You either die a hero......or you live long enough to see yourself become the villain
গত শনিবার সন্ধ্যা ৭ টা... আমি, টেস্টিং সল্ট, হারানো ছায়া আর মৌরী বসেছিলাম টি.এস.সিতে... কিছুক্ষন পর একটা রিকশা এসে আমাদের পাশে থামল... একটা সুন্দরি ললনা রিকশা থেকে নেমে ৩২ খানা দন্ত বিকশিত করে এসে আমাদের জিজ্ঞেস করলেন... “আচ্ছা আপু আপনারা তো সিনিয়র তাইনা ”
মেয়ের কথা শুনে আমরা পুরাই স্পিকার হয়ে গেলাম... চেনে না জানেনা এসে জিজ্ঞেস করছে আমরা সিনিয়র কিনা ...টেস্টিং সল্ট জিজ্ঞেস করলো তুমি কোন ইয়ারে পড় আপু? সে বলল- আমি ফার্স্ট ইয়ার। তখন টেস্টিং সল্ট বলল-‘হ্যা, আমরা তোমার সিনিয়র, এবং অনেক সিনিয়র। কিন্তু এখানকার স্টুডেন্ট না। তুমি?’ ... মেয়েটা বলল- ‘আমিও না, তো কোথায় পড়েন আপনারা, কোন সাব্জেক্টে? টেস্টিং সল্ট বলল সে কোথায় পড়ে আর বলল সে ইংলিশ লিট্রেচারে পড়ে। মেয়েটা বলল ‘সে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে পড়ে এবং ইংলিশ লিট্রেচারেই পড়ে ... এর মধ্যে সে বলল “এখানে বসে আছেন কিভাবে??? এতো ময়লা অবশ্য এটাই বাংলাদেশ “ ভাবটা এমন যেনো সে বুলগেরিয়া থেকে আসছে আমাকে জিজ্ঞেস করলো কই পড়েন, বললাম...আমাদের নাম জিজ্ঞেস করলো। বললাম... আমি নাম জিজ্ঞেস করলাম। কিছুক্ষন ভেবে সে বলল তার নাম সিন্থিয়া ...আরে মাথারি নিজের নাম এতো চিন্তা করে বলার কি আছে ... এক্টুপর টেস্টিং সল্ট উঠে গিয়ে হারানো ছায়ার পাশে বসলো... মেয়েটা আমাকে বলল আমি একটু আপনাদের পাশে বসি... আমি বললাম- “হ্যা, আসো” সে আমার পাশে বসে কি গ্যাজাচ্ছিলো দুর্ভাগ্যবশত কিছুই আমার মাথায় ল্যান্ড করছিলো না... ...সে নাকি তার এক ভাই এর জন্যে অপেক্ষা করছিল... ভাই-ফ্রেন্ড আর কি... হি হ্যাজ এ বাইক...ব্লু বাইক... সে এমনভাবে ব্লু বাইকের প্রশংসা করছিল যেনো বাপের জন্মে আমরা রাস্তায় বাইক দেখি নাই... আরে কইন্যা গত ডিসেম্বরে হাঙ্ক নিয়ে এক্সিডেন্ট করে এখনো আমার ডান হাতের কনুইয়ে বিশাল কাটা দাগ হয়ে আছে তুমি আমারে ব্লু বাইকের গল্প শোনাও :/ :/ :/... জিজ্ঞেস করলাম বাসা কোথায় তোমার? বলল- যাত্রাবাড়ি, না মতিঝিল যাত্রাবাড়ি আর মতিঝিল তো কাছেই...” মনে মনে বলছিলাম ‘তুমি আমারে যাত্রাবাড়ি মতিঝিল চেনাও?’ গত আড়াই মাসে থিসিস করা শেষ আমার ‘ তারপর বলল ‘তোমাদের ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট আছে? আমার আইডি কিন্তু এইটা... আমাকে অ্যাড করবা...” এই বলে সে তার ফোনের ম্যাসেজ অপ্সনে গিয়ে তার এফ বি আইডি টাইপ করলো।তারপর বলল “তোমাদের ফোন নাম্বার দেও ” টেস্টিং সল্ট তার বন্ধ থাকা ফোন নাম্বার দিলো আমি দিলাম আমার রিয়াল নাম্বার সে তো জানেনা আননোন নাম্বারের ফোন আমি আমার বাপরে দিয়া রিসিভ করাই ’...কিছুক্ষন পড় সে অতি উতসাহি হয়ে বলল আমি কিন্তু মডেলিং ও করি... আমি আর টেস্টিং সল্ট বললাম- “আমরা কিন্তু টিভি দেখিনা”... একটু পর বলল ‘আমি কিন্তু রেডিওতে কাজ করি’ রেডিও টুডে তে’ এটা বলে সে তার ব্যাগের থেকে একটা শর্টপ্যাড বের করলো রেডিও টুডে’র লোগোওয়ালা...আমরা বললাম “আমরা রেডিও ও শুনিনা, ফ্রেন্ডদের প্রোগ্রাম থাকলে শুধু শুনি” টেস্টিং সল্ট বলল- ‘রেডিও টুডের আর যে নিশা কে চিনো? ও কিন্তু আমার ফ্রেন্ড ’ তখন মেয়েটা বলল – না না , আমিতো রেডিও ফুর্তিতে কাজ করি... এই কথা বলে সে তার নোটপ্যাড খুলে RJ দের অটোগ্রাফ দেখাচ্ছিল (আরে ছেমড়ি অটোগ্রাফ কেন ফটোগ্রাফ দেখাইলেওতো RJ চিনমু না )... সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার প্যাডের একেক পাতায় মেয়েটার একেক্টা নাম... কোন পাতায় রশ্মি , কোন পাতায় অনামিকা, কোন পাতায় নিলান্তি… একটু পর সে যার জন্যে অপেক্ষা করছিলো সেই নিরীহ চেহারার ব্লু বাইকওয়ালা এসে উপস্থিত হল আর আমরা ওই এলাকা ত্যাগ করলাম...
