আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ আমার মেঘে মেঘে আনন্দের রঙধনু

মনের জানালায় দাঁড়িয়ে ভাবনাগুলোর মিলিয়ে যাওয়া দেখি। গুচ্ছ গুচ্ছ মেঘ হয়ে, ঐ দূর দিগন্ত পানে...

২৪শে এপ্রিল আমার জন্মদিনের সৌরভ আজি ঠের পাচ্ছি। বাহির থেকে তারি সুবাস নিয়ে বাসাই ঢুকলাম। তাড়াহুড়া করে সেগুলোই লিখতে বসছিলাম। অনলাইন হতেই দেখি তুমি লগিন করলে।

আমার আনন্দের মুকুটে পালক লাগানো যদি কিছুতে হয় তবে সেটি এই এখন তোমাকে অনলাইনে পাওয়া। তাড়াহুড়ো করে লিখতে বসতে চাইছিলাম কারণ ভয় হচ্ছিল পাছে শব্দগুলো ধরা দিতে দিতেই অধরা থেকে যায়। বার কয়েকবার এমন হওয়াতে মনে হল আজ আরেকবার ওমনটি করা যাবে না। কিন্তু স্বপ্নচারিনী নিজে থেকেই যখন আভির্ভূত হলেন তখন শব্দদের খোওয়ানোর ভয় আজ আর নেই। আমার শব্দরা আজ নিজেরাই কীর্তন গাইতে গাইতে ধরা দিবে।

হৃদয় ফোয়ারায় আজ আনন্দের ফেনিল ধারা উপছে উপছে পড়ছে। আমার আজিকের আনন্দোচ্ছ্বাসের সীমা পরিসীমা নির্ধারণ করে সে আজ কার সাধ্য। শব্দদের নিয়ে আজ আমি স্বর্গ মর্ত্য পরিভ্রমণ করব। অযুথ নিযুত নক্ষত্রের মাঝে উড়ে উড়ে বেড়াবো। ধূমকেতুর লেজে চড়ে যাবো যুগ থেকে যুগান্তরে।

আমার মেঘের রথে লাগাবো রঙধনুর সব কটি পালক। আজ আমার মেঘে মেঘে থাকবে শুধুই আনন্দের রঙধনু। : অগ্রীম জন্মদিনের শুভেচ্ছা রইলো নাআআআ : আচ্ছা। আমিও নিলাম না : দেইতো নাই। নিবে কিভাবে : আনন্দে থেকো...যাও এইবার : না যাবো না : হাহাহা : ঘুমাবো : ঘুম সুন্দর এবং স্বপ্নময় হোক : ওইইই : কইইই : তোমারও দিন সুন্দর কাটুক : থ্যাংকুশ : একটা উপহার দিতে চাচ্ছিলাম।

যদি কাল কথা না হয় তাই এখনই দিতে চাচ্ছিলাম : আজই দিয়ে দাও । এমন আনন্দের দিন কাল না থাকতেও পারে : ঠিক আছে। যেমনটি তোমার ইচ্ছা : : এই নাও জন্মদিনের উপহার। ইয়ায়ায়া ঢিশুমমমমমমমম। হাহাহাহাহহাহা : হাহাহাহা।

আন্দাজ করছিলাম এমনি কিছু হবে : পছন্দ হয়েছে? হাহাহাহা : ভীষন নাআআআআ। নানান কথার মাঝে তাকে এই কথাটাও বললাম যে তাকে অনলাইনে পাওয়াটায় আমার জন্মদিনের উপহার। আর কথায় কথায় সেই উপহার আমি ষোল আনায় আদায় করে নিয়েছি । ... কাল একজন বলছিল যখন তুমি একাগ্রচিত্তে কোন কিছুর কথা ভাববে তবে দেখবে তার অস্তিত্ব তুমি তোমার আশে পাশেই ঠের পাচ্ছো। রবি ঠাকুরের নৌকাডুবি পড়তে পড়তে আমি তাই একটা সুগন্ধি গোলাপ আমার কল্পনায় রেখে তার সুগন্ধ আমার ধ্যানে পাওয়ার চেষ্টায় রথ ছিলাম।

বেশীক্ষণ সাধনা করতে হয়নি। গোলাপ তার সমস্ত রঙ আর সুগন্ধ নিয়ে আমার চারপাশেই মৌ মৌ করছে এখন। "সেই নিস্তব্ধ ঘরের বাতায়নের আরক্ত সন্ধ্যার সঙ্গে গোলাপের গন্ধ মিশিয়া নলিনাক্ষের মনকে কেমন যেন উতলা করিয়া তুলিল। এতদিন তাহার বিশ্বের চারি দিকে সংযমের শান্তি, জ্ঞ্যানের গম্ভীরতা ছিল, আজ সেখানে হঠাৎ এমন নানা সুরের নহবত বাজিয়া উঠিল কোথা হইতে--কোন্‌ অদৃশ্য নৃত্যের চরণক্ষেপে ও নূপুরঝংকারে আজ আকাশতল এমন চঞ্চল হইয়া উঠিতে লাগিল। ... আমার লুকাইবার কিছুই নাই, কী যে বলিবার আছে, তাও খুঁজিয়ে পাই না।

