এই পৃথিবীতে শুধুমাত্র দুই রকমের মানুষ আছে। ভালো মানুষ যারা ভালো কাজ করে। আর খারাপ মানুষ যারা খারাপ কাজ করে। এটাই মানুষদের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য। আর কোন পার্থক্য নেই... আমি ভাল মানুষ...☺☺☺
বিসিআইসি কলেজে ভর্তি হবার পর থেকে খুব বোরিং লাগছিল।
মনে হচ্ছিল, কি একটা কলেজে ভর্তি হলাম। একটুখানি স্বাধীনতা নেই। ক্লাসেও মন বসছিল না। তাই ক্লাস চলাকালীন ক্লাসে মনোযোগ দেবার চাইতে পিছনের দিকের বেঞ্চগুলিতে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারাটাকেই বেশি পছন্দ করতাম। কিন্তু প্রথম টিউটোরিয়ালের প্রশ্ন নামক বোমাটিকে দেখে জ্ঞান হলো।
আরো বেশি জ্ঞান হলো যখন বোমাটি ফুটলো। অর্থাৎ অংক পরীক্ষার খাতা দিলো। রেজাল্ট কি করেছি তা নাহয় নাইবা বললাম। শুধু একটা কথাই বলবো, বিসিআইসি'র শিক্ষকরা খুব উদার। তাই পরীক্ষার খাতা উপরে নম্বর লেখার জায়গায় যাই দিলোনা কেন, ডাবল দিলো।
খাতা পাবার পর পিছনের বেঞ্চের সকল বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা দুই বন্ধু (তানভীর এবং আমি) এসে পড়লাম প্রথম বেঞ্চে এবং পূর্ণ মনোযোগ দিতে লাগলাম ক্লাসে। শিক্ষকদের প্রিয়ভাজন হয়ে যেতে সময় লাগলোনা।
কলেজে ভর্তি হবার পরে প্রথম সুখবরটা পেলাম আজকে। বারবার লোডশেডিং-এ জীববিজ্ঞান ম্যাডাম এবং আমরা সবাই সেদ্ধ হচ্ছিলাম। তখন সুখবরের প্রথম ক্লু-টা দিলো ম্যাডাম, "তোমাদের কষ্টের দিন বোধহয় এখন একটু লাঘব হবে।
প্রিন্সিপাল স্যার আজকে আমাদের নিয়ে একটা মিটিং ডেকেছিল। মিটিংয়ের বিষয়বস্তু ছিল জেনারেটর আর সৌরবিদ্যুৎ নিয়ে। মানে কো্নটা বেশি ভাল হয়। জেনারেটর বসাতে খরচ একটু কম হবে। তাই প্রিন্সিপালের মতটা ওদিকেই দেখলাম।
তবে তোমাদের কয়েকজন শিক্ষক খরচ একটু বেশি হলেও সৌরবিদ্যুতের প্রতি-ই বেশি আগ্রহ দেখালো। সিদ্ধান্ত যাই হোকনা কেন তোমাদের জন্য ভাল হবে। "
পরের ক্লাস ছিল সেলিম স্যারের পদার্থবিজ্ঞান। তিনি ক্লাসে এসেই চোখ বন্ধ করে জোরে একটা নিশ্বাস নিলেন। তারপরে চোখ খুলে আমাদের মনের কথাটাই বললেন, "এই গরমে ক্লাস করা অসম্ভব!" আমরা সবাই তার সাথে পূর্ণ একমত প্রকাশ করলাম।
তারপরে দিলেন সুখবরটা, "এই শুনো, তোমাদের জন্য একটা সুখবর আছে। বিসিআইসি কলেজে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সৌরপ্লেট বসাতে খরচ পড়বে এক কোটি টাকা। এবং এটি হবে দেশের সর্ববৃহৎ সোলার প্লেট। সোলার প্লেট বসানোর কাজ শেষ হলেই পুরো কলেজে এসি লাগানো হবে।
" প্রথম বেঞ্চে বসায় প্রথম প্রশ্ন এবং খোচাটা আমিই দিলাম, "এতো বড় সোলার প্লেট বসাবেন কই?" স্যার বললেন, "মাঠের উপরে বসিয়ে দেবো..." এইবার আমার একটু মজা করেই জিজ্ঞেস করলাম, "স্যার, মাঠে প্লেট বসালে আমরা খেলবো কোথায়?" স্যার বললেন, "এই, তোমাকেতো কখনো মাঠে খেলতে দেখিনাই। শুধু তুমি কেন, বাইরে যে রোদ! তাতে গত এক মাসে একজনকেও খেলতে দেখিনাই আমি। তোমরাতো মাঠের দিকে পাও ফালাও না। " আমি চুপ করে গেলাম।
দেশের সর্ববৃহৎ হবে কিনা জানিনা।
স্যার হয়তোবা মজা করেই বলেছেন। তবে যাই হোক হবে কিছু একটা। যাই হোকনা কেন, আমাদের জন্য ভালই হবে। দেশের জন্যেও ভাল হবে। অন্তত মিরপুরের একটা কলেজে সৌরবিদ্যুৎ আসলে পুরো এলাকায় এর প্রভাব পড়ার কথা।
বিসিআইসি কলেজ যে বিদ্যুৎটা ব্যবহার করতো সেটা হয়তো সাধারণ জনগন পাবে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা একটু হলেও কমবে। এখন আশা করছি, এটা শুধুমাত্র সুখবরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। বাস্তবিক অর্থেই সৌরবিদ্যুৎ আসবে বিসিআইসি'তে। শুধু বিসিআইসি না, আমি চাই দেশের সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সৌরবিদ্যুৎ আসুক।
শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘব হোক। । ।
...পানি ও বিদ্যুতের অপচয় রোধে এগিয়ে আসুন...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।