ফ্রম দ্যা হার্ট অফ ডার্কনেস
খবরে দেখলুম সরকার মহাশয় ঢাকার অদূরে(৯৭ কিমি) দূরে ত্রিশালে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শুরু করছেনে। খরচ পরবে ৭ বিলিয়ন ডলার। তোফা খবর বটে! ঢাকা হবে দক্ষিন কিংবা দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার ট্রানজিট। ঢাকায় হিথরো কিংবা দুবাইয়ের মতো সেকেন্ডে সেকেন্ডে পেলেন্ নামবে ভাবতেই ভালো লাগছে।
আর বিমানবন্দরের ভাড়ার টেকায় আমরা বড়লোক হৈয়া যামু।
আপ্নেরা নিশ্চয় গ্রীস দেশের নাম শুনেছেন। সক্রেটিশ আর প্লেটো'র মহান গ্রীস। সভ্যতা আর বিজ্ঞানের পূণ্যভুমি প্রাচীন গ্রীস আর প্রায় দেউলিয়া বর্তমানের গ্রীস। গ্রীসের সরকারপ্রধান'রা ইউরোপের ধনীদেশগুলো কাছে ভিক্ষা চাইছেন কোনভাবে গ্রীসকে পুরোপুরি দেওলিয়া হতে বাঁচাতে । আপনাদের স্মরণ আছে নিশ্চয় এই গ্রীসেই ২০০৪ সালের অলিম্পিক গেমসের আয়োজন করেছিলো।
অলিম্পিক গেমস আয়োজনের ফুটানি দেখাতে গিয়ে তাদের খরচ পড়েছিলো ৭.২ বিলিয়ন ইউরো। গ্রীস আশা করেছিলো অলিম্পকি আয়োজন করতে পারলে দেশে মিলিয়ন-মিলিয়ন পর্যটক আসবে আর মুঠোমুঠো ডলার খরচ করবে। সেই আশায় গুড়েবালি; উপরন্তু যেসব ব্যয়বহুল স্টেডিয়াম নির্মিত হয়েছে, তাতে আজকাল ঘুঘু চড়ে।
বাংলাদেশ বিভিন্ন ইকোনমিক ইন্ডিকেটরে ভালো করছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
তাই বলে এখনো সে বিশেষ কেউ হয়ে উঠেনি। সারাবিশ্বে সবাই এখনো বাংলাদেশকে ফকিন্নি দেশ বলেই চেনে; দেশের এখনো ৪০ ভাগ মানুষ দিনে একবেলা খেয়ে বাঁচে। দেশের বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাতে অবকাঠামো সহ অতীব প্রয়োজনীয় খাতে বিনিয়োগ না বাড়িয়ে নতুন বিমানবন্দরের জন্য ৭ বিলিয়ন ডলার খরচ গরীবের ঘোড়ারোগই বৈকি!
তাই বলে কি বাংলাদেশে আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দরের প্রয়োজন নাই!অবশ্যই আছে! সেইজন্য হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরই যথেষ্ট। বাংলাদেশের চেয়ে ভালো অর্থনীতির দেশ ভিয়েতনামের হ্যানয় কিংবা হোচিমিন-এর এয়ারপোর্ট ঢাকার চেয়ে ছোট্ট হলেও ব্যবস্থাপনা মানে অনেক এগিয়ে; হোচিমিন সিটি'তে ঢাকার চেয়ে সংখ্যা অনেক বেশি উড়োজাহাজও উঠে-নামে। ফিলিপিনসেও তাই।
বর্তমান পরিস্থিতিতে যাত্রাবাড়ী কিংবা শনির আখড়া এলাকার মানুষদের ফ্লাইট ধরতে হলে ফ্লাইট শুরুর ৪/৫ ঘন্টা আগে রওনা দিতে হয়। ত্রিশালে দুপুরের ফ্লাইট ধরতে হলে ফজরের ওয়াক্ত বের হতে হবে। বিমানবন্দর থেকে উত্তরা পর্যন্ত ২ কিমি ট্যাক্সিতে যাইতেও হাত-মুখ শুকিয়ে যায় কখন যে ট্যাক্সিওয়ালার সাংগাতরা গলায় ছুরি ধরে বসে। আর ত্রিশাল থেকে ঢাকায় আসতে ছিনতাইকারিদের কিছু করতে হবেনা; ৯৭ কিমি আসতে আসতে টেনশনেই বিমানযাত্রীরা পগারপার !
গরীব মরে ফুটানি দেখাতে গিয়ে। আমাদের ফুটানির দরকার নাই।
শাহজালাল বিমানবন্দরকেই আধুনিক করে গড়ে তোলা হউক। এতেই আমাদের ঠেকার কাজ চলবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।