লিখে খাই, সবার ভাল চাই
আপ-ডাউন
শামীমুল হক
ফাস্টফুডের দোকানে প্রচণ্ড ভিড়। বাইরে তীব্র গরম। কেউ খাচ্ছেন ঠাণ্ডা পানীয়, কেউ লাচ্ছি। গরম নিবারণের চেষ্টা সবার মাঝে। এরই মধ্যে দু’যুবক ঢুকলেন ফাস্টের দোকানে।
জিজ্ঞাসা করলেন ঠাণ্ডা জাতীয় কি আছে? দোকানি বললেন, আছে অনেক কিছুই। স্প্রাইট, সেভেনআপ, কোকাকোলা, পেপসি ইত্যাদি। এক যুবক সেভেনআপ দেয়ার কথা বললো। সঙ্গে সঙ্গে সেভেনআপ দেয়া হলো তাকে। মুখে দেয়ার আগে দোকানের ম্যানেজারকে জানালো এর নাম সেভেনআপ কেন হলো? ম্যানেজার অনেক চিন্তা করে জানালেন, এটি খেলে সাতবার ওপর দিকে ঢেঁকুর আসে বলে এর নাম সেভেনআপ।
যুবকটি সেভেনআপ খেতে লাগলো আর গুনতে লাগলো কতবার ঢেঁকুর আসল। সেভেনআপ খাচ্ছে আর গুনছে। গুনতে গুনতে ৬ বার দেখা গেল ঢেঁকুর এসেছে। কিন্তু সপ্তমবার ঢেঁকুর না দিয়ে বাতাস ছাড়ল। সঙ্গে সঙ্গে যুবকটি ম্যানেজারকে উদ্দেশ করে বললো, এর নাম সেভেনআপ না হয়ে সিক্স আপ ওয়ান ডাউন হওয়া উচিত ছিল।
বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়েও সারাদেশে চলছে আপ-ডাউন। আজ পর্দা উঠবে। অথচ অনেক আগ থেকেই শুরু হয়ে গেছে উন্মাদনা। গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র উড়ছে পতাকা। নিয়মের বালাই নেই।
যে যেভাবে পারছে পতাকা ওড়াচ্ছে। লাখ লাখ পতাকা এখন দেশের আকাশে। আর্জেন্টিনা- ব্রাজিল দু’শিবিরে যেন বিভক্ত দেশ। কিছু কিছু দর্শক আছে ইংল্যান্ড, আইভোরি কোস্ট, পর্তুগাল, ইতালির। ছোট শিশুর মুখেও শোনা যায় মেসির নাম।
কাকা, ওয়েন রুনি, দ্রগবাও ফুটবলপ্রেমীদের মুখে মুখে। আর রোনালদোতো সবার হৃদয়ে গেঁথে আছে। এ বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে ঘরে ঘরে এখন বিভক্তি। এক ভাই করে আর্জেন্টিনা তো অন্য ভাই ব্রাজিল। দেখা গেল বাবা করছে ইংল্যান্ড, পতাকা ওড়ানো নিয়েও হচ্ছে মনোমালিন্য।
কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী ভিনদেশী পতাকার ওপরে ছোট করে হলেও দেশের পতাকা ওড়ানোর কথা। কিন্তু তা করছেন না বেশিরভাগ ফুটবলপ্রেমীই। টেলিভিশন কেনার ধুম তো শুরু হয়েছে অনেক আগেই। টিভি শোরুমগুলোতে ভিড়। তারাও ছেড়েছে নানান অফার।
আর ডিশ ব্যবসায়ীদের তো পোয়াবারো। একেক মহল্লায় প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৪শ’ নতুন লাইন লাগানো হচ্ছে। এ যেন এক মহাউৎসব। কিন্তু এ উৎসবে বাগড়া বসাতে পারে বিদ্যুৎ। ক’দিন ধরে বিদ্যুতের যে বেহাল অবস্থা তাতে শঙ্কিত সবাই।
ইতিমধ্যে বিভিন্ন পাওয়ার হাউসগুলো থেকে অতিরিক্ত পুলিশ চাওয়া হয়েছে। এ বিশ্বকাপ নিয়ে যে কত অঘটন ঘটে কে জানে। কিন্তু ভয়, ট্রাফিক পুলিশের হাতের মতো হয় কিনা সবকিছু। ট্রাফিক পুলিশ যেমন তার হাত দিয়ে গাড়ি আটকে দেয়, আবার হাতের ইশারায় গাড়ি চলতে থাকেÑ ঠিক এমন করে কিনা বিদ্যুৎ বিভাগ। কারণ, ট্রাফিকের হাতের মতো বিদ্যুতের চাবিও তো তাদের হাতে।
গতকাল মতিঝিল থেকে শাহবাগ যাচ্ছিলাম রিকশায় করে। রিকশাচালক বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিল গাড়িটি। একপর্যায়ে একটি বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে থাকলো। বারবার নিষেধ সত্ত্বেও শুনলো না। আরেকবার আস্তে বলার পরই ক্ষেপে গেলেন।
বললেন, আপনি যাত্রী, চুপ করে বসে থাকুন। এরই মধ্যে একটি বাসের সঙ্গে লাগালো ধাক্কা। দ্রুত রিকশা থামিয়ে একেবারে বাসের সামনে গিয়ে হাজির রিকশাচালক। বাস চালককে ক্ষেপে বললেন, ট্রাফিকের একটি হাতের ইশারায় গাড়ি থামিয়ে দিতে পারো আর আমার এতো বড় রিকশা তোমার চোখে পড়ে না। এরই মধ্যে বাসচালক তার গালে বসিয়ে দিল এক থাপ্পড়।
শুরু হলো চরম উত্তেজনা। মানুষজন জমে গেল। শুরু হলো আপ-ডাউন। মারপিট। ভয় হয়, বিদ্যুৎ নিয়ে ভয়াবহ কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় কিনা? কারণ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে গত ক’দিন ধরে বিদ্যুতের যে আপ-্ডাউন চলছে তাতে শঙ্কিত সবাই।
ুব্ধ সবাই। এ অবস্থায়- তাই বিদ্যুৎ বিভাগ সাবধান!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।