মানুষ আসে মানুষ যায় কিন্তু সময় যায় চিরতরে
আজ থেকে বছর দুয়েক আগে, যখন ৪দলীয় জোট বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল-তখন বি,এন পির ছোট নেতা বড় নেতা উপনেতা পাতি নেতা এরকম অনেক নেতাকেই স্বদর্পে রাজপথ কাপাতে দেখা যেত। অপর দিকে আওয়ামী লীগের সরকার বিরোধী আন্দলোনের মাঠে সামনের সারিতে ব্যানার ধরবার জন্যও কোনো কর্মি বা গুরুত্বপুর্ন নেতাকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এখন, যখন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছে, ঠিক বি,এন পির সে সময়ের মতই উপনেতা পাতিনেতার কোনো অভাব নেই। অবস্থা এমন যে, নেতার চাপাচাপিতে কর্মি খুঁজে পাওয়ায় দুরুহ ব্যাপার।
আসলে এতো নেতা আসলো কোথা থেকে? আজ পাড়া মহল্লাতে ভরে গেছে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ-ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ-তাঁতীলীগ, হকার লীগ-ওলামা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ-মহিলালীগ এ রকম হাজ়ারও লীগ।
তাদের কথাবার্তা চাল চলন দেখে শুনে মনে হয় যেনো ঐ সমস্ত লীগ ছাড়া এ দেশে আর কোনো মানুষ ই নেই, ওরাই দেশটাকে উদ্ধার করে ছাড়বে।
পাঠক, আমার লেখা দেখে ভাবতে পারেন আমি বুঝি আওয়ামীলীগের বি্রোধীতা করছি। কিন্তু তা নয়- আমি শুধু আমার অনুভুতির কথা বলছি। আওয়ামী নেতৃত্বকে অনুরোধ করব তাঁরা যেন বিষয়টা ভেবে দেখেন। আমি যতদুর দেখেছি, বিগত দিনের যারা জাতীয়তাবাদি ছাত্র,যুব,কৃষক তাঁতী-জেলে, শ্রমিক স্বেচ্ছাসেবক এবং মুল দলএর নেতা বা কর্মি ছিলো তাদের অনেকেই ক্ষমতার পালাবদলের সাথে সাথে নিজেদেরও ভোল পালটে রাতারাতি আওয়ামীলীগার হয়ে গেছে।
তারা এতোটাই আওয়ামীলীগার হয়েছে যে, যারা দীর্ঘদিন আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত, এ সমস্ত নব্য নেতাদের কাছে তাদেরও পাত্তা মেলেনা। সেখানে সাধারন কর্মি বা সমর্থকের কি অবস্থা তা সহজেই অনুমান করা যায়।
২০০১ এর নির্বাচন পরবর্তি সহিংসতার যারা হোতা, তারাই এখন আওয়ামী সরকারের নীতি নির্ধারক। তাদের অতিত কর্মকান্ড আড়াল করতেই এখন তারা অতি আওয়ামীলীগার সেজে আছে। এ সমস্ত ভন্ড নেতা কর্মিরা নিজেদেরকে পরিচয় দেয়- জাতীয়তাবাদি আওয়ামীলীগার হিসাবে।
চাঁদাবাজি-টেণ্ডারবাজী থেকে শুরু করে যত অপকর্ম আছে এরা তার সব টূকুই করছে, কিন্তু দোষ পড়ছে আওয়ামীলীগ সরকারের ঘাড়ে। কি সুন্দর কৌশল! পেটের মধ্যে ঢূকে নাড়ী কেটে দেয়া যাকে বলে। অপরদিকে আওয়ামীলীগের গর্ধব নেতারা ভাবছে, অমুক সন্ত্রাসী আমার দলে যোগ দিয়েছে-আমার ক্ষমতা বেড়ে গেছে, এখন আর আমাকে পায় কে। চতুর? নেতারা একবারও ভেবে দেখছেনা আসলে হচ্ছেটা কি। দুদিন আগেও যারা আওয়ামীলীগ দেখলেই তাড়া করতো হঠাৎ তারা কি ভাবে আওয়ামীদরদি হয়ে গেলো?
