লাইলী-মজনুর প্রেম সফল হলো না। রাজপুত্রের সাথে বিয়ে হয়ে গেল লাইলীর। কিন্তু লাইলীর মন পড়ে রইলো মজনুর চিন্তায়। তার সংসারে কোন কিছুর অভাব নেই, শুধু সুখ ছাড়া।
এদিকে লাইলীর বিরহে মজনু পুরো পাগল হয়ে গেল।
বাস করতে লাগলো বনে বাঁদাড়ে। দিনরাত শুধু লাইলী লাইলী জপ করে সময় কাটতে লাগলো। বনের পাখি এ খবর লাইলীর কানে পৌঁছে দিলো। মজনুর জন্যে লাইলীর ভালবাসা আগের মতোই ছিলো। সে তার ভৃত্যদের আদেশ করলো, “এ রাজ্যের শেষ প্রান্তে যেখানে গভীর বন, সে বনের গভীরে গিয়ে দেখবে এক পাগল লাইলী লাইলী জপ করছে।
রাজ্যের গোশালার গাভী থেকে দুধ দোহন করে তাকে প্রতিদিন একবাটি দুধ দিয়ে আসবে। ” ভৃত্যরা নিয়মিত তার আদেশ পালন করতে লাগলো।
মজনুর প্রতি লাইলীর এ উপহারের কথা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়লো। জেনে গেল সুযোগসন্ধানী লোকেরাও। তারা জানে মজনুর জন্যে প্রতিদিন রাজবাড়ির ভৃত্যরা দুধ নিয়ে আসে।
সেই দুধ খাওয়ার লোভে তারা দলে দলে পাগলের ছদ্মবেশ ধারণ করলো। বনের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়লো এবং লাইলী লাইলী জপ করতে লাগলো। লাইলীর ভৃত্যরা তো এবার মহা মুশকিলে পড়লো। সব মজনুর বেশভূষা একই ধরণের। কে আসল মজনু তারা চিনতে পারলো না।
কয়জন মজনুকে তারা দুধ খাওয়াবে? অনেক ভেবেচিন্তে তারা একবাটি দুধই সকল মজনুকে ভাগ করে দিতে লাগলো। কিছুদিন পরে ভয়ে ভয়ে তারা লাইলীকে পুরো ঘটনা খুলে বলল। লাইলীও চিন্তায় পড়ে গেল কি করবে ভেবে। তার তো রাজবাড়ির বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ।
অনেক ভেবে লাইলী ভৃত্যদের বলল, “প্রত্যেক মজনুকে গিয়ে বলবে, আমি তার মাংস খেতে চাই।
যে দিতে চাইবে, তাকে রাজদরবারে নিয়ে আসবে। ” ভৃত্যরা একে একে সব মজনুকে বলতে লাগলো যে লাইলী তার মাংস খেতে চেয়েছে। এ কথা শুনে সবাই পালাল, শুধু একজন ছাড়া। উল্টো সে জানতে চাইলো, লাইলী তার শরীরের কোন অংশের মাংস খেতে চেয়েছে? সে সেখান থেকেই কেটে দিতে রাজি। ভৃত্যরা তাকে ধরে রাজদরবারে নিয়ে এলো।
লাইলী তাকে দেখে চিনতে পারলো, এই তার ভালবাসার মজনু। ভৃত্যরাও বুঝলো, আর সবাই ছিল দুধ খাওয়া মজনু। লাইলী ভৃত্যদের আদেশ করলো, দুধ খাওয়া মজনুদের নয়, তার ভালবাসার মজনুকে যেন তারা আগের মতোই প্রতিদিন একবাটি করে দুধ দিয়ে আসে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।