আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তাকওয়াই সফলতার সিঁড়ি

সাবাস বাংলাদেশ

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষের উপকারের জন্যই পৃথিবীর সকল প্রাণী সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই মানুষ হিসাবে সব সময় সর্বোচ্চ উপকারটা পেতে চাই। এটি মানুষের একটি সহজাত প্রবণতা। একে অস্বীকার করার ক্ষমতা কোন মনুষের নেই।

আর তাই মানুষ জীবন চলার পথে প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতার নাগাল পেতে চায় আর এই চাওয়া থেকে সফলতার পিছু পিছু ছুটতে গিয়ে মানুষ ন্যায়-অন্যায়ের বাচ-বিচার ভুলে যায়। হারিয়ে ফেলে নীতি-নৈতিকতাবোধ, জড়িয়ে পড়ে নানাবিধ অনাচারে। ব্যর্থতার বিভীষিকাময় জীবনকে পিছু ফেলে সফলতার চাবিকাঠি হাতের মুঠোয় পেতে সবাই ব্যাকুল। আর এই ব্যাকুলতা থেকেই সৃষ্টি হয় জীবনের সমাপিকা। ফলে সমাজ হয় কলুষিত, রক্তাক্ত ও অস্থির।

আমরা বর্তমান আমাদের সমাজের দিকে তাকালেই এর প্রমাণ পাই। আমাদের দেশের প্রতিটা মানুষ সফলতার জন্য সব রকম চেষ্টা চালাতে প্রস্তুত থাকে। কিন্তু মানুষেরা জানে না সফলতার সোনার হরিণ কোথায় আছে? কিসের মাধ্যমে সফলতা পাওয়া যায়। সফলতার কি বাস্তব কোন পথ আছে? হ্যা অবশ্যই আছে। সফলতার পথ হল তাকওয়া, আল্লাহকে ভয় করা।

কোন চাকর যদি তার মালিককে ভয় করে এবং ভালবাসার মাধ্যমে কাজ করে, তা হলে ঐ কাজটি সব চাইতে সুন্দর হবে। একটি আয়াত শুনে জানতে পারলাম, সকল ধর্মের মুলকথা এ আয়াতের মধ্যে আছে। তখন উমর (রা) আয়াতটি কী তা জিজ্ঞাসা করলেন তখন লোকটি আয়াতটি পড়ে বলল, আল্লাহর ফরজ কার্যাদির সাথে রাসুলের সুন্নাতের সাথে জীবন কে মিলিত করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং নাফরমানি না করে, তার হুকুমের বাহিরে না চলে তার জীবন সফলতা পেতে বাধ্য। আর সকল ধর্মে এই সফলতা নিয়েই কথা বলা হয়েছে। আল্লাহকে ভয় তথা তাকওয়া ও সফলতার মাঝে চমৎকার সেতুবন্ধন লক্ষ্যণীয়।

জীবনে চলার পথে প্রত্যেক ক্ষেত্রে এটা একটা শ্রেষ্ঠ পাথেয়। অনেক বাধা বিপত্তি, বিপদ-আপদে পথ চেনার এটিই মহৎ গুণ। মানুষের জীবনকে বড় বড় পাপাচার থেকে মুক্ত করে রাখে এটি। এ একটি গুণই যা দুনিয়া ও আখিরাতে বয়ে আনে অবারিত সাফল্য, সমুন্নত করে মানুষের মর্যাদা। আর এই তাকাওয়ার অর্থ হল বেঁচে থাকা বা বিরত থাকা, সাবধান থাকা।

মোটকথা, সকল কাজ যদি আল্লাহর ভয় নিয়ে করা হয় তাহলে সাবধানে ও অন্যায় থেকে বিরত থাকা হয়। আল্লাহতালা আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। তার সৃষ্টির উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখে সকল কাজে তার কাছে জবাবদিহিতার অনুভুতি নিয়ে কাজ করলে তাকওয়া অর্জিত হয়। তাকওয়াই পারে একজন মানুষকে নৈতিক ও আদর্শ হিসাবে গড়ে তুলতে। যুগে যুগে আমরা আদর্শবান পুরুষদের দিকে তাকালে তার প্রমাণ পাবো।

তাকওয়ার এই মহৎগুণ অর্জন খুব সহজ কাজ নয়। মানুষকে জীবনের বাঁকে বাঁকে অনেক উত্তাল তরঙ্গের মধ্যে সাতার কেটে টিকে থাকতে হয়। প্রচন্ড ঝড় ঝাপটার মধ্যে টিকে থাকতে হয়। প্রচন্ড ঝড় ঝাপটার মধ্যেও স্থির থাকার দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে হয় কেবল এক আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে এবং হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শাফায়াত পাওয়ার জন্য। ফলে জীবন যুদ্ধে জয়ী এই মহান বীর লাভ করে তার কাঙ্খিত সোনার হরিণটি, দুনিয়ার জীবনে সর্বোচ্চ মান মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকে সে।

সর্বোচ্চ স্তরের সাফল্যের উজ্জ্বল হাসি তার মুখে শোভা পায়। কেবল জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত কেটে যায় অনাবিল আনন্দের মধ্যে। এখানেই তার প্রাপ্তির শেষ নয়, পরকালের সকল প্রকার সুখ স্বাচ্ছন্দ অপেক্ষা করে তার জন্য, খুলে দেয়া হয় নেয়ামতের অফুরন্ত ভান্ডার, সফলতার চুড়ান্ত মঞ্জিলে পৌছে যায় সে,আর এ সকল অর্জন শুধুমাত্র তাকওয়ার বিনিময়ে হয়ে থাকে। এই মহৎ গুণটি যখন আমাদের মধ্যে পুরোপুরি অর্জিত হবে ঠিক তখনি আমাদের সকল কর্মকান্ড স্বার্থক হবে। স্বার্থক হবে দুনিয়া ও আখিরাত আর সিঁড়ি বেয়ে আমরা পৌছে যাবো সুদুর লক্ষ্যে।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই সফলতার সিঁড়ি অতিক্রম করার তাওফিক দান করুন \

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.