আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই হল গ্রামীণফোনের কাস্টমার কেয়ার!

কাপুরুষের শেষ আশ্রয় হল দেশপ্রেম

(একান্ত ব্যক্তিগত ক্ষোভের কথা। কারো ধৈর্য্যচ্যুতির সম্ভবনা থাকলে না পড়ার জন্য অনুরোধ করছি। ) প্রথম ঘটনাটি বলি। গত এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে নতুন একটি চাকরিতে যোগ দিয়ে গ্রামীণফোনের সেলস্ সেন্টারে গিয়ে Explore প‌্যাকেজের পোস্টপেইড সংযোগ নিই এবং ইন্টারনেটের জন্য P2 প্যাকেজ চালু করে দিতে বলি। কাউন্টার থেকে জানাল, সেক্ষেত্রে আপনার ক্রেডিট লিমিট বাড়াতে হবে।

জিজ্ঞেস করলাম, এই সিমের ক্রেডিট লিমিট কত? বলল, ৫০০ টাকা। তবে ২ দিন পর আপনি যেকোন পরিমাণ টাকা রিচার্জ করে ঐ টাকা ডিপোজিট হিসেবে রাখলে ক্রেডিট লিমিট বেশি পাবেন। কথামত ২ দিন পর বিকেলে ২০০০ টাকা ফ্লেক্সিলোড করি, কিছু ব্যালেন্স খরচ করে ফেলি এবং রাতে ১২১ এ ফোন দিয়ে উক্ত ব্যালেন্সটুকু ডিপোজিট করতে বলি। ওপাশ থেকে কাস্টমার কেয়ারের 'বেকুব'টি একড্রাম মধু ঢেলে বলল, স্যার, আপনার ব্যালেন্স এখন ১৯৭৪ টাকা। ২০০০ টাকা ডিপোজিট করতে চাইলে আপনাকে আরও ২৬ টাকাও ফ্লেক্সি করতে হবে।

আমি বললাম, ঠিক আছে, এখনই্ ৫০ টাকা ফ্লেক্সি করছি, আমাকে কি আবার ১২১ এ কল করতে হবে? বেকুবটি বলল, না স্যার। আমি নোট করে রাখছি। ধন্যবাদ জানিয়ে কেটে দিলাম এবং ৪ তলা থেকে নিচে নেমে এসে ফ্লেক্সিলোড করলাম। পরদিন Usage লিখে ২০০০ এ ম্যাসেজ পাঠিয়ে দেখি আমার উক্ত ব্যালেন্স ডিপোজিট হয়নি। আবার ১২১ এ কল করলাম এবং এবার যথারীতি আরেক 'বেকুব' এক কন্টেইনার মধু মিশিয়ে কথা বলা শুরু করল।

আগের দিনের বিষয়টি জানিয়ে জিজ্ঞেস করলাম এখনও ডিপোজিট হল না কেন? 'বেকুব'টি বলল, স্যার, সেটা আগের জন বলতে পারবে, তবে আপনি চাইলে আমি এখনই ডিপোজিট করে দিতে পারি। বললাম, করুন। এবার 'বেকুব'টি জিজ্ঞেস করল, স্যার কত টাকা ডিপোজিট করব? বললাম, ২০০০ টাকা। 'বেকুব'টি বলল, স্যার, আপনি এমনিতেই ৫০০ টাকা ক্রেডিট লিমিট পান, এখন ২০০০ টাকা ডিপোজিট করলে আপনার ক্রেডিট লিমিট ২৫০০ টাকা হবে। আমি বললাম, ঠিক আছে।

তাই করুন। এরপর লাইন কেটে দিলাম। আজও আমার সেই টাকা ডিপোজিট হয়নি। ক্রেডিট লিমিট ৫০০ টাকাই আছে। এবার দ্বিতীয় ঘটনা বলছি।