আমার মহল্লাতেই একজন অতি মহান শ্রমিকদল নেতা, যার হুকুমে কতো আওয়ামীলীগ কর্মির হাত পা ভেঙ্গেছে তার হিসাব করা কঠিন,যে নেতা ৯টা মার্ডার কেসের আসামি।
তত্বাবধায়ক সরকারের সময় যে ক্রস ফায়ারের ভয়ে আত্মগোপনে ছিলো। সেই মহৎপ্রাণ নেতা আওয়ামীলীগ সরকার এর প্রথম দিকে আদালতে আত্মসমর্পন করে,আর স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতারা নিজেদের শক্তি বৃদ্ধির জন্য তাকে রাজনৈতিক হয়রানিমুলক মামলার তালিকায় সাধারন ক্ষমার আওতায় জেল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসে এলাকাবাসিকে তাদের ভোটাধিকারের উপযুক্ত উপহার দিয়েছেন। যার অপকর্মের জন্য মানুষ বি, এন,পি আমলে অতিষ্ঠ ছিলো এখনো অতিষ্ঠ।
অপরদিকে বি,এন,পি নেতৃত্ব চার বেলা আওয়ামীলীগের শ্রাদ্ধকরে চলেছেন। উনারা কি দয়া করা বলবেন, উনাদের সে সমস্ত সোনার ছেলেরা এখন কোথায়-যারা ৫টি বছর নেতাদের চার পাশে সুপার গ্লু আঁঠার মতো লেগে থাকত? নেতার সুদৃষ্টি পাবার জন্য ২৪ঘণ্টা নেংটি ইঁদুরের মত ঘুর ঘুর করে বেড়াত? জানি বলবেন না।
কারন এখন তারা সবাই জাতীয়তাবাদি আওয়ামীলীগার বনে গেছে। বি,এন, পি নেতারাও জানে, আর তারা এও জানে যদি কখনো ক্ষমতার পরিবর্তন হয়, আবার বি,এন,পি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে-তখন এই সব নব্য আওয়ামীলীগাররা,রং পালটে জাতীয়তাবাদি শক্তিতে রুপান্তরিত হবে। কারন, এই সমস্ত ক্যাডার বাহিনীর সদস্যরা সব সময় ই সরকারী দলের লোক। আর সব দলের নেতারাই এদেরকে ব্যাবহার করে থাকেন। void(0);
মাঝখানে যারা সাধারন মানূষ, তারা যুগে যুগে মার খেতে থাকে।
সব সময় ই তাদের গোয়ালের গরু সরকারী দলের লোকেরা জবাই করে খায়। ভোট দেয়ার অপরাধে যুবতী মেয়েকে তুলে দিতে হয় সোনার ছেলেদের হাতে। বাবা মা এর সামনে মেয়েকে, ছেলে মেয়ের সামনে মা কে সম্ভ্রম হারাতে হয়। মা কে ক্যাডারদের পায়ে ধরে বলতে হয়, বাবারা তোমরা একজন একজন করে যাও-আমার মেয়েটি ছোট, ও মারা যাবে!!!! এতো অত্যাচার নির্যাতন এর পর ও নেতারা গলাবাজী করে বলবে দেশ এখন অতিতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো আছে, আইন শৃংখলা স্বাভাবিক আছে। অপরদিকে, পাপিষ্ঠ ক্যাডাররা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াবে আর বলবে, আমরা হলাম জাতীয়তাবাদি আওয়ামীলীগ।
হায়রে হতভাগা বাঙ্গালী জাতি, হায়রে অভাগা দেশ!!!!!
void(1); সত্যি সব সম্ভবের দেশ,বাংলাদেশ!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।