আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিল্পসম্পর্কবিহীন শিল্পায়ন: গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতা

রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন

গতকাল গার্মেন্টস সেক্টরের জন্য ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গার্মেন্টস সেক্টরের জন্য ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করেছে। ন্যূনতম মজুরি হিসাবে ৭ম গ্রেডের শ্রমিকদের বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০০০ টাকা। কিন্তু শিক্ষানবিশ শ্রমিকদের বেতন ধরা হয়েছে আড়াই হাজার টাকা। ন্যূনতম মজুরি বোর্ড ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে চতুরতার আশ্রয় নিয়েছেন। ন্যূনতম মজুরি নির্ধারনের মাধ্যমে একজন অদক্ষ শ্রমিকের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।

সেই অর্থে শিক্ষানবিশদের যে বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটাই হলো গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি। অথচ বলা হচ্ছে, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৩০০০ টাকা। এখানে কৌশলে সত্যকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় বিষয় হলো, নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি কাঠামোটি বাস্তবায়ন করা হবে আগামী ১লা নভেম্বর হতে। অতীতে সরকার যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে তা পরবর্তী দিবস হতেই কার্যকর করার নির্দেশ প্রদান করেছে।

কিন্তু গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেলায় তা করা হয়নি। সবার মনে রাখা উচিত, আগামী মাসে ঈদ এবং ঈদকে কেন্দ্র করে গার্মেন্টস সেক্টরে প্রতিবছর কিছু না কিছু ঘটনা-দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এবার ন্যূনতম মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হলো ঈদের আগে, যা ঈদের পরে বাস্তবায়ন করা হবে। ঘটনাটি গার্মেন্টস সেক্টরে কি প্রভাব সৃষ্টি করবে, তা ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের ভাবনায় আসা উচিত ছিল। কিন্তু তারা শ্রমিকের দিকগুলোকে ভাবনায় নেয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি।

গার্মেন্টস মালিকরা শিল্পউদ্যোগী না হয়ে একেকজন সামন্ততান্ত্রিক মানসিকতাসম্পন্ন লুম্ফেন এ পরিণত হয়েছেন। কিন্তু সরকার এই লুম্ফেনগিরিকে কেন প্রশ্রয় দিচ্ছেন? দেশে শিল্প বিকাশের অন্যতম শর্ত হলো শিল্প সম্পর্ক। কিন্তু আমাদের দেশের কোন শিল্পমালিক কিংবা সরকার কখনোই শিল্পসম্পর্ককে আমলে নিয়ে আসেননি। দেশের শিল্পসম্পর্ক ইন্সটিটিউট এবং প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটগুলো অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে, সেগুলোর অকার্যকর ব্যবহার দেখেই বোঝা যায়, সরকার দেশে শিল্পায়নের চিন্তা করছেন অনভিজ্ঞতা নিয়ে। শিল্পসম্পর্ক ছাড়া শিল্পায়ন সম্ভব নয়, একথাটি এখনো কেউ উপলব্ধিতে নিয়ে আসতে পারেন নি।

মজুরি কাঠামো নির্ধারণ করেই তা ঘোষণা করলেন শ্রমমন্ত্রী। একই সাথে উনারা গার্মেন্টস সেক্টরে যাতে নৈরাজ্য তৈরী না হয়, সেইজন্য সবাইকে নির্দেশ দিলেন। কিন্তু তারা লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের শক্তিকে আমলে নেননি, অবহেলার চোখে দেখেছেন। গার্মেন্টস সেক্টরের ঘোষিত মজুরি কাঠামোর প্রতিবাদে আজ সকালে নাকি শ্রমিকরা মহাখালী তেজগাও এলাকায় অবরোধ করে ভাংচুর শুরু করেছে। অবস্থাটি সৃষ্টি করার জন্য কারা দায়ী? সরকার-মালিকগণকে তা ভেবে দেখতে হবে।

নাকি তারা আবারো ষড়যন্ত্র খুজে বেড়াবেন বরাবরের মতো। নিজের তৈরী করা সমস্যার দায়ভার অন্যের ঘাড়ে না চাপিয়ে সমস্ত পরিস্থিতি বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন। মনেরাখা প্রয়োজন, লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের শক্তিকে পুলিশ দিয়ে কিংবা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে দমন করা সম্ভব হবে না। মনোযোগি হতে হবে, শিল্পসম্পর্ক স্থাপনে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।