সাধারণ শিক্ষক ফোরামের ব্যানারে শিক্ষকদের ধর্মঘটে দুই দিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমও কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।
বুধবার সকালে উপচার্যের কার্যালয় অবরোধ করার পর বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাধারন শিক্ষক ফোরামের নেতারা।
সাধারণ শিক্ষক ফোরামের সভাপতি কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক হানিফ আলী বলেন, “সমস্যার সমাধান উপচার্যের হাতে। তিনি যদি পত্যাগ করেন বা পদত্যাগের প্রতিশ্রুতি দেন তাহলে আমরা অবরোধ তুলে নেব। ”
অন্যদিকে উপাচার্য আনোয়ার হোসেন টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যকে (রাষ্ট্রপতি) সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে সকালে ফ্যাক্স পাঠিয়েছি।
আশা করি তিনি শিগগিরই কোনো ব্যাবস্থা নেবেন। ”
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বুধবার সকাল থেকেই উপাচার্যের কার্যালয়ের দুটি দরজার অবস্থান নিয়ে থাকায় রাতে অফিসেই কাটাতে হয় উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনকে। তরে এরই মধ্যে তিনি বাসা থেকে পাঠানো খাবার খেয়েছেন। সকালে একজন চিকিৎসক এসে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে গেছেন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, ‘মানবিক বিষয়গুলো নিয়ে’ উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বাধা দেয়া হচ্ছে না ।
উপ উপচার্য এম এ মতিন এবং ও আফসার আহমদও বুধবার থেকে ওই ভবনেই অবস্থান করছেন। তারা বলেছেন, উপাচার্যকে নিয়েই তারা ফিরবেন।
সকালে উপাচার্যের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. বিরেণ কুমার বিশ্বাস জানান, অধ্যাপক আনোয়ারের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস থাকলেও এখন তার স্বাস্থ্যের অবস্থা স্থীতিশীল।
সঙ্কট উত্তরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে বুধবার একটি চিঠি দিয়ে তার হস্তক্ষেপ কামনা করেন অধ্যাপক আনোয়ার।
গত বছর ছাত্র-শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির পদত্যাগ করলে উপাচার্যের দায়িত্ব পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক।
পরে তিনি নির্বাচিতও হন।
অধ্যাপক আনোয়ার নির্বাচিত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার কয়েক মাস পর শিক্ষক সমিতি বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামে, যাতে শরীফ এনামুল সমর্থকদের সক্রিয় দেখা যায়।
শিক্ষকদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে হাই কোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থিতিশীলতা রক্ষার নির্দেশনা দেয়ায় ৩০ জুলাই থেকে শিক্ষক সমিতি প্রশাসনিক ভবনের অবস্থান তুলে নেয়।
এরপর কৌশল পাল্টে শুরু হয় সাধারণ শিক্ষক ফোরামের আন্দোলন, যাতে শরীফ এনামুল সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি সমর্থক শিক্ষকরাও সক্রিয় হন।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের কারনে বৃহস্পতিবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস পরীক্ষা, পরিবহনসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
প্রশাসনিক ভবনে আন্দোলনকারীদের সংবাদ সম্মেলনে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “আমাদের আন্দোলন চলবে। বিভ্রান্তি ও অপপ্রচার না চালানোর জন্য আমরা উপাচার্যের প্রতি আহবান জানাই। ”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।