আমি মনে হয় শেষমেষ আমিই থাকব
একঃ
আমি অপারগ, কেননা আমি নিজে তেমন বেশি ধর্ম-কর্ম করি না। সুতরাং আমি মনে করি ধর্মীয় বিষয়াবলীতে আমার অংশগ্রহণ লজ্জাকর। সেহেতু, অযথা নিজেকে খুব ভাল জাহির করতে ধর্মীয় আলোচনায় নাক গলায় না কিংবা নাক না-গলাতে চেষ্টা করি। এরপরও আজ লিখলাম বলে ক্ষমাপ্রার্থী...
দুইঃ
জনাব আসিফ যা লিখেছন Click This Link (লিংকটি এখন কাজ করছে না, মডারেটর পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়ার জন্য) তা যদি নিছক গল্প হতো তাহলে আমার বলবার কিছু নেই। কিন্তু তিনি কৌশলে কিংবা সুকৌশলে ইসলামকে গালমন্দ করেছেন।
আর, তাই করে যদি তিনি পাক সার সাদ জমিন সাদ বাদ এর ড. হুমায়ুন আজাদ হতে চান তাহলে আমি বলব তা নিছক বোকামী বৈ কিছু নয়।
তিনঃ
আপনার (জনাব আসিফ সাহেবের) গল্পের অনেক বিষয় অমূলক। যেমনঃ আপনি গল্পের শুরুতে বলেছেন, "আকাশে চাঁনতারা মার্কা চাঁদ উঠেছে। চাঁদের দিকে তাকিয়ে আহমদের ভেতরে অন্যরকমের কোন আবেগ তৈরি হয় না, চাঁদের আলোয় কোন নারীর গা ঘেষে নদীর তীরে বসে থাকার ইচ্ছাও তৈরি হয় না, বরঞ্চ চাঁনতারা মার্কা আকাশ দেখে মনের ঈমান চাগার দিয়ে ওঠে, ইসলামের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেবার ইচ্ছাটা আরও তীব্র হয়ে ওঠে তার। ছোটবেলা থেকেই ইসলামী মুল্যবোধ আর ঈমান-আকীদার ভেতরে বড় হওয়া আহমদ এখন যুবকে পরিনত হয়েছে।
" আপনি গল্পের শুরুটা অনেকটা নাটকীয়ভাবে শুরু করেছেন যেমনটি ইংরেজি গল্পে দেখা যায়। কিন্তু সেই নাটকীয়তা গল্পের না-হয়ে আপনার মনগড়া নাটকীয়তায় পরিণত হয়েছে। (যেহেতু আপনারটা গল্প হয়ে উঠেনি) সুতরাং সাহিত্যমূল্য দেওয়ার মতো কিছুই পেলাম না। যেই আহমদকে আপনি ইসলামী মূল্যবোধের যুবক বলেছেন, বলেছেন নারীর দেহের মুযেজা যাকে আকর্ষণ করে না। অথচ, সেই আপনি সেই আহমদকে নিয়ে আপনার গল্পে লিখেছেন, "মালাউন ভোগের শখ আহমদের সেই ছোটবেলা থেকেই।
"এটা কি আপনার ইসলামকে গালি দেওয়ার কৌশল? স্ববিরোধী কোনো লেখা মৌলিক বলে বিবেচিত হতে পারে না। সুতরাং গল্পে যে শুরুর সাথে শেষের মিলবন্ধন কথা সাহিত্যিকরা দেন, তা আপনার মিথ্যাচারের জন্য হয়ে উঠেনি। সুতরাং গল্প হিসেবে আপনারটার কোনো মর্যদা থাকলে, আসল গল্পকে খাঁটো করা হবে।
চারঃ
নবম-দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় ছুটি গল্পের একটি MCQ প্রায় সময় পরীক্ষায় আসত-- পৃথিবীতে তের-চৌদ্ধ বছরের ছেলের মতো এমন বালাই আর নাই। --উক্তিটি কার? নির্ভেজাল উত্তর হলো-- লেখক রবীন্দ্রনাথের।
যদিও গল্পের সব কথা লেখকের, কিন্তু এরপরও শেষমেষ সব লেখা লেখকের থাকে না, হয়ে যায় গল্পের চরিত্রের । সুতরাং চরিত্রের খাতিরে কিছু অশ্লীল-ইসলাম বিদ্বেষী লেখা মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু আপনি কী লিখলেন, "সে রাতে আল্লাহর আরশ কেঁপে ওঠেনি। আল্লাহ তালাহ ভীষন ক্রোধে জিহাদী ধর্ষকদের উপরে বজ্র নিক্ষেপ করেনি। আল্লাহ তালাহ সামান্য কেঁদেও ফেলেননি নিষ্পান মেয়েগুলোর চিৎকার শুনে।
