এই গল্পের নামগুলো কাল্পনিক । কাহিনি সত্য । কারও নামের সাথে মিলে গেলে তা অনিচ্ছাকৃত ।
আমি সাইফুল । অনার্স ফার্স্ট ইয়ার ।
আমার চারিত্রিক বৈশিষ্টগুলো হল, ভয়াবহ অমিতব্যয়ী, প্রচন্ড কল্পনাপ্রবণ, অতি powerful দ্রব (সবজায়গায় দ্রবীভুত হতে পারি), campus এর familiar face । আমার কল্পনাশক্তি এতটাই প্রবল যে আজও আকাশে উল্কাপাত দেখলে wish করি (অসম্ভব জেনেও আজও সেই পুরানো wish টাই করি)। রেগে গেলে ঘুষি মেরে জানালা বা আয়নার কাঁচ ভাঙ্গি ।
ক্লাসের একটি মেয়ের সাথে খুবই ভাল সম্পর্ক আমার । যথেষ্ট সুন্দরী ।
নাম সোহা (সোহা আলী খান ভাইবেন না আবার)। প্রথম থেকেই ওকে খুব ভাল লাগত । ভাল লাগা কখন যে ভালোবাসায় convert হয়ে যায়, টের পাইনি । ওর সাথে কোন এক অদ্ভুৎ কারনে এক রহস্যময় সম্পর্ক গড়ে ওঠে । পুরো ক্যাম্পাসে আমরা দু’জন গাবের আঠার মত থাকতাম ।
আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর হয় একটি দুঃখজনক কারনে । দুঃখজনক হলেও তা আমার জন্য শাপে বর হয়ে দাঁড়ায় । সোহার বয়ফ্রেন্ড ওকে ছেড়ে দিয়েছিল । মানষিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল বেচারী । সেসময় আমিই ওকে অনেক mental support দেই ।
সেই থেকে শুরু ।
দুজন অধিকাংশ সময় একসাথে কাটাতাম । ক্লাসে, ল্যাবে, খেতে যাওয়ার সময় । এক ঘন্টা journey করে ওকে বাসায় পৌছে দিতাম শুধু একটু বেশী সময় একসাথে থাকার লোভে । দু’জন যে কখন দু’জনকে ভালোবেসে ফেললাম, আমরা কেউ বুঝতে পারলাম না ।
দু’জনই বুঝি, কিন্তু কেউই কাউকে বলি না । আমার মতে, বলার কি দরকার, feelings টাই আসল । কিন্তু আমার বন্ধুরা জোরাজুরি করছিল, বলার জন্য । বললে at least সে ভরসা পাবে যে আমি আছি তার সাথে, আর থাকব ।
অবশেষে বললাম ।
4th year এ উঠে । দিনটাও কাকতালীয়ভাবে ছিল ১৪ই ফেব্রুয়ারি । ভালোবাসা দিবস । ভালোবাসা দিবসেই আমাদের ভালোবাসা official হল । ভার্সিটিতে অনেকেই আমাদের একসাথে দেখে প্রথমেই বলত, MADE FOR EACH OTHER ।
আসলে আমাদের দুজনকে পাশাপাশি ভালই মানাতো ।
সমস্যা ছিল অন্য জায়গায় । আমাদের family . আমাদের ব্যপার জানার পর দুজনের কারও বাসায়ই সম্পর্কটা মেনে নেয়নি । ওর ফ্যামিলির যুক্তি, আমাদের গ্রামের বাড়ি বরিশাল । আর আমার ফ্যামিলির যুক্তি, ওকে দেখতে নাকি আমার চেয়ে বয়স বেশী লাগে ।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, ওর বিয়ে ঠিক হয়ে আছে এক অতি ধনী ছেলের সাথে । f**king richman . তারপরও আমরা আশা ছাড়িনি । কিন্তু একসময় তাও ভেঙ্গে যায় ।
আমাদের তখন সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল । তখন ও একদিন আমার এক ফ্রেন্ডকে জানায়, ওর engagement হয়ে গেছে ।
আমাকে জানায়নি । জানিয়েছে পরে । আমার ফ্রেন্ডদের ভাষ্য, ও যদি আগে জানাতো তাহলে কিছু হয়ত করা যেত । at least চেষ্টা করা যেত । কিন্তু ও সেই সুযোগ আমাকে দেয়নি ।
পরীক্ষার পর ও আমাকে জানায় ও আমার বন্ধুদের মিথ্যা বলেছে । আসলে ওর engagement হয়নি । বরং, বিয়ে হয়ে গেছে । শুনে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল । আমি কি করব ? কই যাব ? পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়লাম আমি ।
কাঁদতে কাঁদতে এক সময় চোখের পানিও শেষ করে ফেললাম । ক্যাম্পাসে তাও আমরা একসাথে থাকতাম । হয়ত এজন্য যে যতটুকু পারি একসাথে সময় কাটিয়ে নিতে । আর কয়েক মাস পরই graduation শেষ হয়ে যাবে । তখন আমি হয়ত চাকরির জন্য জুতার তলা ক্ষয় করব, আর সোহা বসে সেই f**king richman এর ঘরের শোভা বাড়াবে ।
সব শেষ হয়ে যাওয়ার পরও আমাদের ভালোবাসা কমেনি একটুও । আমার বন্ধুরা সবাই ওকে দোষ দিত । হ্যা, ওর দোষ ছিল, ও আমাকে বিয়ের আগে জানাতে পারত চাইলে । আর ও সবচেয়ে খারাপ কাজ করেছে বিয়ের পরও আমার সাথে সম্পর্ক রেখে । হয়ত, আমাকে সম্পূর্ণ ভাঙ্গার পরও গুড়ো করে পাউডার বানাবার শখ ছিল ।
আমিও ওর হাতে শেষবারের মত পাউডার হতেও রাজি ছিলাম । আস্তে আস্তে ওর সাথে কথাবার্তা কমে গেল । এক সময় বন্ধও হয়ে গেল ।
ফাইনাল শেষে চলে গেল সোহা । আর আমি হলাম দেবদাস ।
নিজেকে সামলাবার চেষ্টা করছিলাম । একটা কোম্পানিতে ঢুকলাম । এখনও সেখানেই আছি । ও ভাল আছে , সংসার করছে । এখন ভালই আছি ।
তবে আজও আকাশের দিকে তাকিয়ে ওকে খুঁজি । কোন উল্কাপিন্ড ঝরে পড়তে দেখলে আজও নিজের অজান্তেই ওর নামটাই মুখ দিয়ে বের হয়ে যায় । চাই যে ও যেখানেই থাকুক, ভাল থাকুক । তাও মনে বারবার প্রশ্ন জাগে “আমিই কেন? আমিই কেন?”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।