একই সিম কথা বলা এবং ইন্টারনেটের জন্য ব্যবহার করলে কিছু সমস্যা হয় বলে গত মাসের সম্ভবত ২০ তারিখে আমি গ্রামীণফোনের একটি এজ মডেম পোস্টপেইড সিম সহ কিনি এবং কেনার সময় কাউন্টারের 'বেকুব'টিকে বলি, এই ইন্টারনেট সিমটিতে P2 প‌্যাকেজ চালু করতে এবং Explore অর্থাৎ মোবাইলে সিমটি থেকে P2 প‌্যাকেজ বাতিল করে দিতে। সে বলল, ঠিক আছে। এক্ষুণি করে দিচ্ছি। আমি চলে আসলাম। গত বৃহষ্পতিবার (২০.০৫.১০) সকালে অফিসে গিয়ে নোটবুক অন করে দেখি, আমার ঐ ইন্টারনেট সিমটির সংযোগ কেটে দেয়া হয়েছে।

মোবাইল থেকে ১২১ এ কল করে ঐ সিমটির নম্বর জানিয়ে জিজ্ঞেস করি, কত টাকা বকেয়া হয়েছে? এই 'বেকুব'টি বলল, স্যার আপনার ৫২ টাকা বকেয়া আছে। আপনি চাইলে আপনার ইন্টারনেট সংযোগটি P2 প‌্যাকেজ থেকে P6 প‌্যাকেজে পরিবর্তন করে দিতে পারি। আমিও খেয়াল করে দেখলাম, মাসে ১ জিবি থেকে ১.৫ জিবি বেশি ব্যবহার করি না। তাই P6 প‌্যাকেজে পরিবর্তন করলে সাশ্রয় হবে। আমি বললাম, তাহলে কত টাকা ফ্লেক্সি করতে হবে? 'বেকুব'টি বলল, স্যার ৪০০ টাকা ফ্লেক্সি করলেই আপনার ইন্টারনেট সিমটিতে P6 প‌্যাকেজ চালু হয়ে যাবে।

আমি বললাম, ঠিক আছে, কিন্তু আবার আমাকে ফোন করতে হবে? 'বেকুব'টি বলল, না স্যার। আপনি ফ্লেক্সিলোড করুন। আমি চালু করে দিচ্ছি। আমি পিয়নকে দিয়ে ৪০০ টাকা ফ্লেক্সি করলাম এবং একটু পর ম্যাসেজ পেলাম যে, আমার ইন্টারনেট সিমে P6 প‌্যাকেজ চালু হয়েছে। ঐ দিন রাত ১২.০৯ এ এই ব্লগে থাকা অবস্থায় আবার আমার ইন্টারনেট সিমে একটি ম্যাসেজ আসে যে, আপনার এই সংযোগে P6 প‌্যাকেজ চালু করা হয়েছে।

আমি ভাবলাম, হয়ত সকালের ম্যাসেজটিই আবার এসেছে। এরকম অনেক সময় হয়, একই মিসড কলের ম্যাসেজ একাধিকবার আসে। পরদিন অর্থাৎ গতকাল শুক্রবার সকালে ইন্টারনেটে ঢুকতে গিয়ে দেখি আমার সিমটি সংযোগ পাচ্ছে না। কিছুক্ষণ চেস্টা করার পর ব্যর্থ হয়ে মোবাইল থেকে ১২১ এ কল দিলাম এবং আমার ইন্টারনেট সিমের সমস্যাটি কি জানতে চাইলাম। এবারের 'বেকুব'টি বলল, স্যার আপনার ইন্টারনেট সিমে ৩৫২ টাকা বকেয়া হয়েছে।

আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম। বললাম, গতকালই P6 প‌্যাকেজ চালু করছি। আজকেই কি করে ৩৫২ টাকা বকেয়া হয়? 'বেকুব'টি বলল, স্যার আপনি কি P6 প‌্যাকেজ চালু হওয়ার ম্যাসেজ পেয়েছিলেন? আমি বললাম, অবশ্যই, একবার না, দুই দুই বার, সকালে একবার, রাতে একবার। সে বলল, আমাদের নেটওয়ার্কে সমস্যা আছে। সম্ভবত আপনার P6 প‌্যাকেজটি চালু হয়নি।