একটু পর আমার আর টেস্টিং সল্টের মাথায় ফির শিং উঠলো আমরা আবার ওই মেয়ের সামনে গেলাম মেয়েটা বলল- ‘আরে তোমরা যাওনি এখনো???’ আমরা বললাম- “নাহ”... টেস্টিং সল্ট জিজ্ঞেস করলো ‘তুমি জানি কোন সেমিস্টারে পড়?’ সে বলল- ‘ফার্স্ট ইয়ার সেকেন্ড সেমিস্টার... জানো আমি ফাইনাল এক্সামে থার্ড হয়েছিলাম’ টেস্টিং সল্ট জিজ্ঞেস করলো ‘এবার তোমাদের কোন কোন পয়েট-এর লেসন ছিলো??? ’ মেয়েটা অসহায় চেহারা বানিয়ে বলল “জানিনা” আমি বললাম, ‘তুমি না থার্ড হইছিলা???’ সে বলল “আসলে ছোট বেলা থেকেই ইংলিশ মিডিয়ামে পড়েছি তো তাই ইংলিশে কিছু লিখতে দিলেই পারি...” উল্লেখ্য সে নিজেকে হলিক্রস এর স্টুডেন্ট বলে পরিচয় দিয়েছিল ... মনে মনে বলছিলাম—“আম্মাজান, সত্যি কইরা কন আপনি কে মানুষ না জিন (এখানে পরী হইবে) নাকি ট্রান্সমাইগ্রেশন অফ সেক্সপিয়ার... নারীরুপে নাজিল হইয়াছেন এই বাংলায় ” টেস্টিং সল্ট সল্ট বলল- এটা কেমন কথা তুমি সিলেবাস জানো না... সে বলল- “আসলে আমাদের তো প্রাইভেট, প্রাইভেট আর পাবলিকের সিলেবাস তো এক না...” টেস্টিংসল্ট প্রতিবাদ করে বলল-”কেন এক হবে না... প্রাইভেট আর পাবলিকের লেসন এক... সিলেবাস ডিফ্রেন্ট হইতে পারে”... যাই হোক আমরা আর কথা বাড়ালাম না... চলে আসার পথ নিলাম... পেছন ঘুরে জিজ্ঞেস করলাম “তোমাদের আই ইউ বি তে ক্লাস কবে কবে”... সে বলল “আই ইউ বি??? আমিতো ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে পড়ি”...আমি বললাম “ও আচ্ছা ক্লাস কবে কবে??” সে বলল “সে বলল শনিবার আর বুধবার”
আমি জানিনা আইইউবি’র ক্লাস শিডিউল কি??? তবে রুটিন মত তা তো সোম-বুধ আর রবি-মঙ্গল হবার কথা... যাই হোক আমরা সিয়র হলাম তুমি আসলে কি...
আমরা বাড়ি ফেরার পথ ধরলাম... মেয়েটার জন্যে দুঃখ হল...হয়ত খুব বেশিদিন হয়নি এ রাস্তায় নেমেছে... আনাড়ি এখনো... জানিনা কোন মোহে বা কিসের প্রয়োজনে সে আজ এই পথে নেমেছে... একদিন না একদিন তো ধরা সে পড়বে... এই সুন্দর মুখটা কি তখন আর সুন্দর থাকবে???
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।