আমার পোস্ট গুলো পড়ার অনুরোধ রইলো বছরের কিছু কিছু সময় আসে যখন সর্দি-জ্বর বেড়ে যায়। বৈশাখের এ সময়টাতে প্রতিদিন বেশকিছু রোগী সর্দি-জ্বর নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে প্রচণ্ড জ্বর আসছে, কিন্তু শুধু প্যারাসিটামল সেবনে দু-একদিন পর জ্বর আপনাআপনি ছেড়ে যাচ্ছে। কারও কারও ক্ষেত্রে বেশ কিছুদিন জ্বর থাকছে। এ সময়ের বেশিরভাগ জ্বরই ভাইরাল জ্বর, তাই দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
এক সপ্তাহের মধ্যে এ জ্বর ভালো হয়ে যায়। অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের প্রয়োজন পড়ে না বললেই চলে। তাই নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তবে জ্বর নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে আপনাকে। এ বিষয় নিয়েই আজকের আলোচনা।
জ্বর কমাতে ভালো কাজ করে স্পঞ্জিং। ১০১০ ফারেনহাইট বা তার বেশি হলে রোগীর পুরো শরীর স্পঞ্জিং করিয়ে দিতে হবে। প্রায় ১০ মিনিট অবিরাম স্পঞ্জিং করলে তাপমাত্রা ১-২০ ফারেনহাইট নামানো সম্ভব। স্পঞ্জিং করার সময় হালকা করে ফ্যান ছেড়ে রাখতে হবে। তবে রোগীর শরীরে সরাসরি বাতাস না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
একটি ছোট গামছা বা রুমাল পানিতে ভিজিয়ে শরীর ভিজিয়ে দিতে হবে, অপর একটি শুকনো ছোট গামছা দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। মনে রাখবেন, যে কোনো জ্বরেই স্পঞ্জিং উপকারী এবং এভাবে প্রয়োজনে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই করা যায়। ঠাণ্ডা লাগলে পানির পরিবর্তে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন।
জ্বর ১০২০ ফারেনহাইট বা তার বেশি হলে সিরিয়াসলি নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে রোগীর খিঁচুনি এবং রোগী জ্ঞানও হারাতে পারে।
বিশেষ করে পাঁচ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের এটি বেশি হয়। খিঁচুনির ইতিহাস থাকলে রোগীকে চিকিৎসকের নির্দেশে ডায়াজিপাম দিতে হয়। জ্বর বেশি বা কম মাত্রায় থাকুক না কেন গোসল করতে নিষেধ নেই। তবে নিউমোনিয়া বা শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ থাকলে গোসল না করানোই ভালো। এমন বেশি জ্বরে মলদ্বারে প্যারাসিটামল সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হবে।
জ্বর ১০০০ ফারেনহাইট বা তার বেশি হলে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট ব্যবহার করতে হবে। দিনে সাধারণত চারবার ট্যাবলেট ব্যবহার করা যায়। তবে প্যারাসিটামল তো অ্যান্টিবায়োটিকের মতো নয় যে কোর্স অনুযায়ী খেতে হবে। জ্বর থাকলেই তা ব্যবহার করা যায়। তবে কোনো অবস্থাতেই ২০টির বেশি ট্যাবলেট বা সাপোজিটরি ব্যবহার করবেন না।
এতে লিভার ফেইলুর হতে পারে। কোনো অবস্থাতেই জ্বর নামানোর জন্য এনএসএআইডি যেমন ডাইক্লোফেনাক, ইনডোমেথাসিন, নিমেসুলেমাইড, এসপিরিন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না। তাতে জটিলতা বেড়ে রোগীর মৃত্যুঝুঁকি বাড়ে। ১০৩০ ফারেনহাইট বা তার বেশি জ্বর টানা তিনদিন থাকলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের নির্দেশমতো অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন, নিজের খেয়াল-খুশিমতো নয়।
যে কোনো জ্বরে পানীয় খাওয়ানোর প্রতি জোর দেওয়া হয়, এতে রোগীর শরীরে হাইড্রেশন হয় এবং দেহের তাপমাত্রা বের হয়ে যেতে সাহায্য করে। পানি, ডাবের পানি, ওরস্যালাইন, ডালের পানি, ফলের রস এ ক্ষেত্রে উপকারী। স্যুপ, দুধ, হরলিকসও খাওয়া যায়। এ ছাড়া অন্যান্য পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
এ সময় মুখ তিতা হয়ে যায় বলে ভিটামিন-সি বা টকজাতীয় ফল খাওয়া প্রয়োজন।
এতে করে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
তবে জ্বরের সঙ্গে কাশি থাকলে তা যন্ত্রণা বাড়ায়। এটি সহজেই সারতে চাচ্ছে না। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। এটা ভালো হতে বেশ কিছুদিন সময় নিতে পারে।
কুসুম গরম পানিতে আদার রস, লেবুর রস, মধু, তুলসী পাতার রস, লং মিশিয়ে দিনে ৩-৪ বার পান করলে আরাম পাবেন। কাশির সঙ্গে যদি হলুদ বা লালচে কফ হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে অবশ্যই অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে।
সংবাদের সূত্র এই লিংকে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।