আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাশবিকতাও হার মেনে যায়

চলো আবার সবুজ গড়ি
চুরির অপবাদ দিয়ে নির্মম নির্যাতন স্কুল ছাত্রী টুকটুকিকে টুকটুকি এখন বাকরুদ্ধ। কষ্ট আর নির্মম নির্যাতনের কথা প্রকাশ করছে হাতের ইশারায়। পাষণ্ড এক দম্পতির অমানবিক নির্যাতনে টুকটুকির এ হাল। বর্তমানে সে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। মেহেরপুর সদর উপজেলার যতারপুর গ্রামের দিনমজুর এমদাদুল হকের মেয়ে যতারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী টুকটুকি।

লেখাপড়ায় বেশ ভালো। কিন্তু লেখাপড়ায় বাদসাধে দারিদ্র্য। তারপরও লেখাপড়া ছাড়েনি সে। স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি গ্রামে মুরাদের বাড়িতে কাজ করে সে। আর এ লেখাপড়া চালু রাখতে গিয়েই তাকে সইতে হলো চুরির অপবাদ আর অমানবিক নির্যাতন।

টুকটুকির অপরাধ সে স্কুলে যাবে বলে মুরাদের বাড়িতে কাজে যায়নি। এ অপরাধে মুরাদসহ তার পরিবারের লোকজন টুকটুকিকে সোমবার স্কুলে যাওয়ার পথে ডেকে নিয়ে প্রথমে হাত ও পায়ের আঙ্গুলে প্লাস দিয়ে চাপ দেয়। পরে পায়ে দড়ি বেঁধে মাথা নিচে দিয়ে বিকাল পর্যন্ত ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। এদিকে স্কুল শেষ হওয়ার পরও মেয়ে বাড়িতে ফিরে না আসায় সন্দেহ হয় টুকটুকির মায়ের। তিনি জানতে পারেন, টুকটুকি স্কুলে আসার পথে মুরাদ ও রশিদের লোকজন ধরে নিয়ে গেছে।

দিশেহারা মাকে মুরাদের বাড়ির পাশের লোকজন জানায়, টুকটুকি টাকা চুরি করেছে। এজন্য তাকে পিটিয়ে সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। মা মেয়েকে উদ্ধার করতে গেলে তারা তাকেও আটকে রাখে। পরে মাঠে কাজ করতে যাওয়া বাবা এমদাদুল হক বিকালে বাড়ি এসে ৯০০ টাকা দিয়ে মেয়ে ও স্ত্রীকে ছাড়িয়ে নেন। টুকটুকির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় গ্রামের লোকজন সন্ধ্যায় তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

বাবা এমদাদুল বলেন, টুকটুকি স্কুলে যাওয়ার পথে মুরাদ ও রশিদের লোকজন ৯০০ টাকা চুরির অপরাধে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। বাড়ি নিয়ে তার হাত ও পায়ের আঙ্গুল প্লাস দিয়ে থেতলে দেয় এবং রশি দিয়ে তাকে ঝুলিয়ে রাখে। তিনি বলেন, আমরা গরিব হতে পারি কিন্তু চোর না। আর মেয়ে টুকটুকি কেন চুরি করবে। তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় আমি মাঠে দিনমজুরের কাজ করতে গিয়েছিলাম।

মাঠ থেকে বাড়ি ফিরে শুনি এ ধরনের কথা। পরে ৯০০ টাকা বুঝিয়ে দিয়ে দু’জনকে ছাড়িয়ে আনি। আমি মেয়ের ওপর নির্যাতনের বিচার চাই। কেননা পরে তারা টাকা ঘরেই খুঁজে পায়। ডা. মিজানুর রহমান জানান, টুকটুকিকে নির্যাতন করা হয়েছে।

সে কথা বলতে পারছে না। তাকে চিকিত্সা দেয়া হচ্ছে। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। ২/৩ দিন পার না হলে সঠিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। অভিযুক্ত মুরাদ মোবাইল ফোনে জানায়, চুরির কারণে তাকে দু’একটা চড় মারা হয়েছে।

কিন্তু প্লাস দিয়ে হাত কিংবা পায়ের আঙ্গুল চেপে দেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। টুকটুকির পরিবার পরিকল্পিতভাবে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। হায় মানুষ... তুমি কবে মানুষ হবে??
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.