আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈদে কনোকাটা : র্গামন্টেস নারীদরে ঈদ ভাবনা

তবে তাই হোক, ক্লান্তিহীন তিল তিল আরোহনে সত্য হোক বিক্খুব্ধ এই জীবন _____

‘তিন বেলা ঠিকমত খেতে পারি না, ঈদ নিয়ে কী ভাববো? গোশত খাই না অনেক দিন। ডাল যে খাবো তার দামও অনেক চড়া। ডাল হিসেবে খাই অ্যাংকর। আর ঈদ আসলে ভয় পাই। বাড়ি যাওয়ার খরচ, ঈদের জন্য কিছু কেনাকাটা, বাচ্চাদের আবদারÑ এগুলো মেটাতে যে টাকার প্রয়োজন হয় তা কোথায় পাবো।

যে টাকা বেতন পাই তাতে ঘরভাড়া আর খাবার খরচই ঠিকমতো চালাতে পারি না’ কথাগুলো বলছিলেন ওশান গার্মেন্টসে কর্মরত নূরবানু। ঈদ এলে রাজধানীসহ দেশের সবগুলো বিভাগীয় এবং জেলা শহরে এমনকি উপজেলার শপিংমলগুলোতে কেনাকাটার ধুম পড়ে যায়। মিডিয়াগুলোতে প্রচার হয় ঈদ উপলক্ষে বাহারি পোশাক, গহনা, জুতা এবং কসমেটিকসের বাজার দর। লাখ টাকা দামের শাড়ির খবর ছাপা হয় পত্রিকায়। কিন্তু এসব কিছুর কোনো প্রভাব পড়ে না গার্মেন্টসে কর্মরত নারীদের ওপর।

একটি নির্দিষ্ট ছকে বাধা তাদের জীবন। আসছে ঈদে কী করবেনÑ জানতে চাইলে স্মার্ট গার্মেন্টসে কর্মরত চাঁদপুরের জরিনা বলেন, ‘ঈদ করবো কিভাবে, হাতে তো টাকা থাকতে হবে। ’ গার্মেন্টসে কাজ করলে ১ বছরে বেতন বাড়ে শ্রেণীভেদে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা। জরিনা কাজ শুরু করেছেন ১০০০ টাকায়। তিনি জানান, বেশি টাকা আয়ের জন্য ওভারটাইম করে মেয়েরা।

কিন্তু সেখানেও বৈষম্য। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওভারটাইমের পুরো টাকা দেয় না। যেমন ১৫০ ঘণ্টার ওভারটাইম করিয়ে ১০০ ঘণ্টার মজুরি দেয়। একই রকম যোগ্যতা হলেও প্রায় গার্মেন্টসেই ছেলে এবং মেয়েদের বেতন একই রকম হয় না। ছেলেরা একটু বেশি পায়।

হাইটেক্স গার্মেন্টসে কর্মরত গাইবান্ধার হ্যাপি বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পৌঁছতে হয় গার্মেন্টসে। কিন্তু কোনো কারণে এক সেকেন্ড দেরি হলে তিনদিনের বেতন কাটা হয়। আর ছুটিও সবসময় ঠিকমতো দেয়া হয় না। কাজের চাপ থাকলে তখন অতিরিক্ত কাজ করিয়ে নেয়। আবার সব গার্মেন্টসে বেতন নিয়মিত দেয় না।

প্রতিবাদ করতে গেলে চাকরি হারাতে হয়। ১ মাসের বেতন ২ মাসেও পরিশোধ করা হয়। তিনি আরো বলেন, এখানে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করা হয়। নামমাত্র সেবা দেয়া হয়। তিনি অভিযোগ করেন, কোনো কোনো গার্মেন্টসে নিয়োগের সময় বয়স বোঝার জন্য দাঁত দেখা হয়।

এটি অপমানজনক। ডিজাইন গার্মেন্টসে কর্মরত শরীয়তপুরের আঁখি বলেন, বাথরুম সমস্যা মেয়েদের জন্য অনেক বেশি যন্ত্রণাদায়ক। মেয়েদের জন্য আলাদা বাথরুম থাকলেও কোথাও কোথাও প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ মেয়ের জন্য একটি মাত্র বাথরুম থাকে। এতোসব সমস্যার পরও ঈদে কী করবেন জানতে চাইলেÑ তিনি জানান, স্বল্পআয়ের মানুষদের জন্য অপেক্ষাকৃত কমদামে ফুটপাতসহ কিছু কিছু মার্কেটে পোশাক পাওয়া যায়। সেখান থেকেই বেশি কেনা হয়।

আনাম গার্মেন্টসে কর্মরত রাশেদা বলেন, বেশি উপার্জনের জন্য দুই মেয়েকে চাকরিতে ঢুকিয়েছি। ৩ জন মিলে আয় করি। ঈদে ছেলেমেয়েদের জন্য একটা করে পোশাক কেনা হয়েছে। এছাড়া গ্রামের বাড়ি যাওয়ার খরচ তো আছেই। এ টাকা দু-একমাস আগে থেকেই জমাতে হয়।

বড় দোকান থেকে না হলেও সাধ্যমতো কেনাকাটা করা হয়। সারা বছর কষ্ট করলেও অন্তত ঈদে যেন একটা নতুন জামা, একটু ভালো খাওয়া যায়, সেজন্য আগে থেকেই টাকা জমাতে হয় ২৭০০ হাজার কোটিপতির এই দেশ !!!!!!!!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।