রাত পোহাইতেই সকালে উঠিয়া মনে হইল আমার জীবনটা সার্থক-আমার সমস্ত দিনটা এমন মিষ্ট, আমার সমস্ত কাজ এমন হালকা হইয়া গেছে, তাহা আমি বলিতে পারি না। " রবি ঠাকুরের এই শব্দগুলোই আমার মনের এখনকার অবস্থা পরিষ্কার জানান দিচ্ছে। ভোর থেকেই মনে হচ্ছে আমার জীবনটা আজ তার রুপের সব মাধুরী নিয়ে ধরা দিয়েছে। সাবওয়ে থেকে হেটে ফিরতে ফিরতে প্রাণেশ্বরকে মনে মনে প্রণতি জানাচ্ছিলাম এমন একটা ধরণীতে আমার জন্ম হয়েছে বলে। এমন একটা সুন্দর দিন দেখার জন্য আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন বলে।

পৃথিবীর এমন সব রুপ এমন করে আমার সামনে মেলে দিয়েছেন বলে। আশে পাশে যেদিকেই তাকাচ্ছিলাম সুখ যেন সব দিক থেকেই তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছিল। চলার পথে দেখি দুটো কবুতর আমার সামনে সামনে নিজের মনে হাটছে। কারো দিকে ভ্রুক্ষেপই নেয়। দূরে তাদের ঝাঁক আনন্দে ডানা ঝাপ্টাচ্ছে অথচ এই দুটো দলছাড়া পাখি বীরদর্পে পথের মাঝখানেই হেটে বেড়াচ্ছে।

কোন ভয়ঢর নেয়। আমি যে তাদের ঠিক পেছনেই সেই ভয়টাও তাদের নেই। হঠাৎ কি যে হল পাখী দুটোকে এবং তাদের এমন ভাবলেশহীন হেটে বেড়ানো দেখে বুকের মাঝে আনন্দের একটা ঢেউ খেলে গেল। প্রাণ থেকে স্নিগ্ধ একটা হাসি বেড়িয়ে এল। আমি নিজেই তাদের জন্য পথ ছেড়ে দিয়ে ঘুরে নিজের পথে চলে গেলাম।

একটু দূরে দেখি একটা দরজা দিয়ে হঠাৎ একটা বাচ্চা ছেলে ফুরে বেড়িয়ে এল। পেছন পেছন ছুটটে ছুটটে এল তার মা। বাচ্চাটাকে দেখেই হাসি আবার আমার বাধ ছাড়লো। এমন মিষ্টি পিচ্চিকে দেখে হাসি বাধ মানে না। পিচ্চিটা নিজের মনেই একদিক দিয়ে চলে যাচ্ছিল।

তার মা পেছন পেছন হাসতে হাসতে ছুটে তাকে ঝড়িয়ে ধরে বললো, না বাবা অন্যদিকে। আমার বিধাতাকে প্রণতি জানানোর আরেকটা কারণ যোগ হল। আরেকটু হাটটেই দেখি গাছ গাছালি সব দখিনা হাওয়ার দোলায় চেপে আনন্দনৃত্য করছে। তাল লয় না মেনে ইচ্ছে মতন এদিক সেদিক নিজেদের শাখাপল্লব দোলাচ্ছে। তাদের আনন্দ দেখে আমার আনন্দ আরো কয়েক গুণ বেড়ে গেলো।

এক জায়গায় বাতাসের কারণে গাছ থেকে কিছু সুন্দর ফুল ঝরে ঝরে পড়ছিল। সেই গাছের নীচ দিয়ে যেতে যেতে মনে হচ্ছিল স্বর্গ থেকে আজ দেবতারা আমার জন্য পুষ্পবৃষ্টি ঝড়াচ্ছে। বাসায় ফিরে দেখি মা আমার জন্য আমার পছন্দের ইলিশ রেঁধে রেখেছেন। ঠিক ঠিক আমি যেমনটা পছন্দ করি। প্রাণ ভরে, স্ফূর্তির সাথে পেটপূজো সেরে নিলাম।

একবার এমনি এক আনন্দের দিনে আমি লিখে রেখেছিলাম, আজিকের আনন্দের সব রঙ হৃদি সিন্দুকে পুরে মহাকালের স্রোতে ভাসিয়ে দিচ্ছি। হে আমার উত্তরকাল, অবসাদের মেঘ যখন তোমার হৃদয় আকাশকে ঢেকে দিবে তখন এই সিন্দুক থেকে কিছু আনন্দ তুমি তুলে নিওয়ো। উত্তরকালের কাছে আজও আমার তেমনি নিবেদন রইলো। ২৫শে এপ্রিল আজ বৃষ্টি হচ্ছে। সকাল থেকেই।

বৃষ্টিস্নাত জন্মদিন আমার। লক্ষ্য করে দেখেছি এই দিনটাতেই বিগত কবছর থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিও বুঝি জেনে বসে আছে আজ মেঘের দূতের জন্মদিন ছবির কৃতিত্বটা পাবে সুপ্তি আপুটা। কি যে দারুণ হয়েছে!!


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।