নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!
SME Finance এর নামে সারাদেশে একটা উৎপাত শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক, নানা ধরনের আন্তর্জাতিক সংস্থা, পত্র-পত্রিকা সারাক্ষন লেগে আছে বস্তুটা নিয়ে। অনেকে বস্তুটা অবলম্বন করে প্রবন্ধ নিবন্ধ পুস্তক রচনা করে নিজের আখের বা সুনাম বা দুটোই বাগিয়ে নিচ্ছেন। তাদের এন্তার প্রবন্ধের সারকথাও সীমিত: দেশের SME বিকশিত নাহলে দেশ আগাবেনা। আর তা বিকাশের পথে প্রধান বাধা টাকা।
ব্যাংক গুলো SME খাতে বিনিয়োগ করতে চায় না, ফলে উদ্যোক্তারা দাড়াতে পারছেনা। সুতরাং, বেশি করে এস এম ই ফাইন্যান্সিং করাই এখন দেশ উদ্ধারের মহান কাজ!
অথচ পরিস্থিতি পুরা বিপরীত। ঋনের সাগরে ভাসছে বাংলাদেশ। ৪৮ টি ব্যাংক, ২৯টি লিজিং কোম্পানির হাজার হাজার শাখা বা হালের এস এমই বুথ ইত্যাদির 'ঋন' প্লাবনে ভাসছে বাংলাদেশ। গুরুত্বপুর্ন জেলাগুলোতে প্রায় সকল বাণিজ্যিক ব্যাংকেরই শাখা রয়েছে, রয়েছে ভল্ট ভর্তি অলস টাকা।
সংশ্লিস্ট কর্তাদের কাজ এ টাকা বিতরন করা। এবং তাই হচ্ছে। পান দোকান চা দোকান মুদি দোকান ফার্মেসী হার্ডওয়ার যাই হোক সিসি লোন নেই জেলা শহরে হেন ব্যবসায়ী পাওয়া কঠিন। সিসি লোনের তত্তীয় কাঠামো হল- নগদ মূলধনে কিছুটা (৮০% পর্যন্ত) সহায়তা। উদাহরন দেয়া যাক- একটা মুদি দোকানে গড়ে ১ লাখ টাকা বিক্রি হয়।
গড়পড়তা ৭ দিনের মাল থাকা তার জন্য যথেস্ট। ধরা যাক বাজারে তাকে লাখ দুয়েক টাকা বাকি দিতে হয়, আর তাকে মহাজনরা বাকি দেয় ৩ লাখ টাকা। ট্রানজিটে ১ দিনের মাল থাকে (১ লাখ টাকা)। অন্যান্য টুকটাক খরছকে ধর্তব্যের মধ্যে না আনলে ঐ দোকানীর নীট প্রয়োজনীয় চলতি মূলধন, ৭+২-৩+১=৭ লাখ টাকা। এটার ৮০% দিতে পারে সকল ব্যাংক মিলে ( ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা)।
এটুকু সিসি লোন কোন ব্যবসায়ী নিলে আপত্তি নেই। কিন্তু বাস্তবতা: ভিন্ন। ১ লাখ টাকা ডেইলী বেচাকেনা হয় এমন সরগরম ব্যবসায়ে অনেকগুলো বাণিজ্যিক ব্যাংক হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ১০/১৫/২০ লাখ টাকা তথাকথিত সিসি (ক্যাশ ক্রেডিট) লোন গছিয়ে দেয়ার জন্য। আর জামাই আদর প্রাপ্ত বণিকও এ সুবাদে টাকাটা নিচ্ছেন, জমি, ফ্ল্যাট কিনছেন এমনকি গোপনে সমাজের আরো নিম্ন শ্রেনীর কাছে চড়া সূদে তা পুনরায় খাটাচ্ছেন! ফেনী শহরের মহিপাল থেকে ট্রাংক রোড পর্যন্ত ১ কিলোমিটার দুরত্বে প্রায় সবকটি বাণিজ্যিক ব্যাংক শাখা খুলে বসে আছে। কি এমন শিল্প বা বাণিজ্য এ শহরটিতে রয়েছে।
যা রয়েছে সবই এস এম ই গোত্র ভুক্ত ট্রেডিং। তবু প্রাবন্ধিকরা লিখে চলছেন বা গলাবাজিয়ে চলছেন এস এম ই লোনের জন্য, মায়াকান্না কেদেঁই চলছেন। সম্ভবত: না বুঝে!
নীতিনির্ধারকদের চাপে পড়ে স্থানীয় কর্তারা তবুও ঋন গছিয়ে চলছেন। খানিকটা সীমা বাড়িয়ে এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে লাফ দিচ্ছেন চতুর বণিকরা। অল্প অল্প করে তৈরী হচ্ছে একেকটি দৈত্য!
অথচ, এসব কোট-টাই পরা বলদদের বুঝা দরকার সামগ্রিক অর্থনীতি বিকাশের জন্য পুঁজি একটি মাত্র উপাদান- সবই না! উদ্যোক্তার জ্ঞান, ইচ্ছা, কৌশল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, রাস্তা, সোজা-সাপটা সরকারী অফিস, বাজার সক্ষমতা, নিরাপত্তা, সুন্দর বিচার-ব্যবস্থা, শিক্ষিত (যথার্থ) কর্মী অনেক জরুরী কটি উপাদান।
এসব নিয়ে তাদের কোন রা নেই।
এস এম ই নয় বাংলাদেশে অভাব পল্লী অর্থায়নের। কাঁচপুরে শাখা খুলে অনেকেই পল্লী শাখা বাড়াচ্ছে! তবে ব্যাংকাররা বলবে পল্লী অন্চলে ব্যবসা নেই। আমাদের লস হবে। হক কথা- কারন পল্লী অন্চলে অন্যান্য উপাদানের চরম অভাব!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।