আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজমেরীর জন্য আরো এক পা, শেষ সীমা সামনেই

কুয়াশা

হয়তো অনেকে এর মাঝে ভুলেই গেছেন আমাদের ছোট বোনটির কথা। পার হয়ে গেছে আরো কত দিন, কতো রাত। কত স্বপ্নের জাল বুনে ছুটে চলেছি আমরা প্রতিনিয়ত একই পথ ধরে নিজেদের কর্মব্যস্ততার ঘেরাটোপে। আর যারা জানেন না তাদের জন্য এ কাহিনী এক বিষ্ময়ের। এক বিজয়ের কাহিনী।

মানুষের জন্য মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এ এক প্রায় অসম্ভাবী আলোড়নের কাহিনী, যার ফলশ্রতিতে আজো আমরা আমাদের পাশে খুঁজে পাই আমাদেরই প্রিয় ছোট বোনটিকে। যার মুখ জুড়ে আজ শুধু হাসি, আনন্দ আর উল্লাস। এ আনন্দ না হেরে যাবার, এ হাসি মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসার নিদর্শন, এ উল্লাস তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরুপ, যারা বিভিন্ন ভাবে পাশে ছিলেন বোনটির বিপদে। সেই ফেব্রুয়ারী মাসের কথা, আমার বন্ধুর বোনকে টাকার অভাবে চিকিৎসা না করাতে পারার আকুতিতে ছুটে আসি আমি ব্লগারদের কাছে এক মানবিক আবেদন নিয়ে। নিজেরাও করি ভার্সিটিতে এক কনসার্টের আয়োজন।

কতটুকু সাড়া পাবো তা নিয়ে সন্দেহ ছিলো আমার। কিন্তু সব ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে আমাদের বোনটির পাশে এসে দাঁড়ালেন সব মতামতের সব সারির ব্লগাররা। আস্তে আস্তে আমরা বোনটিকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে হাঁটিয়ে নিয়ে এলাম এক পা এক পা করে। কি করেনি ব্লগাররা তাঁর জন্য? বইমেলাতে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে মানুষের কাছে সাহায্য ভিক্ষা চাওয়া থেকে শুরু করে বিদেশ থেকে ফোন দিয়ে নিজের অক্ষমতার জন্য কান্নায় ভেঙ্গে পড়তেও দেখেছি। শুধু টাকা দিয়ে সাহায্য নয়, মানসিক ও শারিরীক দুভাবেই পাশে থেকে নিরন্তর সহযোগীতা করে গেছে সবাই।

আমার ব্লগের বইমেলার স্টল থেকেও বক্সের মাধ্যেমে তোলা হয়েছে টাকা। ধীরে ধীরে বোনটি প্রায় সুস্থ হয়ে ওঠে। প্রাথমিক ভাবে যে হিসাব করেছিলাম আমরা, সে হিসাব ছাড়িয়ে আরো বেশি টাকার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তখনই পড়ি আমরা বিপদে। অপারেশন করতে কিডনী রোগীর বেশি খরচ লাগে না।

অপারেশনের পর নিয়মিত ছয়মাসের ওষুধ খরচ ও চেকআপ খরচটাই এক বিশাল ধাক্কা রোগীর পরিবারের জন্য। মাসে প্রায় ৩০ থেকে পয়ত্রিশ হাজার টাকার ওষুধই লাগে, চেকআপ খরচ তো বাদই রইলো। ব্লগারদের বদান্যতায় সেটা অনেকখানি কাটিয়ে ওঠা গেলেও একটা ডেড ইস্যু হওয়াতে টাকার ফ্লো কমে যায়। আজমেরীর তখন বাকি আছে শুধু ভিটেমাটির জমিটি। আমি আশ্বাস দিয়েছিলাম, বলেছিলাম বিক্রি করা লাগবে না।

কোন এক মাধ্যম থেকে বড় অংকের একটা টাকা পাওয়ার কথাও ছিলো, কিন্তু হলোনা। আমি অক্ষমের মতো বিভিন্ন জনকে ফোন করে টাকা চেয়েছি, কিন্তু সমাধান মেলেনি। পরে আমাকে প্রায় না জানিয়েই বিক্রি করতে বাধ্য হয় তারা ঐ শেষ ভিটেমাটিটুকুও। আশা, আমার বন্ধুটি ইন্জিনিয়ারিং পাশ করলে চাকরী করে এ বিপদ থেকে বের হয়ে আসবে। তার শেষ সেমিস্টার চলে ভার্সিটিতে।

এতোদিন ঐ জমি বিক্রির টাকাতেই চলেছে আজমেরীর চিকিৎসা, চেকআপ, ওষুধের খরচ। এরই মাঝে দেখা দিয়েছে এক জটিলতা। ক্রমাগত রক্তপাত হচ্ছে। বন্ধু প্রায় পাগলপারা হয়ে যায়, শেষ পর্যন্ত কি বোনটিকে সুস্থ করেও হারাতে হবে? শুরু হয় দৌড়াদৌড়ি আর ঢাকা থেকে একবার সিরাজগন্জ আরেকবার ঢাকা নেয়া। ঢাকাতে যে রাখার সামর্থ ওদের নাই।

এ সমসাময়িক জটিলতার পাল্লায় জমি বেচার টাকাটিও হাত থেকে বেরিয়ে গেলো। শুন্য হয়ে যায় বন্ধুটির দুচোখের দৃষ্টি। মরিয়ার মতো আমাকেই আবার ফোন করে বসে। আমি কাটানোর চেষ্টা করি। কারণ আমাকে যারা ব্লগিং লাইফে দেখতে পারেনা তারা বিষোদগার করে আমাকে যথেষ্ট হেনস্থা করেছে এই ব্যাপারে।

তবুও বন্ধুর কান্নার কাছে পরাজিত হই। আবার হাত পাততে আসি আপনাদের কাছে। ৫ মাসের চিকিৎসা শেষ, ডাক্তার বলেছে আর একমাস এই ওষুধ খেয়ে যেতে হবে। তারপর ওষুধ চেন্জ করে কমিয়ে দেবেন। এই একমাসের জন্য আজমেরী আজ তাকিয়ে সেই ভাইদের দিকে, যারা তাকে তুলে এনেছিলো হতাশার অতল গহ্বর থেকে আলোর দিকে।

গত কয়েকদিন আমি ব্যক্তিগত ভাবে ফোনে চেষ্টা করেছি। তাতে সামান্য কিছু এসে জমা হয়েছে আমার হাতে। মহুয়া রশীদ (কান্ট্রি ডিরেকটর, এসিসিএ বাংলাদেশ)- ১০০০ সিস্টেম ইন্জিনিয়ার, গ্রামীনফোন- ১০০০ ব্লগার বেলের কাঁটার মাধ্যমে আগে পেয়েছিলাম- ৩০০০ (আপডেট দেয়া হয়েছিলো না) ফোন করতে পারেন- ০১৯১৩২২১৪৪৮ ০১৬৭৪৭৭৪৬৩৩ অথবা- নুর মোহাম্মাদ ( লিখন) [বড় ভাই] ০১৭১৭৭১২৮৬০ সঞ্চয়ী হিসাব নং- ৩৪১১৫৯৩১ জনতা ব্যাংক ফার্মগেট কর্পোরেট শাখা ডাচবাংলা ব্যাংক MD MAHMUDUL HAQUE MUNSHI 114.101.78662 মহাখালী শাখা ব্লগার স্বপ্নকথক ব্যান থাকায় তাঁর অনুরোধে এই পোস্ট আমি দিলাম

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।