বাঙলা কবিতা
" কালও কবিতা লিখিনি। পরশুদিনও নয়। এ ভাবে হিশেব করলে প্রায় এক মাস।
গ্রীষ্মকালে আমি কবিতা লিখবো না। প্রতীজ্ঞা করেছিলাম শেষবার তোমার হাত ছুঁয়ে।
পার্কের শেষ বেশ্যাটি চলে যাওয়ার পর। বলেছিলে, গ্রীষ্মকাল তো ঘুমোবার জন্যে নয়। আমরা বসবো পাশাপাশি ; স্তব্ধ সরোবরের সামনে।
পশ্চিমের লোকেরা ভয়ানক বরফ খায়। সরবত হয় কত কিছুর।
পেস্তা থাকে, বাদাম থাকে।
তোমার শরীরের গন্ধ কোনও কোনও দিন এ রকম পেস্তা হয়, বাদাম হয়।
আমি হাত ছুঁয়ে দেখেছি, গ্রীষ্মকালে যত গরমই পড়ুক না কেন লোকালয়ে; তুমি কিন্তু ভয়ানক অভিমানের মত ঠাণ্ডা। ছুঁলেই ঘুমোতে ইচ্ছা করে। কালো রঙ এত সুন্দর ঠাণ্ডা হয় ?
এত নরম অন্ধকার হয় ?
কিন্তু গ্রীষ্ম পড়তে না পড়তেই তুমি চলে গ্যালে।
ঠাণ্ডার দেশে। তখন আমার জ্বর। বিছানার এক পাশে বার্লি আর বেদানা। বিদায় নেই। ক্রন্দন নেই।
প্রতারণার নরম আর্তনাদের অভিনয়ে স্তন যখন স্পৃষ্ট-আলিঙ্গন হয়। তাও নেই।
একটুও ভেবে দেখলে না, এই জ্বর এক সপ্তাহের। তারপর আমি কী করবো? পার্ক কী করবে?
গ্রীষ্ম কী করবে? আগুনের হল্কা কী করবে ? সরোবরে কার ছায়া পড়বে? তুমি থাকলে, আর কাউকে ; যার গা ঠাণ্ডা, যার প্রতারণা অলঙ্কারময়, যে চুম্বনের সময় গোল মরিচের ঝাঁঝ ছড়িয়ে দ্যায়; তাকে দিয়ে যেতে পারতে আমার হাতে।
তুমি ঠাণ্ডার দেশে।
মেনে নিলাম এই সরল ব্যাপারটা। কিন্তু এই গ্রীষ্মে আমি কোথায় যাই? কার ঠাণ্ডা নাভির ওপর লকলকে আগুনের দুপুরে হাত রাখি?"
_______________________________
[ কবিতা প্রসঙ্গে / বাংলাদেশের আর্তুর (১৯৪২-২০০৩) ]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।