১৯৯৬ সালে ঢাকার বুকে পদাপর্ণে পর থেকে বিগত ১৪ বৎসর আমি এদেশের সকল বামপন্থী সংগঠনের কর্মকান্ড মনোযোগ সহকারে লক্ষ্য করছি এবং অংশ গ্রহণের চেষ্টা করেছি। ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ আমি কোন দিন দেখি নি কোন বামপন্থী সমাবেশে সাম্যবাদী দলের পক্ষ থেকে দীলিপ বড়ুয়া সাথে বিশেষ একজন ব্যক্তি ব্যতিত তৃতীয় কোন ব্যক্তি অংশ গ্রহণ করেছেন। বিগত দুই দশকে ঢাকায় দীলিপ বড়ুয়ার সংগঠন সাম্যবাদী দলের কোন মিছিল -সমাবেশ কেউ কোথাও দেখেনি। কিন্ত ,প্রশ্ন তারপরও কেন ........ক্ষুদ্র এই দল টি নিয়ে কেন হাসিনা - খালেদা এত আগ্রহী।
****************************************************
সাম্যবাদী দল বা দিলীপ বড়ুয়া প্রতি সুনজর শুধু মাত্র হাসিনার নয়।
......৪ দলীয় জোট নেত্রী খালেদার চীন সফর কালে সফর সঙ্গিদের মাঝে দুই জন ছিলেন যারা প্রত্যক্ষ ভাবে বা পরোক্ষ ভাবে ৪ দলীয় জোটের বাইরে ছিলেন। সে দুই জনের একজন দীলিপ বড়ুয়া , অপর জন কবি ফরহাদ মাযাহার।
বর্তমান মহাজোট সরকার ভুক্ত বাম সংগঠনগুলোতে ইনু- মেনন-বাদশা-দিলীপ বড়ুয়ার মত মিডিয়া প্রিয় মুখ কতিপয় আছেন। কিন্তু, এদেশে বর্তমানে যে টুকু বাম সাংগঠনিক শক্তি সমাবেশ রয়েছে . .....তাতে মহাজোট ভুক্ত বাম সংগঠনগুলো খুবই ক্ষীণ ও ক্ষয়মান হিসাবে বাম মহলে প্রমানিত। আর তাদের মাঝে ক্ষুদ্রতর ' সাম্যবাদী দল' দীলিপ বড়ুয়ার মহাজোট সরকারের মন্ত্রীর আসন লাভে অনেকেই বিস্মিত হলেও আমি অবাক নই ।
**************************************************
'বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল) টি নাম বাংলাদেশে অনেকের অজানা থাকলেও, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নিকট বাংলাদেশের বন্ধূ সংগঠন হিসাবে একমাত্র স্বীকৃত দল বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল)। এ দলটি প্রতিষ্ঠাতা কমরেড তোহা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম প্রশ্নে চীনের দৃষ্টিভঙ্গি অন্ধ অনুকরণ করাতে কমরেড তোহার নেতৃত্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (এম-এল) দ্বৈত যুদ্ধ লড়াইয়রে নীতি ঘোষণা করে।
বঙ্গবন্ধু পুরো শাসন আমলে চীনা নীতি কারণে দলটির সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক চরম বৈরি অবস্থান ছিল। মেজর জিয়া ক্ষমতা গ্রহণের পর সংগঠন গত ভাবে অনেক বামপন্থী দল-গ্রুপ কে নির্মম ভাবে দমন করলেও কমরেড তোহা ও তার দলকে খুবই আপন করে নেন।
বলা হয়, জিয়ার শাসন আমলে চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে কমরেড তোহার অবদান বিপুল।
তোহা পরবর্তী সময়ে সংগঠন টি নানা আন্তর্ঘাতে মাধ্যমে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হলেও দীলিপ বড়ুয়া চীনা কমিউনিস্ট পার্টি অন্ধ আনুগত্য ও যে কোন প্রকারে সম্পর্ক রক্ষা কে এক মাত্র পর্টি লাইন হিসাবে গ্রহণ করনি।
সাধারণ মানুষরে কাছে দীলিপ বড়ুয়ার সাম্যবাদী দলে কোন স্বীকৃত না থাকলেও বাংলাদেশের হাসিনা-খালেদা নির্বিশেষে শাসক শ্রেনীর কাছে দীলিপ বড়ুয়া মহামূল্যবান সম্পদ। তাই ৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে খালেদা জিয়া যেমন সাম্যবাদী দলের জিয়া আমলে চীনের সাথে সাখ্যতা গড়তে অবদানে কথা বিস্মৃত হন নি; তেমনি মহাজোট যুগে শেক হাসিনা বঙ্গবন্ধুর কৃত ভুলে পুনরায় করতে চান নি।
****************************************************
যমুনা সার কারখানায় কোটি কোটি টাকা লুটপাট : শিল্পমন্ত্রীকে গাড়ি ও এসি উপঢৌকন এই সংবাদের মধ্য দিয়ে দীলপি বড়ুয়ার যে স্বরূপ প্রকাশিত হয়েছে,....... তার সাথে এদেশের প্রকৃত সংগ্রামী আপোসহীন বাম ধারা কে প্রশ্নবদ্ধি করা যায় না।
হাসিনা তার জোটের হালুয়া-রুটির লোভ দিয়ে শুধুমাত্র জনগণের লড়াই সংগ্রাম থেকে বহু আগেই পিছিয়ে পরা কতিপয় কথিত বাম সংগঠন কে জোটাতে পেরেছে। বাংলাদেশের বাম আন্দোলনের প্রধান দুই শক্তি সিপিবি ও বাসদ কে কিন্তু হাসিনা তার জোটে ঢুকাতে পারে নি বা চান নি। যাদের জুটিয়েছে তাদের সাংগঠনিক শক্তি ' সদ্য' ত্রশি উত্তীর্ণদের সংগঠন বাম সংগঠন 'গনসংহতি'র চেয়ে ঢড়ে দূর্বল।
হাসিনা তার জোটে প্রচার মাধ্যমের কতিপয় প্রিয় বামপন্থীদের জোট নিয়ে মুলতঃ 'ডাবল গেইম ' খেলতে চেয়েছেন।
একদিকে ' বামপন্থী'দরে চারিত্রিক সততার ইমজে ব্যবহার করে , দেশের মানুষের মনে যে দুর্নীতি মুক্তির আকাঙ্খা গড়ে উঠেছিল তার মাঝে নিজ দলে গ্রহণ যোগ্যতা বাড়াতে চেয়েছেন।
অপরদিকে তিনি বেছে-বেছে নৈতকিতাবোধ বহু আগে বিসর্জিত বামনেতাদের জোট ভুক্ত করেছেন যাতে অতি সহজে মানুষের মনে বামপন্থী নেতাদরে কেন্দ্রে করে সততা-নৈতকিতার মুর্তি ছিল তাকে ধ্বংস করতে পারেন।
আর এই সরল হিসাব টুকু বুঝে- শুনেই, ইনু-মেনন- দীলিপ বড়ুয়ারা হাসিনার মহাজোটে ভিড়েছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।