যে কোন লড়াই শেষ পর্যন্ত লড়তে পছন্দ করি।
তরুন কবি সুমনার আত্মহত্যা প্রসঙ্গে আত্মহত্যা প্ররোচনার তিনটি ঘটনা এবং তিনাট ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকার একটি চিত্র তুলে ধরা যেতে পারে।
প্রথম ঘটনাঃ ২০০১ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৩ তারিখ নারায়নগঞ্জ আর্ট কলেজের মেধাবী ছাত্রী সিমি বানু বখাটেদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে ঢাকা সবুজবাগের নিজ বাসায় বিষ পানে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় স্থানীয় বখাটে কয়েকজন যুবক সহ একজন নিম্নপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা হয় এবং ঐই মামলায় আসামীদের ১ বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড হয়। সিমি বানু আত্মহত্যার ঐ ঘটনাটি সরেজমিনে তদন্ত করেছিল বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট পার্টনারশীপ সেন্টার বা বিডিপিসি।
দ্বিতীয় ঘটনাঃ সম্প্রতি ১০ জুন ২০১০ তারিখ আবার সেই ঢাকা মহানগরীর কদমতলী থানার জুরাইন এলাকায় মা ফারজানা তার দুই শিশু সন্তান পবন ও পায়েল সহ একত্রে আত্মহত্যা করেছেন। এই ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে ফারজানার স্বামী রাশেদুল কবির ও শ্বশুর শফিকুল কবিরসহ আট জনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধি অনুযায়ী মামলা হয়েছে। পুলিশের ভাষ্য মতে পুলিশ আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তৃতীয় ঘটনাঃ ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১০ তারিখ ঢাকা মহানগরীর হাজারীবাগ থানাধীন শংকর এলাকার ২৭১/৮ নিরিবিলি আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় প্রেম ও পুনঃবিবাহে প্রতারিত হয়ে ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন সুমনা মেহেরুন। তিনি তার আত্মহত্যার পূর্বে আত্মহত্যার জন্য কারা দায়ী সে কথা তার সাড়ে দশ বছর বয়সী ছেলে জাবির আল আব্বাসকে বলে গিয়েছেন।
এছাড়া তার আত্মহত্যার কারন এবং দায়ী ব্যক্তিদের সম্পর্কে যথেষ্ট সাক্ষী, সাক্ষ্য ও প্রমাণ আছে। সুমনা মেহেরুনের আত্মহত্যার পর পুলিশ যখন প্রথম তাদের বাসায় আসে তখন তার ছেলে জাবির আল আব্বাস তার মায়ের বলে যাওয়া কথা মত সুমনার মৃত্যুর জন্য কারা দায়ী তা পুলিশকে জানিয়েছিল বলে জানিয়েছে। কিন্তু পুলিশ সেসব বিষয় বিবেচনায় না নিয়ে ঘটনাটিকে নিছক একটি অপমৃত্যু মামলা হিসেবে ট্রিট করে মামলা খুব সল্পতম সময়ে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আত্মহত্যার কারণ বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ দন্ডবিধি অনুযায়ী মামলা করে নি।
উপরের যে তিনটি ঘটনার কথা বল হ’ল তার প্রথম দুটির ক্ষেত্রে ভিকটিম আত্মহত্যা করলেও, আত্মহত্যার কারণে পুলিশ ঘটনা দুটিকে নিছক অপমৃত্যুর মামলা হিসাবে ফাইনাল রিপোর্ট প্রদান করেনি।
মামলার প্রকৃত কারণ বিবেচনায় নিয়ে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। কিন্তু তৃতীয় ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা সম্পূর্ণ ভিন্ন। আগের দুটি ঘটনায় বাংলাদেশ দন্ডবিধি অনুযায়ী দায় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়ে থাকলে সুমনার আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনাদানকরী দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা কেন হবে না এর জবাব পুলিশ কর্তৃপক্ষ কি দেবেন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।