দুঃখ সুখ, অহম খেলা খেলছে মানুষ, যখন তখন, বাঊন্ডুলে, ভাবনা গুলোয় বিভোর আমার, আপন ভুবন।
২০০৪ সালে, আমি একবার বেড়াতে গিয়েছিলাম বাংলাদেশের শ্যামল এক গ্রামে সেখানে এই কবিতার চরিত্র সূবর্নদার বন্ধু অজিতদার সঙ্গে ঘটনা চক্রে আমার পরিচয় হয়, আর তার কাছ থেকে আমি শুনেছি সূবর্নদার কথা। সূবর্নদা পারিবারিক ভাবে কিছুটা অসুখি ছিলেন, তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলে। যাইহোক, যোগ্যতা থাকার পরও সূবর্নদা একটা চাকরি যোগাতে পারেনি, যানিনা এটা তার অযোগ্যতা, নাকি আমাদের এ তথাকথিত গনন্ত্রান্ত্রিক দেশের মতাবানদের সর্বেেত্র মতায়নের কুফল, এ প্রশ্ন আজ সবার বিবেকের কাছে। সূবর্নদা জীবনের দৌড়ে হেরে গেছেন কিন্তু আর কত।
আজও কি আমাদের জেগে ওঠার সময় হয়নি?
সূর্যের তেজে পড়েছে বয়সের ছাপ
বৈকালি আকাশের গায়ে,
পড়েছে ছোপ ছোপ মেঘের দাগ সুস্পষ্ট।
আগুন্তুকের ছায়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে
নবীন প্রেতাত্মার দল,
শ্মশানের ওপাড়ে বসত গেড়েছে
অন্ধকারের গাড় পল্লী। শুধু,
আমরা কজন এখন ঠায় দাঁড়িয়ে বাকহীন।
একে একে সবাই এসেছে,
অজিত, রাজন, আরও অনেকে। শুধু,
সূবর্নটা এখনও আসেনি।
সেই যে বেরিয়েছে ছোকরাটা
ফুলহাতা ফতুয়া আর দুধ সাদা ধূতিটা পরে
এরপর আর কোন খবর নেই।
বিষ্ণুদার চায়ের কাপে
চিট চিটে ময়লার ত,
তবুও তৃপ্তি পেতাম চা খেয়ে।
সেই বিষ্ণুদা এসে বল্ল
আমি দেখেছি ওকে, মুখটা ভার ছিল
ছিল পানকৌড়ীর মত উদ্বাস্ত,
হাতে ছিল একগাদা কাগজ, অনেকখানি,
ফ্যাকাসে গলায় ঠোঁট নেড়ে বল্ল!
দাদা প্রনাম রেখ, এই লকখীগুলোর গায়ে
অলকখীর আঁচড় পড়ে পুঁজ জমেছে
তাই, গঙ্গা স্নান করাব।
কাল এসো আমার বাড়িতে
আমাকেও একটু গঙ্গাজ্বল ছিঁটিয়ে যেও
“হ-রি-বো-ল”
যাচ্ছি গো দাদা, এরপর আর দেখিনি।
সূবর্নটা একটু অভিমানিই বটে, তা না হলে
এই ভর সন্ধায় পুরোহীতগুলো
ওদের বাড়িতে যাচ্ছে কেন?
আমিওতো খুঁজেছি হন্নে হয়ে
অন্ন ধংসের আপবাধ আমিওতো কম শুনিনি,
তবে একটু কমই হেঁটেছি, শুকতলা খয়ে যবার ভয়ে,
শেষ সম্বলটা না হারিয়ে ফেলি তাই।
একে একে সবাই চলে গেছে,
আমি একা দাঁড়িয়ে কারন,
সূবর্নর একান্ত কাছের মানুষটি মৌমিতা
রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে পথ দেখছে আমাদের
আমরা আসব বলে।
আমি ওকে ছোঁয়ে কথা দিয়েছিলাম
শেষবারের মত হলেও,সূবর্নকে নিয়ে যাব
দেখবে বলে।
কিন্ত সন্ধার আরতী শেষ হওয়ার পথে
ধূপ কাঠির পর্বটাও শেষ।
অন্ধকারের রথ যাত্রায় নিজেকে সপেঁছে প্রকৃতি,
কাছের কোন এক শশ্মানে ধ্বনিত হচ্ছে
“হরিবল”“হরিবল” নামের গা ছমছম করা শব্দ।
মড়া পোড়ার গন্ধে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে
ঘী চন্দনের পাট চুকে গিয়ে
পড়ে আছে আছে এক বিস্তর ছাই
কিন্তু..........সূবর্নটা এখনও আসেনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।