সেক্ষেত্রে P1 প‌্যাকেজের রেটে আপনার ব্যালেন্স শেষ হয়ে থাকতে পারে। আমি বললাম, সেটা কিভাবে সম্ভব? আমি P2 প‌্যাকেজ থেকে P6 প‌্যাকেজে আসার অনুরোধ করেছি। যদি P6 প‌্যাকেজ চালু না হয় তাহলে P2 প‌্যাকেজ চালু থাকার কথা। এখানে P1 প‌্যাকেজের কথা আসছে কেন? 'বেকুব'টি বলল, ঠিক আছে স্যার। এই মূহুর্তে নেটওয়ার্কে সমস্যা আছে।

আমি আপনার এই মোবাইল নম্বরে পরে ফোন করে জানাব কি হয়েছে। আমি রেখে দিলাম। দুপুরে জুম্মার নামাজ পরে এসে, দেখি মোবাইলে ১২১ থেকে একটি কল এসেছিল। সন্ধ্যায় আবার ১২১ এ কল দিয়ে জানতে চাই, আমার ইন্টারনেট সিমের সমস্যাটা কি? এবারের 'বেকুব'টি বলল, আপনার ইন্টারনেট সিমে দুইবার P6 প‌্যাকেজ চালু করা হয়েছে। একবার সকালে এবং একবার রাতে।

যেহেতু আপনার সিমে যথেষ্ট ব্যালেন্স ছিল না, তাই পরেরবার P6 প‌্যাকেজ চালু করার কারণে ৩৫২ টাকা বকেয়া হয়ে গিয়েছে। স্যার, আপনি কি দুইবার P6 প‌্যাকেজটি চালু করাল অনুরোধ করেছিলেন? আমি বললাম, আমার কি মাথা খারাপ, যে সকালে P6 প‌্যাকেজ চালু করে আবার রাতে P6 প‌্যাকেজ চালু করতে বলব? 'বেকুব'টি বলল, জ্বি স্যার। আপনি শুধু সকালেই ১২১ এ ফোন করেছিলেন। সেক্ষেত্রে রাতে আরেকজন কেন আবার P6 প‌্যাকেজ চালু করল সেটা বোঝা যাচ্ছে না। এরপর 'বেকুব'টি বলল, আপনি আমাদের ইন্টারনেট বিষয়ক স্পেশালাইজড টিমের সাথে কথা বলুন, আমি লাইন ট্রান্সফার করে দিচ্ছি।

স্পেশালাইজড টিমের 'ভদ্রলোক' বললেন, এটা সম্ভবত ভুল বশতঃ হয়েছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমাদের কয়েকদিন সময় দিতে হবে। আমি বললাম, এই কয়দিন আমি কি নেট ছাড়া চলব? আমার গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর কি হবে? তিনি বললেন, কিছু করার নেই। সেক্ষেত্রে আপনি ৩০০ টাকা ফ্লেক্সিলোড করে সংযোগ চালু করতে পারেন।

আমি লাইন কেটে দিলাম। একটু আগে আমার মোবাইলের সংযোগ থেকে info লিখে ৫০০০ এ ম্যাসেজ পাঠিয়ে ফিরতি ম্যাসেজ পেলাম- you are enjoying edge p2 নিশ্চিত হওয়ার জন্য দুইবার ম্যাসেজ পাঠালাম। দুইবারই একই ম্যাসেজ ফেরত আসল। আবার ১২১ এ কল করে জিজ্ঞেস করলাম, আমার মোবাইলে আসলে কোন প‌্যাকেজ চালু আছে? এবারের 'বেকুবটি' বলল, স্যার P1 প‌্যাকেজ। আমি বললাম, তাহলে, ম্যাসেজে P2 প‌্যাকেজে লেখা দেখাচ্ছে কেন? সে বলল, এটা হওয়ার কথা নয়।

আমি আর কি বলব। লাইন কেটে দিলাম। এখন মাস শেষে P2 প‌্যাকেজের রেটে টাকা কেটে রাখলে করার কিছু থাকবে? এই হল আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল কোম্পানীর কাস্টমার কেয়ারের সেবার নমুনা!!!! গ্রামীণফোনের কাছে আমাদের জিম্মিদশা কবে কাটবে কেউ বলতে পারেন? এরকম আরও ঘটনা পড়তে ব্লগার 'লেনিন' ভাইয়ের এই পোস্টটি পড়তে পারেন Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।