বরগুনা, ভোলা ও পটুয়াখালী থেকে এই মৃত্যুর খবর এসেছে, এর মধ্যে বরগুনায় নিহত হয়েছেন পাঁচজন।
ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর উপকূল অতিক্রম করে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট বাংলাদেশ উপকূলমুখী এই ঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টি ও ভূমিধসে শ্রীলঙ্কায় সাতজন নিহত হয় বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় উপকূলজুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিলো, তবে তা উপকূলে আসার আগে দুর্বল হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি ছিলো তুলনামূলক কম।
ঝড়ে কয়েক হাজার ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে, উপড়ে পড়েছে বহু গাছপালা।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বরগুনা প্রতিনিধি জানান, ঝড়ে বামনা উপজেলায় তিনজন এবং বেতাগী ও তালতলীতে একজন করে মারা গেছেন।
বামনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, জয়নগর এলাকার আনোয়ার হোসেন (৪২) ঘরচাপা পড়ে, লক্ষ্মীপুরা গ্রামের সন্তানসম্ভবা ঝুমুর আক্তার নাদিরা (২৫) আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে আছড়ে পড়ে এবং একই এলাকার মোশাররফ হোসেন (৫৫) ঘরচাপা পড়ে মারা যান।
বেতাগী থানার ওসি বাবুল আখতার জানান, পূর্ব আলীপুর গ্রামের সৈয়দ আলী খান (৭৫) নামে এক ব্যক্তি গাছচাপা পড়ে মারা গেছেন।
এছাড়া আমখোলা গ্রামে গাছচাপা পড়ে চাঁন মিয়া (৬০) নমে আরেকজনের মৃত্যু হয় বলে তালতলী থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান।
বেতাগীর কাজিরাবাদ ইউনিয়নের বকুলতলীতে মারা গেছে আবির হোসেন নামে ৬ বছর বয়সী এক শিশু।
বেতাগী থানার ওসি বাবুল আখতার জানান, ঘরের ভেতরে থাকলেও বজ্রপাতে ‘আতঙ্কিত হয়ে’ শিশুটির মৃত্যু হয় বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
ভোলা প্রতিনিধি জানান, লালমোহন উপজেলায় গাছচাপা পড়ে মারা যান আবুল কাশেম (৬৫) এবং চরফ্যাশনে ঘরচাপায় মারা গেছেন রফিকুল ইসলাম (৬৫) ও শিশু পারভেজ (৬)।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ওয়াহেদ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে লালমোহনের ধলিগৌরনগর এলাকায় মারা যান মো. আবুল কাসেম।
রেড ক্রিসেন্টের সাইক্লোন প্রিপেয়ার্ডনেস প্রোগ্রামের (সিপিপি) উপ-পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন জানান, চর ফ্যাশনের চর মাদ্রাজে ঘর চাপায় নিহত হয় পারভেজ। সে স্থানীয় মো. আলমগীরের ছেলে।
ভোলা জেলা প্রশাসক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চর ফ্যাশনের ঢালচরে ঘরচাপা পড়ে মারা যান রফিকুল ইসলাম।
মহাসেনের প্রভাবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভোলায় মাঝারি বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে।
ভোলা সংলগ্ন তেতুলিয়া নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বেশি উঁচু জোয়ার দেখা যায়। ৩/৪ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায় জেলার বেড়ি বাঁধের বাইরের বিস্তীর্ণ এলাকা।
ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসায় বুধবারই ১৩ হাজার মানুষকে জেলার চর, দ্বীপ ও উপকূলবর্তী এলাকাগুলো থেকে সরিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়।
পটুয়াখালীতে প্রতিনিধি জানান, গলাচিপা পৌর এলাকায় ঝড়ে উপড়ে পড়া একটি গাছের চাপা পড়ে মারা যান রিজিয়া পারভীন (৪৫) নামে এক নারী।
গলাচিপা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম এ খবর নিশ্চিত করেন।
রাঙ্গাবালি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে গলাচিপা, রাঙ্গাবালি ও দশমিনা উপজেলা তিনটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া ঝড়ে আহতের সংখ্যা দুই শতাধিক বলে জানান তিনি।
দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ঝড়ে তার উপজেলার সাত/আটশসহ জেলায় দুই হাজারের অধিক কাঁচা ঘর ভেঙে গেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।