল করা হয়। পরে অবশ্য দেশের প্রথম সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যোগ দেন মওদুদ। জিয়া তাকে মন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রী করেছিলেন। জিয়ার মৃত্যুর পর সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের হাত ধরেন মওদুদ।

এরশাদের নয় বছরের শাসনামলে তিনি মন্ত্রী, উপপ্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এবং উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির হয়ে অংশ নিয়ে পরাজিত হন মওদুদ। এর কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়ে দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ছেড়ে দেওয়া লক্ষ্মীপুরের একটি আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হন। সেই নির্বাচনেও তিনি পরাজিত হন। মওদুদ ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন এবং চারদলীয় জোট সরকারের আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৮ এর ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নিজের এলাকা নোয়াখালীতে হেরে যাওয়ার পর বগুড়ায় খালেদার ছেড়ে দেওয়া আসনে উপনির্বাচনে জিতে বর্তমান সংসদে আছেন তিনি। ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে সভাপতি ও ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকনকে মহাসচিব করে গত ৩১ অগাস্ট জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এই কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন বলে কমিটির সদস্যদের দাবি। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি নাজমুল হুদা বলেন, "মওদুদ সাহেব এই কমিটি গঠনে কলকাঠি নেড়েছেন। এভাবে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্টের ইউনিটের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করায় জাতীয়তাবাদ বিশ্বাসী আইনজীবীদের মধ্যে বিভেদ ও অনৈক্য সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

" নাজমুল হুদা বলছেন, এই কমিটি অগণতান্ত্রিকভাবে গঠন করা হয়েছে। "এই সংগঠনটি বিএনপির অঙ্গ সংগঠন নয়, একটি সহযোগী সংগঠন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কোনো সহযোগী সংগঠনের অনুমোদন দলের চেয়ারপারসন দেন না। তাই এই সংগঠনের সাধারণ সদস্যদের ভোটে কমিটি হতে হবে। " মওদুদ ও নতুন কমিটির সদস্য সচিব মাহবুবউদ্দিনের বাড়ি নোয়াখালীতে।

সেদিকে ইঙ্গিত করে নাজমুল হুদা বলেন, "জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নোয়াখালী জেলার কিছু আইনজীবী এই পকেট কমিটি করেছেন। তারা একে নোয়াখালী সমিতি করতে চান। " 'জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম'র পরিচয় দিয়েই সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন নাজমুল হুদা। এতে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান। এই কমিটির বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করেন জিয়া।

নাজমুল হুদার এই সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে মাহবুবউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। উনি ওমরাহ করে ৯ সেপ্টেম্বর দেশে আসছেন। তখনই তা জানা যাবে। এ বিষয়ে (সংবাদ সম্মেলন) আমি কিছু বলতে চাই না। " মওদুদ বর্তমানে জার্মানিতে থাকায় তার কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।