আমার আপন আরশী
এখানে আমার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে যারা এ্সেছে তারা সবাই ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন প্রদেশে চলে
গেছে। আর আমার সঙ্গে যারা আছে তারা সবাই হয় পশ্চিমা নয় ইন্দো, চীন,থাইল্যান্ড,মালায়শিয়া এবং জাপানীজ।
সুকর্ণ হাত্তা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট এ মালয়শিয়ান এয়ার যখন চাকা ছুঁলো এখানকার স্থানীয় সময় সকাল ১০ টা । খুব সুন্দর ঝকঝকে আবহাওয়া। আমি জাকার্তা(soekorno hatta bandara internasional) বিমান বন্দরে ইমিগ্রেশন শেষ করার পর বাইরে তাকিয়ে দেখি প্ল্যাকার্ডে আমার নাম লিখা,"Mohammed Nurun Nabi,Bangladesh কিছুটা হকচকিয়ে ঊঠলাম।
বিদেশের মাটিতে আমার নাম। পরে সামলে ঊঠে হাত নাড়াতেই দুজন লোক সামনে এসে দুহাত নমস্কারের ভঙ্গি করে "সালামত দাতাং ইন্দোনেশিয়া" বলে সালাম দিয়ে পরিচয় দিল। এদের মধ্যে একজন জাকার্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আরেকজন ছাত্র,ট্যূরিজমের উপর পড়ে এখন ইন্টার্ণশীপ করছে। দূজনেই বেশ হাসিখুশি,আমাদের খোঁজখবর নিতে লাগল। এরপরে গাড়িতে নিয়ে গেলো।
গাড়িতে বসেই আমার যাবতীয় কাগজপত্র দেখে একটা খাম হাতে ধরিয়ে দিলো। এখানে ১০০ ইউএস ডলার সম পরিমান রুপিয়াহ। এটা হলো আমার সেটলমেন্ট ফী। প্রায় দশ লক্ষ রুপিয়াহ। অনেক টাকা।
এখানে আমার কোনো খরচ নাই,সব খরচ ওদের সরকার বহন করবে। তারপরেও সেটলমেন্ট ফী দিলো,এখানে ১০০০ টাকার নীচে কোনো ব্যাংক নোট নাই। (বাংলাদেশের টাকার সঙ্গে সমমান আনতে হলে ৭ দিয়ে গুণ করে ১০০০ দিয়ে ভাগ করতে হবে। ১ ডলার সমান ১০০০০রুপিয়াহ ) সরকারী গাড়ীতে এস্কর্ট করে আমাদের আমাদের ট্যুরিজম বিভাগের বিভিন্ন হোটেল,এবং গেস্ট হাউজে তুললো। আমার হোটেলের নাম ছিলো এডুকেশনাল হোটেল অব জাকার্তা।
এখানে আমরা বেশ কয়েকদিন মজা করেই কাটালাম। আর আমাদের দেখভালের দ্বায়িত্বে ছিলো এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রিরা। আরো কয়েকদিন (আগষ্ট মাস প্রায় পুরোটা)বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ছাত্র ,শিক্ষক,মিডিয়া পার্সন,রেডিও টিভির শিল্পি কলাকুশলি আসবে। এবং হোটেলে এসেই আমরা টুইন শেয়ারড এসি রুম পেলাম। এখানে এক সমস্যা,আপনার রুমমেট যদি অন্য দেশের হয় এবং ইংরেজী না জানে,তাহলে বুঝুন অবস্থা।
আমরা সবাই যার যার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছিলাম। সবাই নিজ নিজ দেশের নাম, রাজধানি এবং কী জন্য বিখ্যাত এসব বলে নিজেদের তুলে ধরছিলাম। রাতে ডিনারের পর আমাদের এখান কার ঐতিহ্যবাহি নাচ গান এসব চলে মধ্য রাত পর্যন্ত। এভাবে কয়েকদিন চলল। এখান কার লোকালরা সবাই মুসলিম।
অল্প কিছু ক্যাথলিক নয় রেঁনেসা গোত্রের। তবে ধর্ম নিয়ে কোনো হাউকাউ বাড়াবাড়ি নাই। খাওয়া দাওয়া সব হালাল। তবে নাম না জানা থাকলে বিপদ আছে। যেমন আমি একবার খুব ঝাল মাংস খেয়ে অবস্থা খারাপ করে ফেলেছি।
আবার আরেকদিন চা দিতে বললাম (মনে ঢাকার শাহবাগের চা 'র জন্য একটু টক উঠেছিলো),আমাকে এনে দিলো বরফ মেশানো চা পুরা লম্বা এক গ্লাস (হাফ লিটার)। এরা কেউ ইংলিশ বুঝেনা,আর বলেওনা। সব জায়গায় গাইড মানে ঐসব ছাত্র ছাত্রীরা থাকলে সুবিধা হয়।
চলবে...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।