(আবেগ দিয়ে লিখতে পারলাম না, না গুছিয়ে। দয়া করে পড়ুন, বুঝতে চাইলে বুঝবেন)
আজকে নওগাঁ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আমার বিরুদ্ধে একটা ১৪৪ মামলার রায় হল। সুনির্মিত এবং পূর্বনির্মিত পাশের বাড়ির মালিকানটি আমাদের উভয় বাড়ির মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গাটিতে ১০ইঞ্চি দেওয়াল তৈরি করে তাতে নতুন করে জানালা রাখতে শুরু করলে, স্থানীয় প্রশাসনের কাছে কোনো সুবিচার না পেয়ে, আমি আমার পার্শ্ববর্তীর বিরুদ্ধে পারিবারিক বিশেষত প্রবাসী বৃদ্ধ পিতা-মাতার ইচ্ছায়, যে-- অন্তত প্রতিবাদ করো, এই মামলাটি করি। প্রতিপক্ষের অভিসন্ধি, তার নতুন দেওয়ালটিকে আত্তীকরণ করে নিজ বাড়ির আয়তন বৃদ্ধি। যাতে তার কেনা জমির পরিমাণের অর্ধশতক বেশি জবর দখলমূলক বা অবৈধ হয়।
এটুকু জমির বাজার দাম এখানে তিন লক্ষ টাকা; তাও পাওয়া যায় কোথায়? যাহোক, তাতে আপত্তি করি না। কিন্তু লোভকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে এই প্রতিবেশী যখন তার ছাদের কিনার ভেঙ্গে নতুন করে রড বাঁধাই করে, কিছু অংশে তার বাড়ির ছাদের কার্ণিশ আমার বাড়ির ছাদের ঠেকিয়ে দিতে উদ্যত হল, নিরুপায় হয়ে আদালতের আশ্রয় নিলাম। -- এটুকু গেল মোটামুটি একটা ভূমিকা বা পটভূমি।
আজকে ১২ মে, ২০১০ তারিখ, মামলার রায় হওয়ার কথা, আদালতে অন্যান্য উকিল-মক্কেলের সাথে ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টের লোডশেডিংময় অসহ্য গরমে অপেক্ষা অপেক্ষায় অতিষ্ঠ আমরা। হঠাৎ করেই ম্যাজিষ্ট্রেট এবং তার পেশকার উধাও।
আদালত ঘর উত্তপ্ত। বেলা ২:৩০ মিনিটের কনফার্মেশন ৩:০০ টায় রি-কনফার্মড-- এদিকে ৪টা বাজতে চলেছে। মাননীয়া ম্যাজিষ্ট্রেট অবশেষে আসলেন, এবং এক সময় আমার মামলাটিও ডাকা হল। মহাশয়া রায় ঘোষণা করলেন;-- সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে ধার্য করা হল যে, প্রতিপক্ষকে অত্র মামলার আবেদনকারী যেন কোনা বাধা সৃষ্টি করতে না পারে। ইতোপূর্বে পৌরসভায় বিধি মোতাবেকে দরখাস্ত করে মাপজোক অন্তে সার্ভে রিপোর্টটি পেশ করেছি কিন্তু আদালতে! সেখানে দেখা যাচ্ছে দস্তুর মতো তিনি আমার জায়গায় দেড় ফুট অনুপ্রবেশ করে বসে আছেন।
জায়গা ছাড়া তো পরের কথা। (বিস্তারিত কথা বলতে গেলে এই পরিমাণ আরও বেশি হবে। কারণ, আমার আমার এস, এ রেকর্ডের সম্পত্তির পরিমাণ ২৫শতাংশ থেকে কমে হাল রেকর্ডে এসে ২৩.৪৫ প্রচারিত হয়েছে। অতি ভাল মানুষের মতো, আমি সেটুকুর দিকে বিন্দুমাত্র নজর না দিয়ে এই নতুন ২৩.৪৫ শতাংশ সম্পত্তিতেই ৭০ বছরের দখল থেকে সরে এসে নতুন পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছি-- যে কিনা, সেখানে একটি বড় ড্রেন হতে পারবে। অবশ্য স্থানীয় অনকে এটা দাবিও করেছিলেন।
তারাই যে এখন কোথায় হারিয়ে গেলেন!
কিন্তু টাটকা ঘটনাটি হচ্ছে, মাননীয়া ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত স্থবির রেখে আজ নিজেই সরজমিন তদন্তে এসেছিলেন। এসেছিলেন কার সাথে? একই গাড়িতে স্থানীয় এক অতি প্রভাবশালী আওয়ামী নেতার সাথে, যিনি আমার প্রতিপক্ষের আপন ভাই। এবং আরও মজার ব্যাপার হল, আমার প্রতিপক্ষটি যার আদালতে উপস্থিত থেকে আমারই মতো উত্তেজনায় এবং গরমে ঘামাঘামি করার কথা ছিল, তিনিও তাদের সাথে সরজমিন ছিলেন। ওয়াক, খিকয্! না আমি-আবেদনকারীর পক্ষ থেকে কেউ, না স্থানীয় কোনো উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব সেখানে উপস্থিত ছিলাম বা এই বিষয়ে অবহিত । আদালত থেকে ফিরে জানতে পারলাম, মোড়ের দোকানদার ছেলেটির কাছে,রেডিমেড কিছু প্রশ্নের উত্তরে এবং উক্ত আওয়ামী নেতা জজমান হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে নিতান্তই সে-ও আমারই মতো একজন অসহায় জিম্মি মাত্র ।
অতএব, মাননীয়া ম্যাজিষ্ট্রেট সরেজমিনে যা দেখে গেছেন (ছবি দ্রষ্টব্য--ছবিতে আমার প্রতিবেশীর বাড়ি এবং তার নতুন নির্মিত দেওয়াল), মাপজোক এবং জমির নথিপত্রকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে...মস্ত একটা প্রহসনের দাগ রেখে গেলেন আমার জীবনে। (আমার ছাওরে তিনি দেখছেন কুমিরের কাছ। এমনকি শিয়ালও নাকি বলছে, গুণতিতে ষোল আনা ঠিক ছিল। ) হায়, মাবুদ! আল্লাহ তার ভাল করুক, আশাকরি শিগগিরই তিনি ইউ,এন,ও পদে পদোন্নত হবেন।
আবেগী যেটুকু কথা এড়িয়ে যাব ভেবেছিলামঃ
দীর্ঘ দিনের ধরে চলমান এই ঘটনাটি কী-যে উত্যক্তকর এবং নিদারুন মানসিক নির্যাতনের সামিল ছিল, আমরা আমাদের পরিবার জানি, আমাদের কান্নার কালিতে লেখা আছে সব অন্য কারো আদালতে।
আজ মনে পড়তেছে, গত কুরবানী ঈদের আগের দিন এরা তাদের নির্মাণ কাজ সর্বাত্মকভাবে শেষ করার চেষ্টা করলে যে উত্তেজনার জন্ম নিয়েছিল, তেমন কিছু রান্না হয়নি পরের দিন, খাসি জবাই হয়েছে, মাংস বিলি হয়নি আত্মীয়-বাড়িতে। ঈদের সেই দিনেও সারাদিন আতংকিত ছিলাম আমরা পুরো পরিবার। এই শব্দ শোনা যায়, ঐ কিসের শব্দ! ঘুম ভেঙ্গে উঠে গিয়ে দেখি। আবার কোথায় ষড়যন্ত্র, এবারের ধরণ টা কী। --নাহ্ , থাক সেসব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।