পৃথিবীর কাছে তুমি হয়তো কিছুই নও, কিন্তু কারও কাছে তুমিই তার পৃথিবী"
মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম
চলার পথে বাঘের সাথে
মিলল এসে শিয়াল ,
‘কিরে ভাগনে ভুলেই গেলি
রাখিস নাতো খেয়াল‘ ,
বাঘের কথায় চমকে শিয়াল
বলল হেসে মামা,
ব্যস্ত আছি বাঙ্গির চরে-
বিচার আচার মামলা-মোকদ্দমা ।
আমার গলায় হাড় বিঁধেছে
কে বা রাখে খেয়াল,
পুচ্কে গাধা খেতে গিয়ে
আমার সে কী হাল !
গলার ব্যথায় নাওয়া খাওয়া
হয় না দু‘দিন ধরে
ক্ষুধার জ্বালায় পেটটা আমার
যাচ্ছে খাঁ খাঁ পুড়ে।
কার কাছে কী বলব আমি
সবাই পালায় দূরে
এই সুযোগে সেদিন ফটিক
বকছিল খুব করে।
ভেংচি কেটে পুচকে বানর
যাচ্ছিল পাশ দিয়ে,
আর কত কী সইব আমি
বাঁচাও বুদ্ধি দিয়ে।
দু‘পায় পড়ি ভাগনে আমার
করো উপকার,
বিয়েতে তোমার অনেক অনেক
দিব উপহার ।
শিয়াল মশাই ছুটল পথে
ছুটল বনে বনে
সবাই শুধু পিছপা হয়
বাঘের কথা শুনে ।
বিলের ধারে এক পা তুলে
বক ছিল ঠাঁয় খাড়া,
শিয়াল মশাই বলল খবর
আনল ডেকে তাড়া।
বাঘটা ছিল বনের মাঝে
বড্ড রকম পাজী,
বাঘের অনেক কথায় তবু
বক ছিল না রাজী।
বাঘ বলল, খোদার কসম
করি অঙ্গীকার-
হাড়টা যদি খুলতে পার
দিব পুরস্কার।
লম্বা ঠোঁটে চমকা টানে
খুলল গলার হাড়,
বকটা তখন কথা মত
চাইল পুরষ্কার।
চোখ রাঙিয়ে বাঘটা তখন
ঘাড় বাকিয়ে কয়-
আমিই হলাম বনের রাজা
হয় না কি তোর ভয় ?
আমার গলায় ঠোঁট ঢোকানোর
এমন সাহস কার ?
তোকে এখন বাঁচিয়ে দিলাম
-এই নে পুরস্কার।
নইলে এখন ঘাড় মটকিয়ে
দিব তোরে ভাগা,
বকটা ভয়ে ফিরল নীড়ে
ফিরল হতভাগা।
বকটা তখন ধৈর্য ধরে
দু‘পাখ তুলে কয়,
হায় গো খোদা তোমার প্রতি
নেইকো খানিক ভয় ।
শক্তিধর ঐ বনের রাজার
দাও গো বুঝার জ্ঞান,
মিথ্যাটাকে ছেড়ে যেন
সত্যটাকে নেন ।
ক‘দিন যেতেই সেই বাঘেরই
কে জানে কি হলো-
নদীর পাড়ে পিছলে পড়ে
ঠ্যাং যে ভেঙ্গে গেল।
ক্র্যাচার হাতে বাঘটা হাঁটে
সবাই পিছু ভেংচি কাটে !
বাঘটা স্বীয় কৃত-কর্মের
হিসাব এবার ঘাঁটে।
দু‘হাত তুলে বাঘটা তখন
বলল সাফসাফ
খোদা তুমি রহম করো
করো এবার মাফ
আর কোনদিন অঙ্গীকার
করবো নাকো ভঙ্গ
কোন জীবের জীবন নিয়েও
করবো নাকো রঙ্গ।
রচনাকাল ঃ
১৫/১২/১৯৯৪ খৃঃ, বৃহঃ বার ।
স্থানঃ
নিজ বাড়ি, টেংগুরিয়া পাড়া
বাসাইল, টাংগাইল ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।