আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈদ কেনাকাটা, ছেলে-মেয়ে বৈষম্য

মিলে মিশে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ!

বাচ্চাদের সাথে মায়ের কথোপকথন, ছেলের সাথে, আব্বু ঈদের জামা কিনে দিয়েছে? -হ্যাঁ। কি কিনে দিয়েছে? পাঞ্জাবী নাকি শার্ট-প্যান্ট? - শার্ট-প্যান্ট। আর জুতা? -হ্যাঁ, জুতাও কিনে দিয়েছে। নানা ভাইয়া রাখী কিনে দিয়েছে। আম্মু, রাখী কি কেবল মেয়েরা পরে? না সবাই পরতে পারে তো।

নানা ভাইয়া তোমাদের দুজনের জন্য রাখী কেনেনি? - হ্যাঁ, আমার জন্যও কিনেছে, নাফিসার জন্যও কিনেছে। কিন্তু নানু আপু যে নাফিসার জন্য মালা কিনলো, চুড়ি কিনলো, আমার জন্য তো এগুলো কেনা হয়নি। ওর জন্য তো বেশি কেনা হলো। শুরু হলো চিৎকার চেঁচামেচি করে মায়ের কাছে ছেলের অভিযোগ, তার জন্য ঈদের কেনাকাটা কম করা হয়েছে......তার জন্য তো মালা, চুড়ি কেনা হয়নি......... মা কিছুটা অসহায় বোধ করে। বলে হ্যাঁ, মেয়েদের জন্য একটু বেশিই কেনা লাগে।

মালা, চুড়ি তো মেয়েরা পরে বাবা। ছেলেরা তো পরে না। ও তো তোমার আপু হয়। আচ্ছা, তোমার আর কি কেনা লাগবে? - আমার জলরং কেনা লাগবে। নানা ভাইয়া এখনো কিনে দিচ্ছে না।

তুমি নানা ভাইয়াকে বলে দাও আমাকে যেন তাড়াতাড়ি জলরঙ কিনে দেয়। আচ্ছা আমি বলে দিচ্ছি। এবার মেয়ের সাথে, আম্মু, আব্বু কী কী কিনে দিয়েছে? -- আব্বু একটা জামা কিনে দিয়েছে, বড় ফুপ্পী একটা কিনে দিয়েছে। জুতা? - হ্যাঁ, জুতাও। আর নানা ভাইয়া রাখী কিনে দিয়েছে, নানু আপু আংটি, চুড়ি, মালা কিনে দিয়েছে।

একটু দূর থেকে ছেলের আবারো চিৎকার করা অভিযোগ শোনা যাচ্ছে, নাফিসার জন্য মালা, চুড়ি কেনা হয়েছে, আমাকে দেয় নাই, আমাকে অবশ্যই জলরং কিনে দিতে হবে। এদিকে মেয়ের আবদার, আম্মু রাহীককে জলরঙ কিনে দিলে আমাকেও কিনে দিতে হবে। আমার জন্য রংপেন্সিলও লাগবে। এবার মা প্রমাদ গুণে, দুজনকেই জলরঙ কিনে দিলে আবারো মালা, চুড়ি বাড়তিই থেকে যায়। তাই আবারো ছেলেকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞ্যেস করা, আব্বু তোমাকে ঘড়ি কিনে দিলে হবে? লাগবে তোমার ঘড়ি? -- হ্যাঁ, হ্যাঁ লাগবে।

ঘড়ি লাগবে, চকলেটও লাগবে। আচ্ছা ঠিকাছে। -- আম্মু, তোমার ওখানে কি বড়শি পাওয়া যায়? কেন? বড়শি দিয়ে কি হবে? -- মাছ ধরবো। তুমি এখনো পুকুরের কাছে যাও? -- না, দূর থেকে দেখি। ওরা যে মাছ ধরে, ওদের মাছ ধরা দেখি।

আম্মু, আমাকে একটা বড়শি, একটা ঘড়ি কিনে দিও। বড়শি না হলে একটা ঘুড়ি। আচ্ছা, গুড! মায়ের স্বস্তি, যাক্‌ বাবা মালা, চুড়ির ভারসাম্য করার জন্য কিছু তো পাওয়া গেল। রক্ষে!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।