http://www.facebook.com/doyougo
আক্কাস একজন সফল রাজনীতিবিদ। তার এই সফলতার পিছনে আছে জানা অজানা অনেক ইতিহাস। জীবনে অনেক কিছুই তার পাওয়া হয়ে গেছে তাই এখন শেষ বয়সে নানা রকম সামাজিক কাজে নিজেকে ব্যাস্ত রাখার পরিকল্পনা করতাছে। আক্কাস পড়ালেখা খুব একটা করেনাই ক্লাস এইট পর্যন্ত কোনমত উঠছিল এরপর আর হয়ে উঠে নাই। তবে বাংলা পড়তে-লেখতে তার কোন অসুবিধা নাই যত সমস্যা ইংরেজীতে।
আক্কাস অবশ্য নিজেই বলে সে "ইংরেজীতে week"। তবে তার মতে ইংরেজীর কোন দরকার নাই বাংলাদেশের মানুষ সব কাজ বাংলাতেই করা উচিত। কোনদিন এমপি মন্ত্রী হইলে এই প্রস্তাব সরকারকে দেওয়ার চিন্তায় আছে।
আক্কাসের বয়স হলেও মনে প্রাণে সে এখনও তরুণ। তাইতো সে ঘরে শিক্ষক রেখে কম্পিউটার শিখার সিদ্ধান্ত নিছে।
কিন্তু শুরুতেই সমস্যা সবকিছু ইংরেজীতে লেখা! আক্কাস শিক্ষকরে নির্দেশ দিলো কম্পিউটারের সব কিছু যেন বাংলা দেখায় সেই ব্যাবস্হা করে দিতে। আক্কাসের শিক্ষক পরলো মহা ঝামেলায় সব কেম্নে বাংলা করবে? অবশেষে সে উবন্টুর খোজ পাইলো এবং আক্কাসের পিসিতে উবন্টু বাংলায় ইনস্টল করে দিলো। আক্কাস এখন মহা খুশি সে বাংলায় কম্পু চালাইতে পারতাছে। যদিও কিছু ইংরেজী আছে তাতে তার খুব একটা সমস্যা হইতাছে না। এভাবে এক সময় সে ইন্টারনেট ব্যাবহার করাও শিখে ফেলছে।
কিন্তু সমস্যা হলো ইন্টারনেটের বেশীর ভাগ সাইটেই ইংরেজীতে লেখা, কি করা যায় জানতে চাওয়ায় শিক্ষক পরামর্শ দিলো বাংলা খবর এর সাইট গুলো পড়তে। আক্কাসের সময় ভালই কাটতাছিল ইন্টারনেটে খবর পড়ে। এখন খবরের কাগজে খবর পড়ে আর সে মজা পায় না।
কিভাবে কিভাবে যেন একদিন আক্কাস একটা সাইট খুলে যেখানে নানা পদের খবর, গল্প, উপন্যাস, ছবি, ক্যাচাল বিষয়ক লেখা আছে। একটু ভাল কইরা লক্ষ্য করে দেখলো সাইটের নাম "সামহয়্যারইনব্লগ" যদিও এটা সে নিজে উচ্চারন করতে পারে নাই আরেকজন করে দিছে, এর পাশে লেখা "বাধ ভাঙার আওয়াজ"।
আক্কাসের এতটুকু বুঝতে কোন সমস্যা হয়নাই যে "সামহয়্যারইনব্লগ" এর বাংলা অর্থই "বাধ ভাঙার আওয়াজ"। নিজের বুদ্ধির কথা চিন্তা করে চোখে মুখে কিছুটা উল্লাসও ফুটে উঠে। আক্কাস এই সাইটের খুজ পেয়ে মেলা খুশি! কত কিছু জানা যায়, সময়টও খুব ভাল কাটে। কিন্তু সে একটু বিরক্ত সব কিছু সবাই এখানে বাংলায় লেখে অথেছ সাইটের নাম কিনা "সামহয়্যারইনব্লগ!" সরাসরি "বাধ ভাঙার আওয়াজ" লেখলে কি সমস্য আক্কাসের মাথায় তা ঢুকে না। যাই হোক আস্তে আস্তে সে এই সাইটে নিয়মিত হয়ে পরে।
ব্লগে মাঝে মাঝে কিছু রাজনৈতিক লেখা আসে আক্কাস এগুলো খুব মন দিয়া পড়ে। তবে তার দলের বিরুদ্ধে কিছু লেখলে তার মাথাটা গরম হয়া যায় তখন তার ইচ্ছা করে এই সাইটে আগুন ধরায়া দিতে। আক্কাস আস্তে আস্তে বাংলা লেখাতেও অভ্যস্ত হয়ে যায়। আর যখনই তার দলের বিরুদ্ধে কেউ কিছু লেখে সে তীব্র প্রতিবাদ করে। একারনে ব্লগে তার পরিচিতিও খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
অনেকেই তাকে প্রতিবাদী আক্কাস নাম দেয়।
এভাবেই জীবন চলতাছিল। একদিন সে তার নিজের দলের গুণ-গান গাইয়া একটা লেখা পোস্ট করে কিন্তু কিছুক্ষন পরেই পোস্ট খুলে দেখে সবাই তার পোস্টে মাইনাস দিয়া ভরায়া ফেলছে। অনেকে তারে দুর্নীতিবাজ, গমের বস্তা চোর বলেও গালি দিছে। আক্কাসেরতো এগুলা পইড়া মাথায় আগুন ধইরা গেছে।
সে চিন্তা করছে যারা তারে মাইনাস দিছে সবাইরে শায়েস্তা করতে হবে। এই জীবনে কেউ তার বিরুদ্ধে এভবে কথা বলে নাই। আক্কাস খোজ নিয়া জান্তে পারলো এদেরকে শায়েস্তা করার জন্য "মডু" হওয়া লাগে। আক্কাস মনে মনে ভাবে এইটা কোন ব্যাপার না যে শুন্য থাইকা এত বড় নেতা হইতে পারে তার এই সামান্য "মডু" হইতে আর কি লাগবে। তাই সে একটা লেখা পুস্ট করে "আমি মডু হইতে চাই" শিরোনামে আর পোস্টের ভিতরে তার যোগ্যতা লিখে দিলো "পড়ালেখা: অষ্টম শ্রেনী, বয়স: ৫০, পেশা: রাজনীতিবিদ, টাকার পরিমান: টাকা কুনু ব্যাপার না"।
কিন্তু কপাল খারাপ কিছুক্ষনের মাঝেই সবাই এই পোস্ট নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু করলো এবং এক সময় দেখলো সে আর তার নাম দিয়া ব্লগেই ঢুকতে পারতাছে না। এতদিনে সে "ব্যান হওয়া" শব্দের সাথে পরিচয় হইল!
আক্কাস মনে খুব ব্যাথা পাইলো। এ নিয়া অনেক চিল্লা-চিল্লি ও করল। তার মতে "সামহয়্যারইনব্লগ" এর অর্থ "বদ আওয়াজ" হওয়ার কথা ওরা নিশ্চই ভুল করছে। আক্কাসের মাথায় এখন নতুন চিন্তা সে নিজে একটা ব্লগ সাইট খুলবে আর নিজেই হবে ব্লগের মডু।
ব্লগের নাম দিবে "আক্কাসইনব্লগ" বাংলায় "আক্কাসের ভাঙা গলার আওয়াজ"।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।