আল্লাহ তালাহর এত সময় নাই যে মালাউন মেয়ের কোমল যোনী ফাটার শব্দ, ধর্ষনের রক্ত আর কান্না মুছে দেবার জন্য সাত আসমান থেকে নেমে আসবেন। তার যথেষ্ট কাজ আছে, সে সময়ে তিনি নাস্তিক অবিশ্বাসী নাফরমান বান্দাদের জন্য এক মাজেজা সৃষ্টিতে ব্যস্ত ছিলেন, একটা গরুর গোশতের ভেতরে আল্লাহু লেখা দেখে অবিশ্বাসী কাফির গুলার মুখের ভাব কিরকম হবে তা ভাবতেই আল্লাহ তালাহ ভেতরে ভেতরে উৎফুল্ল হয়ে উঠছিলেন। " এই লেখাতো একান্ত আপনার, নয় কি? এই লেখাতো কারো উক্তি ছিল না। সুতরাং আপনার কৌশল বুঝতে আমার কিংবা সচেতন পাঠকের কষ্ট হবে বলে মনে হয় না।
পাঁচঃ
কুরআনের যে আয়াত আপনি এখান (Click This Link) থেকে কপি পেস্ট মেরেছেন।
তো ভাই কোন দুঃখে বাংলা অনুবাদটা নিজের মতো দিলেন? আপনার অনুবাদ দেখুন--"তাই ভোগ কর মালে গনিমত হিসেবে তোমরা যা পেয়েছো, ইহা সিদ্ধ এবং উত্তম, এবং ভয় কর আল্লাহকে, নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল এবং মেহেরবান। " এবার সচেতন পাঠক আপনারা আসল অনুবাদ দেখুন সেই একই সাইট থেকে নেওয়া--''সুতরাং তোমরা খাও গণীমত হিসেবে তোমরা যে পরিচ্ছন্ন হালাল বস্তু অর্জন করেছ তা থেকে। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, মেহেরবান। " এখানে শুধু খাও এবঙ ভোগ শব্দ না, আপনি কৌশলে পুরো অনুবাদটি নিজের মতো করে দিয়েছেন।
তাই নয় কি? কুরআনে স্পষ্ট হালাল বস্তুর কথা উল্লেখ আছে। বুখারি শরীফ হাতে নেই, তাই হাদীস সম্পর্কে লিখতে পারলাম না।
ছয়ঃ
জামায়াত-শিবির ভাল সেটা কিন্তু নয়, তবে আপনারটা পুরো বানোয়াট। এবঙ আপনার লেখাটি জামায়াতের বিরুদ্ধে না-গিয়ে সরাসরি ইসলামে বিরুদ্ধে গিয়েছে, যেখানে আমার মূল আপত্তি। এটা জানা এবঙ মানতে হবে যে, কিছু কিছু লোক ধর্মের নামে ব্যবসা করে, ঠিক আছে।
তবে তা হাতে গোনা, সবাই না। এটা যে শুধু জামায়াতে সেটা কিন্তু নয়, সব জায়গায়। সুতরাং ব্লু ফিল্মের (খলনায়ক) নায়ককে টুপি, পাঞ্জাবি পড়াতে যাবেন না, কোনো ধর্মীয় দলের নেতা বলে পরিচয় করিয়ে দিবেন না। যেটা সত্য সেটা লিখুন, কাল্পনিক কিছু নয় (অন্তত ধর্মীয় ব্যাপার গুলোতে; কেননা- আপনার মৌলিক যেকোনো গল্প অতিশয় কল্পনায় ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে যেতে পারে, কিন্তু ধর্মীয় বিষয়াবলীতে সত্যের লেপনী না-থাকলে দাঁড়াবে না। )
সাতঃ
সামু আমার আরজ শুনবে বলে মনে হয় না, তবু বলি ধর্মের মোড়কে যারা নিজের কেচ্ছা চালায় (সে যে ধর্মের হোক) শুধু তাদের লেখা নয়, পুরো তাদেরকে বাতিল করা হোক।
------------------------------------------------------------------------
বি. দ্র. সামু মনে হয় আমার আর্জি শুনেছে। আসিফ ভাইয়ের পোস্টটি আর দেখতে পাচ্ছি না। ধন্যবাদ--সামু।
------------------------------------------------------------------------
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।