পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি
প্রতিনিয়ত দেখি এই সব খবর। কোথাও ডাক্তার -নার্স কিংবা প্যারামেডিকের অবহেলা, কোথাও ভেজাল ওষুধ, নষ্ট মেশিন। মানুষ মরছে। অথবা সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে । ক্ষতি হচ্ছে এমন যার প্রতিকার সম্ভব নয়।
এই ধরনের পার্মানেন্ট ড্যামেজের জন্য কারো তেমন বিশাল কোন শাস্তি হয়েছে বলে দেখিনি। দেখিনি কোন ডাক্তার, নার্স কিংবা হাসপাতালের ম্যানেজারদের ভয় পেতে। যারা ব্যক্তিগত ভাবে সৎ , তাদের হাতে রোগীরা নিরাপদ থাকে । কিন্তু শুধু ব্যক্তিগত ভালোমানুষির উপরে নির্ভর করে কি নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব না উচিত?
কবে দেশে মেডিকেল ইঞ্জুরি বা হার্ম ( চিকিৎসাজনিত কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া) এর জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের শাস্তি হওয়া দেখব?
কবে বাংলাদেশের তরুণ লইয়াররা এই ধরনের কেস লড়তে আগ্রহী হবেন?
আমার নিজের বাবার চোখ নষ্ট হয়েছে এক আনাড়ি সার্জনের " দেখি তো পারি কিনা" মানসিকতায় নতুন এক পদ্ধতিতে চোখের অপারেশন করতে গিয়ে। খোদ সি এম এইচ এ।
চোখের ভিতরে লেন্স ফেলে দেওয়ার পরে এক মাস ডাক্তার কাউকেই জানায় নাই কি হয়েছে । বেমালুম চেপে গেছে তার প্রথমে ভুল ও পরে অপরাধের কথা। এক মাস পর ইনফেকশনের কারণ অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা।
আমার নিজের হাটুর মারাত্মক ইনজুরির পরে দেখলাম বাংলাদেশে এর রিপেয়ার অপারেশন এর যন্ত্রপাতি নাই। বিশেষজ্ঞ সার্জনও নাই।
পরামর্শ নিতে যেই দুই সার্জনের কাছে গেলাম তাদের দুইজনেরই আগ্রহ আমার শরীরের উপর প্রাক্টিস করার। কপাল ভালো, রাজি হইনি। তাদের অভিজ্ঞতা? দুই-চার মাসের ট্রেনিং। আর তাতেই উনারা বিশেষজ্ঞ সার্জনের উপস্থিতি ছাড়াই গিনিপিগ বানাইতে আগ্রহী। হবে নাই বা কেন? জানেই তো যে বাংলাদেশে " মেডিকেল ক্রাইম" এর কোন শাস্তি নাই।
মামলা করলে রোগী ফতুর হয়ে যাবে, বিচার পাওয়াই মুশকিল।
আজকের পত্রিকাতেও সেই একই কাহিনী --- কালের কন্ঠ ।
দু' দুটো বাচ্চার চোখ অন্ধ করে দিয়েছে ।
( যারা ডাক্তার শব্দটা শুনলেই গালি দিতে উদগ্রীব হন, তাদের জানিয়ে রাখি, আমি নিজেও ডাক্তার। মেডিকেল ক্রাইম বন্ধ করার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব যারা আইন প্রণেতা বা সংসদ সদস্য, আইন প্রয়োগকারী তথা আদালত ও পুলিশ প্রশাসন, পাশাপাশি হাসপাতালের কর্মকর্তা।
ঢালাও ভাবে ডাক্তারদের গালি দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না । বরং আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের জন্য আন্দোলন করুন, মানুষকে তথ্য দিন, প্রচার করুন, সাহায্য করুন রোগীর পরিবারকে। তাছাড়া চোরকে গালি দিলে চুরি বন্ধ হয় না, নিজের আহাম্মকি প্রমাণীত হয়। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।