আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এডহক চিকিৎসক নিয়োগে সরকারের সন্দেহজনক অতি আগ্রহ কেন?!

বলতে চাই..জানাতে চাই...

বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কয়েক মাস আগে জাতীয় সংসদে স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ প্রসংগে বক্তব্য দিতে গিয়ে সরকারী চাকুরীতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অপূরনীয়/শূ–ন্য পদ গুলো মেধা তালিকার ভিত্তিতে পূ–রণ করার জন্য বিগত সরকারের কড়া সমালোচনা করেছিলেন এবং সংগে সংগে মাননীয় স্পীকার তাঁর বক্তব্যে সমর্থন দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অপূরনীয়/শূ–ন্য পদগুলো সংরক্ষনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। মহান সংসদে দুইজন গুরুত্ত্বপূর্ন ব্যাক্তির এমন বক্তব্যের পর সারা দেশ ব্যাপী স্বাস্থ্য সহকারী পদ নিয়োগ নিয়ে তুঘলকি কান্ড ঘটেছিল, তা আমাদের সবার জানা। সারা দেশে একযোগে সিভিল সার্জন অফিস ভাংচুর, মৌখিক পরীক্ষা গ্রহনে বাঁধা সহ অনেক জায়গায় সিভিল সার্জনকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধী আখ্যায়িত করে সরকারী দলের অংগসংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও চাকুরী প্রার্থীরা মিছিল, মিটিং পর্যন্ত করেছিলেন এমনকি স্বাস্থ্য মন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টাও এ বিষোদগার থেকে রেহাই পাননি। মূলতঃ এ উপলব্ধি থেকেই কিনা জানিনা পরবর্তীতে মন্ত্রীপরিষদ '’মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষন'’ নীতিমালা গ্রহন করলেন। এ নীতিমালার আলোকেই পরবর্তীতে এডহক ভিত্তিতে তিন সহস্রাধিক চিকিৎসক (সহকারী সার্জন) নিয়োগ করা হয় যাতে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটায় ৫৮২ টি অপূ–রণকৃত শূন্য পদ সংরক্ষন করা হয় এবং এর প্রায় এক সপ্তাহ পর ২৮ তম বিসিএস এর চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয় তাতে প্রাধিকার কোটার বিপরীতে অপূরণকৃত সংরক্ষিত পদের সংখ্যা ৮১৩ (মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ৬২৮ মহিলা ৪৫ উপজাতীয় ১৪০)।

বলা বাহুল্য এ নীতিমালার আলোকে ২৮ তম বিসিএস -এ চিকিৎসক (সহকারী সার্জন) পদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অপূরণকৃত পদ সংরক্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, যে মন্ত্রীপরিষদ ’মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ’ নীতিমালা গ্রহন করে মহৎ কাজ করেছিলেন সেই মন্ত্রীপরিষদ আবার বিশেষ কারণে এবং সংগত কারনেই সন্দেহজনক ভাবে গত ১২ জুলাই কেবিনেট মিটিং -এ এডহক ভিত্তিতে ৫৮২ টি শ–ন্য পদ পূরনের জন্য ’মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ’ নীতিমালা শিথিল করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছেন এবং মেধা তালিকা থেকে প্রার্থী নিয়ে এসব পদ পুরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই এডহক ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগে সরকারের এই অতি আগ্রহ যথেষ্ট সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের অভাব এ কথা যেমনি সত্য তেমনি যোগ্যতর চিক্যিসক নিয়োগ দিতে হবে এটাও তেমন সত্য। এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পদ্ধতি এবং নিয়োগপ্রাপ্ত অনেক চিকিৎসক -এর মান নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

সম্প্রতি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এডহক পদ্ধতিতে নিয়োগপ্রাপ্ত এক ভুয়া সার্টিফিকেটধারী চিকিৎসক নিয়োগ-এর সংবাদ এই নিয়োগের চিত্র অনেকখানিই স্পষ্ট করে তোলে। তাই প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ন মেধাবী চিকিৎসকদের নিয়োগে আগ্রহ না দেখিয়ে ডিগবাজী দিয়ে নীতিমালা শিথিল করে এডহক ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগে সরকারের এত আগ্রহ কেন? সরকারের চিকিৎসক নিয়োগের এত প্রয়োজন থাকলে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমেও চিকিৎসক নিয়োগে ’'মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষন নীতিমালা' শিথিল করা হোক। আর এই শৈথিল্য যদি কোটা পদ্ধতি সংরক্ষন নিয়ে বাস্তবতার নিরিখে সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয়ের লক্ষণ হয় তাহলে তা সবধরনের পদ এবং সব ধরনের নিয়োগ পরীক্ষার জন্য শিথিল করা হবেনা কেন? মেধাবীদের উপর ভরসা রাখতে বা মেধাবীদের নিয়োগ দিতে এই দৈন্যতাই বা আমাদের কতদিন সইতে হবে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।