লেখক/কবি
Wreckage of the army helicopter that crashed at Rouha in Kalihati upazila of Tangail district yesterday morning. Inset, deceased Maj Gen Rafiqul Islam, left, and pilot Lt Col MD Shahidul Islam. Photo: SK Enamul Haq/ispr
গতকাল ৩ আগষ্ট জ্বরজ্বরভাব! আমার এক ডাক্তার বন্ধু ফোন দিলো রাতের দিকে। শরীরের এমন অবস্হার কথা বলেও পার পাওয়া গেলোনা। ওর কথা হাটলে এসব থাকবে না। আমিও বের হলাম। হাটলাম আবার মধ্যে মধ্যে দৌড়ালাম।
সব শেষে ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসছি দুই বন্ধু। ক্যান্টনমেন্ট ওয়ার্কশপ ছুই ছুই। হঠাৎ পেছন থেকে একটা হাত কয়েকটা মৃদু চাপর দিলো। আমি কিছু বুঝে উঠতে না পেরে এক পাসে সরে এলাম। একটা ঘামেভেজা লোক আমাদের সামনে দিয়ে দৌড়ে গেলো।
আমি সরি বল্লাম। কেন জানিনা ভদ্রতা বসত হবে হয়তো। সমান্য দূরে গিয়ে ফিরে আসলো লোকটি, বল্লো আপনি কোথায় থাকেন (খুব উদ্ধত ভঙ্গিতে: গত বিশ বা তারো বেশী সময়ে এই রাস্তা বা তার আসপাশেএমন কথা কেউ বলেনি আমাকে), তার পরও শান্তভাবে উত্তর দিলাম। এবার লোকটি বল্লো সিভিলিয়ানদের জগিং এর জন্য রাস্তার ওপরপাশ, তাও বল্লো চোখ গরম করে। তার পরও শান্তভাবেই বল্লাম ঠিক আছে ভাই।
কিন্তু আদৌ তাকে ডিফেন্সর লোক বলে মনে হলো না। এর পরপরই লোকটি প্রায় আধাঁরে মিলিয়ে গেলো কথা বাড়াবার আর সুজোগই পেলাম না।
ঠিক পরের দিন একই সময় ফিরার পথে মনে মনে........ পেয়েও গেলাম। এবার পথের আরো একটু আগে, আমাদের দেখেই হাত উচিয়ে দাড় করিয়ে সেই একই কথা। আমার বন্ধু বল্লো ভাই সবই মানলাম সিভিল ড্রেসে কত জনইতো কত কিছু বলে যদি পরিচয়টা একটু দিতেন।
আর এই নিয়মওতো আমরা আপনার কাছে প্রথম শুনলাম। আর্মির কারো কাছ থেকে; মানে ড্রেস পরা কারো কাছ থেকে যদি এব্যপারে জানা যেতো। আমি একটু কমিয়ে বল্লাম অন্তত নামটা যদি বলতেন ? ফল যা হলো উল্টো ! তেলে বেগুনে তেতে উঠলেন লোকটি। বল্লেন আমার পরিচয় সামনে আসলে এমপিরাই (মিলিটারি পুলিশ) দেবে। আমার বন্ধুটি তার ডাক্তার পরিচয় দেবার পর (আমি ডাক্তার জহির কচুক্ষত বাজারে বসি) বল্লো সো হোয়াট আই ডোন্ট কেয়ার।
এই পরিচয় আমার নিজের পরিচয়ের কাছে কিছুই না। এই বলে উল্টোদিকে দৌড়ে সে চলে গেল আমরাও ফিরছি পিছু পিছু, ওয়ার্কশপ এগিয়ে আসছে, বাস স্টেন্ড পার হচ্ছি এমন সময় এক জন এমপি ডাক দিলো, হাতো দেখালো ইসারায়। আমাদের বল্লন আপনাদের নামে আমার কাছে অভিযোগ আছে। এতটুকু বলে আমার দিকে দেখিয়ে বল্লো আপনার নামে বেশী অভিযোগ আছে। আমরা অভিযোগকারির পরিচয় যানতে চাইলাম।
কিছুই বলতে রাজিনা হয়ে শুধু বল্লেন উনার বাবা একজন আর্মি জেনারেল ছিলেন। ২০০৯এ টাঙ্গাইলে হেলিকপ্টার দূর্ঘটনায় মারা গেছেন।
আমরা সমবেদনা জানিয়ে পরিচয় দিয়ে চলে আসার সময় উনার নাম বিনয়ের সাথে জানতে চেয়েছি। বলেন নিষেধের কথা। আমরা তার সঙ্গে আরো কিছু ক্ষণ কথা বলে চলে আসি।
সেই থেকে ভাবছি দেশেতো এখনো বিরাজমান কত মন্ত্রী, উপমন্তী, সচিব, জেনারেল আছেন, আছেন তাদের কতশত যে আত্নীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব........এত মানুষের ভীরে আমরা কোথা দিয়ে হাটবো ? এখন মনে হচ্ছে ! মনে হচ্ছে আগেই এমন সব নিয়ম-কানুন জানতে চাওয়া ভালো, নাহলে কখনকে আবার কোথায় আমাদের নিরহ পথচারির নামে কিযেনো কোন সাংঘাতিক অভিযোগ করেবসে।
ক্যন্টনমেন্টের ভেতর দিয়ে রাস্তার এপার ওপার তথাকথিত এই সামরিক ধ্বজ্বাধারি এবং সিভিলিয়ান বিভাজন অনেকটা বর্ণবাদের মতই।
কিন্তু এমন নিয়মের কথা কেউ আমাদের আগে বলেনি কেন। দায়িত্বরত এমপিরাও কখনই বলেনি, শুনতে হলো মরহুম জেনারেলের উদ্ধত সেই ছেলের কাছ থেকে। আগে জানলে হয়তো এমন পরিস্থিতিতে পরতে হতো না।
এর জন্যকে দায়ি ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।