পহেলা ভাদ্র থেকে ১৩ ভাদ্র পর্যন্ত বলা হয়ে থাকে "তেরিয়া", আবহমান কাল থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলের গ্রাম বাংলায় পহেলা ভাদ্র থেকে ১৩ ভাদ্র পর্যন্ত নব বধূদের পিতৃ গৃহে থাকার উৎসব কেই মুলত "তেরিয়া" উৎসব বলে। শ্রাবন মাসের শেষ সপ্তাহে তাই নব বধূকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তার পিতৃ গৃহে। ভাদ্র মাসে ১৩ দিন পর নব বধূ ফিরিয়ে আসে তার স্বামী গৃহে। তেরিয়ার” সময় কাল পর্যন্ত বিয়ে সাদীর আয়োজন থেকে বিরত থাকে গ্রাম বাংলার মানুষ। হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায় এখনও পুরা পুরি ভাবে তেরিয়াকে মান্য করে চলছে।
তবে কবে নাগাদ তেরিয়ার উদ্ভব হয় তা জানা যায়নি। কেনই বা এ প্রথা পালন করা হয় তারও ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। দেশের উত্তরাঞ্চলে তেরিয়া এক ঊৎসবের রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। তেরিয়ার নিয়ম কানুন শুধু নব বধূর জন্য প্রযোজ্য। আবার তেরিয়াকে সামনে রেখে গ্রাম বাংলায় ইদ পর্বের মত চলে জামাই আপ্যায়ন।
শ্রাবনের শেষ সপ্তাহ থেকে নব বধূদের পিতৃ গৃহে যাওয়ার ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা যায় । বধূদের পিতারা গরুর গাড়ি বা সাধ্য অনুযায়ী অন্য কোনো বাহনে পাঠিয়ে কন্যা এবং জামাই কে নিজ বাড়িতে আনে । কন্যা এবং জামাইরা দই-মিষ্টি আর রকমারি ফলফলাদির সমারোহে নববিবাহিত মেয়েরা সেজেগুজে আসে বাপের বাড়ি। এ উৎসবে মেয়ের বাবা মেয়ে ও জামাইকে নতুন কাপড়-চোপড়সহ নানা উপঢৌকন দিয়ে থাকে। মুলত এই সময় শাশুড়িদের নব বধূর মুখ এবং পা দর্শন করা যাবেনা।
দাম্পত্য জীবনের অমঙ্গল কাটাতে মেয়েরা "তেরিয়া " করতে বাপের বাড়িতে আসে। সেখানে থেকে অমঙ্গল কাটিয়ে আবার এসে সংসারে কাজ করে। কোনো সংসারে অনিবার্য কারণে যদি নববধূর থাকা আবশ্যক হয় তাহলে এক্ষেত্রে শাশুড়িকেই অন্য কোথাও চলে যেতে হয়। কোনো বাবা-মা বা শ্বশুর-শাশুড়ি সন্তানের অমঙ্গল চান না। তাই এ এলাকার সবাই সাগ্রহে পালন করেন তেরিয়া উৎসব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।