আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঝিলমিলের জমিতে সাংসদ বিপুর আবাসন প্রকল্প

তারাঁদের ইসকুলে আমি এক লবন চাষীর ছেলে,ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদ! সে আমার মা...

রহমান মাসুদ সরকারী প্রকল্প আটকিয়ে সরকারী দলের সাংসদের আবাসন ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণেই রাজধানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল প্রকল্প আবারো অনিশ্চয়তায় পড়েছে বলে জানা গেছে। এ কারণেই ঝিলমিল প্রকল্পের নীতিমালা মন্ত্রনালয়ে আটকা পড়ায় ঘোষিত জুলাইয়ে প্রকল্পের প্রথম ফেজের দরখাস্ত আহবান হচ্ছেনা। গনপূর্ত ও গৃহসংস্থান বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও রিহ্যাব সভাপতির বিরুদ্ধেই উঠেছে এ অভিযোগ। সাংসদ নাসরুর হামিদ বিপুর প্রতিষ্ঠান ঝিলমিলের দ্বিতীয় ফেজের জায়গা দখল করে আবাসন প্রকল্প করায় এ অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের ধারনা সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ওই সদস্যর চাপে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারছেনা পূর্ত মন্ত্রনালয়। ১৯৯৮-য় বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর পাড়ে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জে ৩৮১ একর জমির ওপর স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য আবাসিক প্রকল্প হাতে নেয় রাজউক। কিন্তু নানা জটিলতা ও মামলার কারণে প্রকল্প শুরু হয় ২০০১। কিন্তু ১০ বছর পার হয়ে গেলেও প্রকল্পের ৫০ ভাগ কাজ এখনো শেষ হয়নি। মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৭৫ ভাগ।

বর্তমানে কিছু আভ্যান্তরিন সড়ক নির্মাানের জন্য দরপত্র আহবানের প্রক্রিয়া চলছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে প্রথম ফেজের ১৬৭৪ টি প্লট বরাদ্দের জন্য দরখাস্ত আহবানের কথা দিয়েছিলেন রাজউক চেয়ারম্যান প্রোকৌশলি মুহাম্মদ নুরুল হুদা। গত জানুয়ারীতে দেয়া রাজউক চেয়ারম্যানের ওই ঘোষনা যথা সময়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক আনোয়ার হোসেন। ৩৩৫ কোটি টাকার রাজউকের এ প্রকল্পে আড়াই কাঠার প্লট রয়েছে ১৭৭টি, ৩ কাঠার প্লট থাকবে ১২৩৪ টি, ৫ কাঠার প্লট ১৪৪টি, সাড়ে ৭ কাঠার প্লট রয়েছে ১০৮টি ও অন্যান্য মাপের প্লট রয়েছে ৯টি। এছাড়াও প্রকল্পে ৬০ একর জমি বরাদ্দ রাখা আছে ফাট বানানোর জন্য।

এ জমিতে ২০ হাজার ফাট বানিয়ে নিন্মবিত্তের মধ্যে বরাদ্দের কথা রয়েছে। ঝিলমিল প্রকল্পের পরিচালক বলেন, দরখাস্ত আহবানের কাজ করে রাজউকের সম্পত্তি বিভাগ। কিন্তু পূর্বাচল এবং উত্তরা তৃতীয় প্রকল্পের আবেদনকারীদের টাকা ফেরত দিতে সম্পত্তি বিভাগ ব্যস্ত থাকায় জুলাইয়ে ঝিলমিলের আবেনগ্রহনের কাজ শুরু হচ্ছে না। এ বছরের শেষ নাগাদ তা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করেন। এদিকে রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলি মুহাম্মদ নুরুল হুদা জানান, দরখাস্ত আহবানের জন্য একটি নীতিমালা প্রস্তুত করে মন্ত্রনালয়ে জমা দিয়েছে রাজউক।

কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও তা এখনো পাশ হয়নি। রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, নীতিমালা অনুমোদন হলেই ঝিলমিলের দরখাস্ত আহবান করা হবে। এজন্য আরো দুই মাস সময় লাগতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এদিকে রাজউকসূত্র জানায়, কেবলমাত্র ঝিলমিল প্রকল্পের প্রথম ফেজই নয়, দ্বিতীয় ফেজের প্রকল্প প্রস্তাবনাও মন্ত্রনালয়ে আটকা পড়েছে সরকারদলীয় এক সংসদ সদস্যর কারণে। সূত্র জানায়, আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের বর্তমান চেয়ারম্যান ও পূর্ত মন্ত্রনালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সদস্য নাসরুল হামিদ বিপুর ইশারায় মন্ত্রনালয়ে রাজউকের ফাইল আটকে আছে।

এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, দিপুর আবাসন প্রতিষ্ঠান প্রিয়প্রাঙ্গন ঝিলমিল প্রকল্পের চারপাশের হাজার হাজার একর জমি দখল করে আবাসন প্রকল্প শুরু করেছে। প্রিয়প্রাঙ্গনের কারণে রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্প অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিলমিল প্রকল্পের দ্বিতীয় কিস্তির প্রস্তাবিত জমিতেই গড়ে উঠেছে প্রিয় প্রিয়াঙ্গন। এ প্রকল্পের জন্য রাজউক ১১০০ একর জমি অধিগ্রহনের জন্য মন্ত্রনালয়ে প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে। এ প্রকল্পে সাড়ে তিন হাজার প্লট ও ৩০ হাজার ফাট নির্মাানের কথা রাজউকের।

এ জন্য দেড় হাজার কোটি লাগবে বলে রাজউক সূত্র জানায়। কিন্তু দ্বিতীয় প্রকল্পের জমিতে প্রিয়-প্রাঙ্গন আবাসন প্রকল্প গড়ে ওঠা সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলি আনোয়ার হোসেন বলেন, এটা কোনো সমস্যা নয়। সরকার আশা করলে যে কোনো জমি অধিগ্রহন করতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। রাজউকের অন্য এক সদস্য নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, বেসরকারী আবাসন কোম্পানীর জমি রাজউক অধিগ্রহন করলে হাজার হাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বিপদে পড়বে। তিনি বলেন, আজ যারা প্রিয় প্রিয়াঙ্গনের বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে বিনিয়োগ করছে তাদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা কি হবে তা ভাবার সময় যে সংসদীয় কমিটির, তারাই দখল বানিজ্যে নেমেছে।

তিনি বলেন, অনুমোদনহীন এসব প্রকল্পের বিরুদ্ধে রাজউক কোন ব্যবস্থা না নিয়ে দন্তহীন বাঘে পরিনত হয়েছে। এ সম্পর্কে রাজউক চেয়ারম্যান জানান, মাননীয় সাংসদ যখন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে বসেছেন, তখন নিশ্চয়ই তিনি ব্যাক্তি স্বার্থ দেখবেন না। তিনি বলেন, আমাদের সবারই জনগনের স্বার্থের কথা ভাবতে হবে। এদিকে এ সম্পর্কে রিহ্যাব চেয়ারম্যান ও পূর্ত মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংদীয় কমিটির সদস্য এবং প্রিয় প্রিয়াঙ্গনের মালিক নাসরুর হামিদ বিপু ডেসটিনি কে বলেন, ঝিলমিলের দ্বিতীয় ফেজের প্রতস্তাবনা যে জমিকে কেন্দ্র করে করা হয়েছে, প্রিয়প্রাঙ্গনে সে সব দাগের জমি নেয়া হয়নি। এছাড়া রাজউক এ প্রকল্পের জন্য জমি ওতো অধিগ্রহন করেনি।

তিনি আরো বলেন, জমি দখলের কোনো ইতিহাস আমার নেই। বিপক্ষ দলের কেউও এ ধরনের অভিযোগ করতে পারবেনা। সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসেবে আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন বলে তিনি মন্তব্য করেন। (অথচ দেখেছেনতো সচিবালয়ে এই ভূমিচোরের কান্ড করখানা! এই অবস্থায় পোস্টটি রি পোস্ট দিতে বাধ্য হলাম)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।